ঢাকা আশুলিয়ায় মামলা বিহীন গ্রেফতার করে  মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ দুই এস আই’য়ের বিরুদ্ধে 

অপরাধ

ধারাবাহিক প্রতিবেদনের পর্ব-২

এম শাহীন আলম :
ঢাকা সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানায় দুই পক্ষের জমি সংক্রান্ত বিষয়ের জেরে প্রভাবশালী এক পক্ষকে সাই দিয়ে হয়রানিমূলক মিথ্যা বানোয়াট মামলা দিয়ে তদন্তের নামে পূর্বে আরেকটি মিথ্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে তার জামিননামা (রিকল) ছিরে  জোর জবরদস্তি করে আটকের পর তার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের মতো ঘটনা ঘটিয়ে ক্ষ্যান্ত হননি আশুলিয়া থানার দুই এস আই এমদাদ এবং শেখ ফরিদ। মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগও উঠেছে  তাদের বিরুদ্ধে।

এর আগে একাধিক অভিযোগ ও সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে তুলে ধরে গত ৪ ঠা সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং তারিখে জাতীয় সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রা পত্রিকার অনলাইন পোর্টাল , সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বেশ কয়েকটি অনলাইন পোর্টাল ও দৈনিক পত্রিকায় ঢাকার আশুলিয়া থানায় মিথ্যা গায়েবি মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই এস আই এমদাদ ও শেখ ফরিদের বিরুদ্ধে। এমন হেড লাইনে  ধারাবাহিক সংবাদের  প্রথম পর্ব প্রকাশের পর পুনরায় সরেজমিনে অনুসন্ধানে ঘটনার দ্বিতীয় পর্বের  অডিও, ভিডিও সহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসছে অপরাধ বিচিত্রার হাতে।

সম্প্রতি একটি সংরক্ষিত ভিডিও ক্লিপে দেখা যাচ্ছে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানা পুলিশের এস আই শেখ ফরিদ,ও কনস্টবল মতিউর রহমান সহ আরো একজন মুখোশধারী কনস্টেবল একটি ঔষধের দোকানে ঢুকে গ্রেফতারি তান্ডব চালাচ্ছে। অন্যদিকে দোকানের বাহিরে প্রায় পঁঞ্চাশধিক লোকজন মামলার কপি দেখান ওয়ারেন্টের কপি দেখান (রিকল) জামিননামার কপি ফেরৎ দেন-ফেরৎ দেন বলে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন।

এসময় গায়ে হলুদ রঙের টি শার্ট পরিহিত অবস্থায় হাতে একটি বিদেশি টর্চলাইট নিয়ে এস আই শেখ ফরিদকে তোফের মুখে পায়তারা করতে দেখা যায় এবং মোবাইল ফোনে বলতে শোনা যায়, স্যার আমি আবু বক্কর কে গ্রেফতার করেছি কিন্ত এখানকার লোকজন আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করতেছে।
পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন কনস্টেবল মতিউর তিনি আবার উপস্থিত সাধারণ মানুষদের বলছেন ওসি তাকে নিয়ে যেতে বলেছেন তাহলে কি  গ্রেফতার বানিজ্য ও গায়েবি মিথ্যা মামলার সাথে  জরিত আছেন আশুলিয়া থানার ওসি সহ পুলিশের  উর্ধ্বতন কর্মকতাগণ! এমন কৌতূহল  ও প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহলে।

এদিকে আবার সদ্য জামিন প্রাপ্ত ২৩/০৮/২০২৩ ইং তারিখের রজু করা ৫৩ নং গায়েবি মিথ্যা  মামলার ১ও ৩ নং বিবাদী ইব্রাহিম এবং জহিরুল ইসলাম সেদিন ঘটনার বিষয় ও বর্বরোচিত নির্যাতনের বিবরণ দিয়ে বলেন। পুলিশ জনগণের বন্ধু পুলিশ সাধারণ মানুষের শেষ ভরসা। কিন্তু আজ আমরা পুলিশের হাতেই একাধিক গায়েবি মিথ্যা মামলায় হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার টাকার কাছে আজ তাঁরাও বিক্রি।  পুলিশকে মোটা অংকের টাকা দিলেই যে কাউকে মামলা ছাড়াই আটক করবে আবার টাকা দিলেই আটককৃত ব্যাক্তিকে ছেড়ে দিবে যার প্রমাণ স্বরূপ আমি নিজেই একজন ভুক্তভোগী।

জহিরুল ইসলাম আরো বলেন, আমি গত-২২/০৮/২০২৩ ইং তারিখে আমার বউ বাচ্চা সহ আমার শশুর বাড়িতে বেড়াতে এসে দেখি আমার চাচাতো সমন্ধি ( আমার স্ত্রী বড় চাচাতো ভাই) আবু বক্কর কে জামিনে থাকা সত্বেও পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে আমি তাদের কাছে নতুন কোন মামলা হয়েছে কি না জানতে চাওয়াই আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে উপস্থিত পুলিশের এস আই সহ পুলিশ সদস্যরা।এমতাবস্থায় আবু বক্কর হাতকড়া সহ পালিয়ে গেলে এস আই শেখ ফরিদ আমাকে আটক করে মোটরসাইকেল যোগে নিয়ে যায় এবং অন্ধকারে  মাঝরাস্তায় একটি ঝোঁপঝারের কাছে আমাকে হাতকড়া পরিয়ে শেখ ফরিদের হাতে থাকা একটি বিদেশি টর্চলাইট দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে।

মারপিটের ক্ষতের দাগ এখনো আমারা শরীরে আছে এবং সে সময় ওই টর্চলাইটের গোড়া দিয়ে আমার ডান পায়ের হাঁটুতে সজোরে একটি আঘাত করে যার রক্তের দাগ এখনো আমার লুঙ্গিতে লেগে আছে। এখানেই শেষ নয় এরপর তারা আমাকে বলে আবু বক্কর কে এনে দিতে তা না হলে তার বদলে আমাকে জেল খাটতে হবে এবং কি আমার সামনে ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার ফোন করে বলেন হাতকড়াটা উদ্ধার করে দিয়ে আমাকে ছাড়াই নিয়ে যেতে। কয়েকঘন্টা পরে হাতকড়া উদ্ধার করা দিলেও তাঁরা আমাকে ছাড়েনি বরং আমাকে সহ আমার আর এক সমন্ধি ইব্রাহিমকে আটক করে পরেরদিন সকালে একটি মিথ্যা মামলা সাজিয়ে জেল হাজতে চালান করে।

ভুক্তভোগী আবু বক্কর তার ছোট ভাই ইব্রাহিমকে আটকের বিষয় বর্ননা দিয়ে বলেন, এর আগেও একটি মামলাতে ইব্রাহিমকে সহ আমার পরিবারের লোকজন কে আসামি করা হয়েছে যার কিছুই আমারা জানিনা এরপর আবার ২৩/০৮/২০২৩ ইং তারিখে আরও একটি মিথ্যা মামলা দিয়েছে আমাদের নামে। এবং ২২ তারিখ রাতে এস আই এমদাদ ও শেখ ফরিদ আমাকে না পেয়ে আমার ছোট ভাই ইব্রাহিমকে আটক করে
মধ্যেরাতে দিয়াখালি ব্রিজে নিয়ে যায় এরপর  তার মাথায় এস আই এমদাদ পিস্তল ঠেকিয়ে বলে তোকে যদি এখানে মেরে ফেলি তাহলে তোর কোন বাপ বাঁচাতে আসবে আর মরার পর জমি দিয়ে কি করবি।

তুই বরং এখন থানায় যাইয়া তোর ভাই সহ ওই ১৩৮ শতাংশ জমি না দাবি লিখে মুচলেকা দিয়ে আসবি আর তা না হলে কপালে দুঃখ আছে এই বলে তাকে থানায় নিয়ে যায় এবং পরদিন সকালে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে চালান করে। এখন আমরা জামিনে আছি  । তবে সব কিছু হচ্ছে টাকার বিনিময়ে ওই পক্ষ পুলিশকে মোটা অংকের টাকা দিয়েছে বলেই আজ আমাদেরকে এভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করতেছে বলে দাবী করেন ভোক্তভোগী আবু বক্কর।

তথ্য অনুসন্ধানে গত ২২ আগস্ট -২০২৩ ঘটনার বিষয়ে এস আই এমদাদ ও শেখ ফরিদ সাথে কনেস্টবল মতিউর রহমানের বক্তব্যের কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ও মামলার সত্যতা কতটুকু জানতে চাইলে এস আই এমদাদ বলেন, অভিযোগের পর তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। সত্যতা খুঁজে পাওয়ায় রাতে তাদের আটক করে সকালে মামলা দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে এস আই শেখ ফরিদ বলছেন ভিন্ন কথা তিনি সংবাকর্মীদের জানান আবু বক্করকে গ্রেফতার সময় ৫৩ নং মামলার ৩ নং বিবাদী জহিরুল ইসলাম আমাদের কাজে বাঁধা দিয়েছিল। তাহলে আবু বক্কর জামিনে থাকা সত্বেও আপনি তাকে কিভাবে আটক করলেন?  উত্তরে তিনি বলেন সে সকালে থানায় রিকল জমা দিয়েছে বিষয় টি আমি জানতাম না।

এদিকে আবার সেদিনের ঘটনায় এস আই শেখ ফরিদের সহযোগী হিসেবে দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল মতিউর রহমান বলছেন অন্য কথা সেদিন জামিনে থাকা  আবু বক্করকে ওসির নির্দেশেই আনতে যাওয়া হয়েছিল কিন্তু সে পালানোর চেষ্টা করছিল বিধায় হাতকড়া পড়িয়ে আটক করা হয়েছিল বলে সংবাদকর্মীদের জানান  মতিউর।

উপরোক্ত সার্বিক বিষয়ে জানতে চেয়ে আশুলিয়া থানার ওসিকে তার সরকারী মোবাইল ফোন নাম্বারে একাধিক বার করলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি,স্হানীয়দের তথ্য মতে আশুলিয়া থানার ওসি তার সরকারি মোবাইল ফোন নাম্বারে কেউ কল দিলে তিনি রিসিভ করেন না বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়,

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.