Doinik Bangla Khobor

আওয়ামী দালালী ও দুর্নীতির অভিযোগ ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা প্রকৌশলী মোশারেফের বিরুদ্ধে

সাংবাদিককে লাঞ্ছিত সহ সরকারি ঘর নির্মাণ,মুক্তিযোদ্ধা আবাস,রাস্তাঘাট সংস্কার ও খাল খননে ছিলো ব্যাপক অনিয়ম, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উপদেষ্টার দৃষ্টি আর্কষণ।

এম শাহীন আলম :
গত ৭ বছর যাবত স্হানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের দালালী,অনিয়মের তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিককে লাঞ্ছিত, আওয়ামী দলীয় মনোভাবে অসৌজন্যমূলক আক্রমণাত্মক আচরণ, স্বৈরাচার সিন্ডিকেটের নেতাদের যোগসাজশে সরকারি ঘর নির্মাণ, অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন নির্মাণ,রাস্তাঘাট সংস্কার ও খাল খননে ব্যাপক অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মোশারেফ হোসেন এর বিরুদ্ধে।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়,উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মোশারেফ হোসেন গত ২০১৭ সালের ৮ সেপ্টেম্বর চরফ্যাশন উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন।
যোগাদানের পর থেকে তিনি স্হানীয় সাবেক সংসদ সদস্য জ্যাকব এর নেতা কর্মীদের সাথে নিজেকে আওয়ামীপন্হি পরিচয় দিয়ে সখ্যতা গড়ে তুলেন। উপজেলার সকল ট্রেন্ডারে আওয়ামীলীগ নেতাদের সমর্থন দিয়ে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে কাজ পাইয়ে দেওয়ার বহু অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তিনি নিজেকে স্হানীয় সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ্ আল ইসলাম জ্যাকব এর আর্শিবাদপুষ্ট বলে দাবি করে কাউকে তিনি পাত্তাই দিতেন না। কেউ তার কোন কাজের অনিয়ম কিংবা আপত্তি জানালে তিনি সাবেক এমপি জ্যাকব ও তার মতাদর্শী চরফ্যাশন উপজেলা চেয়ারম্যান এবং পৌর মেয়র এর সাথে কথা বলার পরামর্শ দিতেন। এবং তার এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির কাজে সাই দিতেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) অফিসাররাও।

সরেজমিনে আরো জানা যায়, উপজেলা প্রকৌশলী মোশারেফ হোসেন নিকট রাস্তা সংস্কার ও খাল খননে অনিয়মের বিষয়ে তথ্য চাইতে গেলে তিনি স্হানীয় আওয়ামী নেতাদের দিয়ে স্হানীয় সংবাদকর্মী বাহাদুর চৌধুরীকে লাঞ্ছিত সহ তার ক্যামেরা চিনিয়ে নেন এবং পরবর্তী আজও তার ক্যামেরাটি ফেরত দেননি। বাহাদুর চৌধুরী তার ক্যামেরা ফেরত চাইলে প্রকৌশলী মোশারেফ হোসেন তাকে আওয়ামীলীগ নেতাদের দিয়ে হুমকি দমকি দিতেন।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা এবং দেখা যায়, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ছোটবড় রাস্তা গুলো এতটাই নিন্ম মানের সামগ্রী দিয়ে ব্যবহার করে সংস্কার হয়েছে যে, এক বছর না যেতেই রাস্তা গুলোতে যান চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চরফ্যাশন থেকে হাজারীগঞ্জের চেয়ারম্যান বাজার রাস্তা, চরফ্যাশন ফরেস্ট অফিস থেকে বেতুয়া রাস্তা, সোহেলবাড়ী থেকে সামরাজ মাছঘাট রাস্তা, গজারিয়া থেকে ওসমানগঞ্জ ও চৌমুহনী হয়ে শশীভূষণের রাস্তা। এছাড়াও জানা যায়, উপজেলা প্রকৌশলী মোশারেফ হোসেন নিজেকে আওয়ামীপন্হি হিসেবে জাহির করে কাউকে তোয়াক্কা কিংবা পরোয়া না করে স্হানীয় এমপির লোকজন,উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের সাথে যোগসাজশ করে বহু প্রকল্প তিনি যতসামান্য কাজ দেখিয়ে বিল তুলে ভাগভাটোয়ারার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যা অনুসন্ধান করা অব্যাহত রয়েছে।

এছাড়াও চরফ্যাশন উপজেলা প্রকৌশলী মোশারেফ হোসেনের বিরুদ্ধে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে স্কুল সংস্কারের কাজেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তার মধ্যে হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর কাজ সহ বেশ কয়েকটি মাধ্যমিক স্কুলের সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। যা আরো অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।

গৃহহীন দুস্তদের সরকারী ঘর নির্মাণ ও মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন নির্মাণে অনিয়ম রয়েছে উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোশারেফ হোসেনের বিরুদ্ধে। সরেজমিনে জানা যায়, গৃহহীন দুস্তদের ঘর বরাদ্দে তিনি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রকৃত গৃহহীন ও দুস্তদের বাদ দিয়ে তিনি স্হানীয় প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতাদের পচন্দের লোকদের ঘর বরাদ্দে সুপারিশ সহ ঘরগুলো নির্মাণে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন প্রকল্পের জন্য ঘর নির্মাণ না করে বরাদ্দকৃত টাকা স্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের মধ্যে বিলি সহ এর একটা অংশ তিনি তার পকেটে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যা এখন অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।

সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন খাল খনন প্রকল্পে খালের ওপর অবৈধ স্হাপনা গুলো না সরিয়ে অবৈধ স্হাপনার মালিকদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা ঘুষ গ্রহণ করে তিনি স্হাপনা গুলো বহাল তবিয়তে রেখে তিনি তার খাল খননের কাজ সম্পূর্ণ করেন এবং খাল খননের পর মাটি গুলো বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে রাতের আঁধারে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য
সরকারী খালে অনিয়মের মধ্যে ছিলো উপজেলার শশীভূষণ থানার আঞ্জুরহাট এলাকার খাল খননে রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম। উপরোক্ত অনিয়মের বিষয়ে তথ্য চেয়ে চরফ্যাশন উপজেলায় উপজেলা প্রকৌশলী মোশারেফ হোসেন নিকট তার অফিসে গিয়ে তাকে না পেয়ে তার মুঠো ফোনে কল দিলে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সে আসতে পারবে না জানান, তার কিছুক্ষণ পর কল করে তিনি জানান আপনি বসুন আমি আমার লোক পাঠাচ্ছি কিছু বলার থাকলে আপনি তার কাছে বলে যান বলে প্রকৌশলী মোঃ মোশারেফ হোসেন জানান।তার কিছুক্ষন পর উপজেলা একজন সহকারি প্রকৌশলী আসেন তার সাথে অনিয়মের বিষয় গুলো অবগত করি এবং কিছু তথ্য চাইলে তিনি তার অফিসার মোঃ মোশারেফ হোসেনের রেফারেন্স দেন। অনিয়মের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে যথাযথ ব্যবস্হা গ্রহণ না করা পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে নিউজ চলমান থাকবে।