মাহবুব আলম মানিক :
ঢাকা আশুলিয়া থানার সোর্স পরিচয়ে প্রতিনিয়ত লাখ লাখ টাকার মাসোহারা ও চাঁদা তোলার অভিযোগ শাহ্ আলম, ওরফে জুয়া শাহ আলমের বিরুদ্ধে। এবং তার সাথে মাসোহারা ও চাঁদাবাজীর কাজে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও রয়েছে কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের হাত করে মাসের পর মাস এমন অপকর্মের রাজত্ব করে যাচ্ছেন শাহ আলম।আর শাহ আলমের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করেন তার-ই আপন দুই ভাই তাজু ও শাজাহান।
আশুলিয়া থানার আওতাধীন এলাকায় যত সব অপকর্মের স্থান আছে সব গুলো থেকেই মাসোহারা আদায় করেন সোর্স পরিচয় দানকারী শাহ আলম, বাইপাইল কাঁচামালের আড়ৎ থেকে শুরু করে কলার আড়ৎ,আইসক্রিম কারখানা,ভাংগারির দোকান, পতিতালয় সহ অত্র আশুলিয়ার প্রতিটি নিষিদ্ধ পলিথিনের দোকান, ছোট বড় প্রতিটি কেরাম বোর্ডের দোকান, প্রতিটি জুয়ার আসর, এবং মাদক স্পট থেকে থানা পুলিশ নিয়ন্ত্রণের নামে প্রতি মাসে ১০ লক্ষা টাকারও বেশি মাসোহারা তোলেন বলে বিশ্বস্হ তথ্যসুত্রে জানা গেছে।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আরো জানা যায়, বিশেষ করে বাইপাইল কাঁচামালের আড়তে পাইকারি নিষিদ্ধ পলিথিনের দোকান ও বলিভদ্র তালপট্টি এলাকায় দুইটি রিকশার গ্যারেজ, মধুপুর, শ্রীপুর সহ মোট পাঁচটি গ্যারেজে কোটি টাকার জুয়ার আসর থেকেই মাসে ৫ লাখেরও বেশি টাকা আদায় করেন এই শাহআলম, উক্ত জুয়ার আসরের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে কিছুদিন পূর্বে শাহআলম ও তাঁর সহযোগীরা রতন নামের এক সোর্সকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন, এরপর একে একে বের হতে থাকে থলের বিড়াল এর-ই মধ্যে রতনকে ডেকে থানায় আপোষ মিমাংসা করিয়ে মুখ বন্ধ করে ফেলেন তার।
এছাড়াও আশুলিয়া থানার পাশেই রয়েছে শাহ আলমের নিজস্ব ফুট বানিজ্য যা তিনি নিজে এবং তার ভাই তাজু নিয়ন্ত্রণ করেন এবং কি প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করেন।সেখানে যেটা আশুলিয়ায় নজিরবিহীন। এসব-ই শেষ নয়, আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে রয়েছে তার একাধিক লটারি ও জুয়া নামক প্রতারণার ভ্রাম্যমাণ দোকান। যেগুলো প্রতিনিয়ত মানুষের সর্বস্ব লুটে নিয়ে সর্বশান্ত করে দিচ্ছেন, ১ হাজার টাকা ধরলে ২ হাজার পাবেন, ২ হাজার ধরলে ৪ হাজার পাবেন এবং ১০ হাজার ধরলে লাখ টাকা পাওয়ার শতভাগ আশ্বাস দিয়ে এমন চটকদার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিদিন প্রকাশ্যে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।
প্রকাশ্যে এমন জুয়া নামক প্রতারণার আসর থেকে সুবিধা নিতে বাদ পরেন না সাংবাদিক ও রাস্তায় ডিউটিরত পুলিশ অফিসারও, কেউ কেউ আবার বলছেন লটারি ও জুয়া নামক প্রতারণা ভ্রাম্যমাণ দোকান গুলো বসানোর পূবেই থানায় মোটা অংকের টাকায় রফাদফা করে আসেন শাহ আলম। আর এজন্যই প্রতারণার শিকার হওয়া কোন ব্যক্তি থানায় অভিযোগ করার সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল ফোনে খবর পৌঁছে যায় শাহ আলম সহ জুয়ার নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিদের কাছে আর সেই খবর পাওয়া মাত্র সবকিছু গুছিয়ে দ্রুত সটকে পড়েন তারা। এছাড়াও অনেক সময় অভিযোগকারীরা পুলিশ কর্তৃক হেনস্থার শিকার হন বলে অভিযোগ করে বক্তব্য দিয়েছেন অনেকে।
প্রতারক জুয়ারী শাহআলমের প্রতারণার শিকার শাজাহান নামের এক ব্যক্তি বলেন,আমি গার্মেন্টসে চাকরি করি প্রায় এক বছরের বেতনের ৭০ হাজার টাকা জমিয়ে আমি গ্রামে বাড়িতে যাচ্ছিলাম এসময় ঢাকা ইপিজেডের পাশে বলিভদ্র বাজার মসজিদ সংলগ্ন একটি লটারী খেলা আমার নজরে আসে, আমি ৫০ টাকা দিয়ে একটি লাটারীর কুপন কিনি তার বিনিময়ে আমাকে একটি ছোট বালতি দেয় তারা এবং লটারিতে আমি ৮ পয়েন্ট পেয়েছি আর মাত্র ২ পয়েন্ট খেলতে পারলে আমি ১০০% এক লাখ টাকা পেয়ে যাবো এরকম ভাবে একের পর এক প্রলোভন দেখিয়ে আমার সমস্ত টাকা হাতিয়ে নেয় তারা এবং কি হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও নিয়ে নেয় এক পর্যায়ে আমাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়।
এরপর আমি থানায় গিয়ে অভিযোগ করলে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে এবং আমাকে গাড়িতে বসিয়ে রেখে প্রতারক চক্রটির সাথে কানে কানে কথা বলে এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা, আমি কেনো খেলতে গিয়েছিলাম এমন প্রশ্ন করে লাথি মেরে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন আমাকে তাড়াতাড়ি সেখান থেকে চলে না গেলে আমাকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাবে এমন হুমকিও দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা পরে ভয় পেয়ে আমি নিরুপায় হয়ে চলে যাই, সে সময় তার ইউনিফর্মে নেম প্লেট না থাকায় আমি তার নামটা জানতে পারিনি।
শাহ আলম ও আশুলিয়া থানা পুলিশের এমন কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ স্হানীয় এলাকাবাসী ও সচেতন মহল।
মাসোহারা ও চাঁদাবাজীর ব্যাপারে শাহ আলমের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হোননি।
উক্ত বিষয়ে আশুলিয়া থানার ওসি কামরুজ্জামানের সাথে মুঠো ফোনে কল দিলেও তাকে কলে পাওয়া যায়নি। প্রতারক ও আশুলিয়া থানার সোর্স নামের দালাল জুয়ারী শাহআলমের অপকর্মের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে আরো বিস্তারিত পরের সংখ্যায় দ্বিতীয় পর্বে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করা হবে।
পর্ব-১