কুমিল্লা প্রতিনিধি :
কুমিল্লার আদালতে বিচারকের খাস কামরায় ঢুকে ফারুক নামের এক আসামিকে উপর্যুপুরি ছুরিকাঘাতে হত্যা মামলার আসামি হাসান ফাঁসি রায় দিয়েছে আদালত।
সোমবার (৮ মার্চ) কুমিল্লা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: আতাবউল্লাহ এই রায় দেন। ফাঁসির রায় ঘোষণার পর আসামী মো: হাসানের মা ও স্বজনদের আহাজারিতে পুরো আদালত পাড়া স্তব্ধ হয়ে পড়ে । মা নয়ন বেগমের দাবি তার ছেলে মাদকাসক্ত ছিলেন। পূর্বের শত্রুতায় আদালতে ফারুককে দেখে তার মাথা ঠিক ছিল না। তার ছেলে ন্যায্য বিচায় পায়নি।
ফাঁসির দন্তপ্রাপ্ত আসামী মো: হাসান (২৩) কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার ভোজপাড়া গ্রামের হাসান মিয়ার ছেলে।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন, কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি এড. জহিরুল ইসলাম সেলিম ও এপিপি এড. নুরুল ইসলাম।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে ১৫ জুলাই আদালত চলাকালিন সময়ে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের কান্দি গ্রামের হাজী আবদুল করিম হত্যা মামলার আসামী হাসান ছুরি হাতে ওই মামলার আরেক আসামী ফারুকের পিছনে ধাওয়া করে এসময় ফারুক আত্মরক্ষার জন্য বিচারকের খাস কামরায় গিয়ে আশ্রয় নেয়ার পরও আসামি হাসান বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশ করে ফারুককে উপর্যুপুরি ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত জখম করে। পরে তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত. ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিয়ে মামলার আইনজীবী এপিপি নুরুল ইসলাম জানান, কুমিল্লা মনোহরগঞ্জের কান্দি গ্রামে ২০১৩ সালে খুন হন হাজী আবদুল করিম। ঘটনার দিন ওই মামলার জামিনে থাকা আসামিদের হাজিরার দিন ধার্য ছিলো। বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতের এ মামলার আসামিরা আদালতে প্রবেশের সময় ৪ নম্বর আসামি ফারুককে ছুরি নিয়ে তাড়া করে ৮ নম্বর আসামি হাসান। প্রাণভয়ে ফারুক বিচারকের খাস কামরায় ঢুকে যান। পিছু ধাওয়া করে হাসানও সেখানে ঢুকে ফারুককে টেবিলের ওপর ফেলে উপর্যুপুরি ছুরিকাঘাত করে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তাকে ওই কক্ষের ফ্লোরে ফেলেও আঘাত করা হয়।
এসময় আদালতে অন্য একটি মামলার হাজিরা দিতে আসা কুমিল্লার বাঙ্গরা থানা পুলিশের সাবেক উপ-পরিদর্শক (এএস.আই) ফিরোজ এগিয়ে গিয়ে হাসানকে আটক করে। এ ঘটনায় উপস্থিত বিচারক, আইনজীবী ও অন্য আসামিরা আতংককিত হয়ে পড়েন। তখনকার সময় কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক ছিলেন বেগম ফাতেমা ফেরদৌস।