Doinik Bangla Khobor

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় কাল-বৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

চান্দিনা প্রতিনিধি :
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখীর আকষ্মিক তান্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে হঠাৎ হানা দেয়া কাল বৈশাখীর কারণে বিভিন্ন ইউনিয়নে মানুষের ঘর-বাড়ি, বৈদুতিক খুঁটি, গাছ-পালা পরে যায়। বুধবার (২২ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৪টায় আধাঘন্টার ওই কাল বৈশাখীতে এই ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে চান্দিনা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন বিদ্যুৎ বিছিন্ন রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর পর্যন্ত কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কর্মীদের লাইন মেরামতে কাজ করতে দেখা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৈশাখের পড়ন্ত বিকেলে হঠাৎ হানা দেয় কাল বৈশাখী। প্রচণ্ড তুফানে ও ঘুর্ণি বাতাসে অনেক ঘরের চালা আবার কোথাও ঘরসহ উড়িয়ে নিয়ে যায়। অনেক উঁচু গাছ যেন ধনুকের ন্যায় বাঁকা হয়ে মাটিতে লুটে পড়ে। ফসলী মাঠের বোরো ধান সহ সবজি খেতের মাচা ভেঙ্গে পড়ে। বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে বিদ্যুৎ বিছিন্ন হয় বিভিন্ন এলাকা।

এতবারপুর গ্রামের আকতার হোসেন জানান, ঝড়ে এতবারপুর গ্রামের খোকন দাসের ২টি ও স্বপন দাসের ১টি ঘর পড়ে যায়। ওই এলাকায় অনেক গাছ-পালা ভেঙ্গে গেছে। উপরে ফেলেছে গাছের গোড়া।

ওই গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ খোকন চন্দ্র দাস জানান, আমরা দুই ভাই। একজন সেলুনে অপরজন চানাচুর বিক্রি করে সংসার চালাই। করোনাভাইরাসের কারণে আমাদেরও কাজ নাই। এমনেতই দুই বেলা খেতে পারি না। এই দুর্যোগের মধ্যে আবার আমাদের ৩টি ঘর পড়ে গেছে। রাতে কোথায় থাকবো, কি করবো? চিন্তা করে উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।

মাইজখার ইউনিয়নের মাওলানা হাজী আবদুল মালেক জানান, প্রচন্ড বাতাসে আমার ১০টি বড়বড় আকাশি ও বেলজিয়াম গাছ ভেঙ্গে গেছে। গাছের ঠিক মাঝামাঝি এমন ভাবে ভেঙ্গেছে এগুলো কোনভাবেই আর বিক্রয় করা যাবে না।

এছাড়া উপজেলার কামারখোলা, পানিপাড়া, আলীকামোড়া, ফাঐ, এতবারপুর, জিরুআইশ, রসুলপুর, মেহার, হরিনা, সালচু, ভাকসার, বামনিখোলা, হারং, ছায়কোট-তুলাতলী, কুটুম্বপুর, জোয়াগ সহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি-ঘর, গাছ-পালা এমনকি ১০টিরও বেশি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়।

কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার দীপক কুমার দেবনাথ জানান- দেবপুর থেকে চান্দিনায় আসা প্রধান লাইনের ৬টি এবং চান্দিনা উপজেলার অন্তত ১০টি খুঁটি ভাঙ্গার খবর আমরা পেয়েছি। বিভিন্ন স্থান থেকে ফোন আসছে এবং আমাদের লোকজন খোঁজ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ লাইন চিহ্নিত করা সহ লাইন সংস্কারের কাজ করছে।

চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্নেহাশীষ দাশ জানান- কালবৈশাখী ঝড়ে যেসব পরিবার বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আমরা তাদের তালিকা করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবো। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। তিনি আমাদেরকে আশ্বাস্ত করেছেন।