কুমিল্লা প্রতিনিধি :
কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় একটি ইটভাটা ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি বিভিন্ন ফি, বিদ্যুৎ বিল ও মালিক পক্ষের বাৎসরিক ভাড়া পরিশোধ না করে প্রতারণার মাধ্যমে ইটভাটা দখলে রেখে অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ী শফিউল হোসেনের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের দুলারামপুর গ্রামের মেসার্স মুজিবুর রহমান এম.এম.আর ব্রিকস–কে কেন্দ্র করে। অভিযুক্ত শফিউল হোসেন কুমিল্লা সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের মরহুম সাহিদুল হকের ছেলে।
অভিযোগে জানা যায়, ইটভাটার মালিক মো. মুজিবুর রহমান ২০১২ সালে ভাটাটি স্থাপন করেন। আর্থিক সংকটে পড়ে ২০১৫ সালের পর তিনি বিদেশে চলে গেলে তার স্ত্রী হাসিয়া বেগম মালিকের এজেন্ট হিসেবে ১০ বছরের চুক্তিতে ভাটাটি শফিউল হোসেনকে ভাড়া দেন। প্রথম কয়েক বছর নিয়মিত পরিচালনা করলেও পরবর্তীতে ভাড়াসহ সরকারি লাইসেন্স নবায়ন ফি, পরিবেশগত ছাড়পত্র ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে অনিয়ম শুরু করেন ভাড়াটিয়া।
বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার থানায় সালিস হলেও সমাধান না হওয়ায় ২০২৪ সালে দেশে ফিরে মালিক পক্ষ চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন। অপরদিকে শফিউল হোসেন মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও হয়রানির পাল্টা অভিযোগ করেন।
পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় একটি অঙ্গীকারনামার মাধ্যমে শফিউল হোসেন ৯০ দিনের মধ্যে মোট ১৭ লাখ টাকা বকেয়া ভাড়া, ২০১৭ সাল থেকে ২০২৫ সালের বিদ্যুৎ বিল, ট্যাক্স ও লাইসেন্স নবায়ন ফি, এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ফি পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন। তবে অঙ্গীকারের নির্ধারিত সময় পার হয়ে প্রায় সাত মাস অতিবাহিত হলেও কোনো অর্থ পরিশোধ করা হয়নি বলে মালিক পক্ষের অভিযোগ।
এদিকে পরিবেশ অধিদপ্তর পরিবেশগত ছাড়পত্র নবায়ন না থাকায় ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা দিয়ে নোটিশ জারি করেছে। পাওনা আদায় নিয়ে অনিশ্চয়তায় স্থানীয় পাওনাদার ও এলাকাবাসীর মধ্যেও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অভিযুক্ত শফিউল হোসেন দাবি করেন, তিনি চেকের মাধ্যমে মালিককে ১৭ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। তবে পুলিশ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিসে সেই লেনদেনের প্রমাণ উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত হলেও তিনি তা বাস্তবায়ন করেননি বলে অভিযোগ ওঠে।
সর্বশেষ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে মালিক পক্ষ ইটভাটার অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।