জিএম জাহিদ হোসেন টিপু :
কুমিল্লা উপমহাদেশের প্রাচীনতম জেলা গুলোর মধ্যে অন্যতম ৷
বাংলাদেশের দক্ষিন পূর্বাঞ্চলে মেঘনার অববাহিকায় গোমতী নদীর তীরে অবস্থিত কুমিল্লা ৷ এই কুমিল্লা জেলাতেই জন্ম নিয়েছেন দেশে অনেক খ্যাতিমান মানুষ ৷ ত্রীপুরার মহারাজা মহারাজ বীরচন্দ্র মানিক্য বাহাদুর থেকে সাবেক সফল রেলপথ মন্ত্রী ও ধর্মমন্ত্রী জনাব মুজিবুল হক মুজিব এমপি পর্যন্ত অনেক বিখ্যাত ও স্বনামধন্য বাক্তির জন্ম ৷ কুমিল্লা জেলায় মোট ১৭টি উপজেলা, ১১জন সংসদ সদস্য ও ৪ জন সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য রয়েছে৷ বৃহত্তর কুমিল্লা ও নোয়াখালীর মধ্যবর্তী স্থানে কুমিল্লা হওয়ায় এতদ অঞ্চলের ৬ টি জেলা নিয়ে ১৯৮৯ কুমিল্লা বিভাগ আন্দোলন সূচনা হয় ৷ কুমিল্লায় বিভাগীয় দাপ্তরিক কাজ হলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের অতিরিক্ত যানজট ও জনসংখ্যার চাপ কমাতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে ৷ তাই ২০১৫ সালে মন্ত্রীসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম বিভাগকে ভেঙ্গে বহত্তর কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চল নিয়ে পৃথক কুমিল্লা বিভাগ করা যায় কিনা এক সমিক্ষার নির্দেশনা দেন ৷ আর তাতেই জেলা জুড়ে আনন্দের বন্যা বয়ে যায় ৷ তারই ধারাবাহিকতায় গত ২১শে অক্টোবর কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগ কার্যালয় ভার্চ্যুয়াল উদ্বোধন কালে প্রসঙ্গক্রমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিমা ফরিদপুর ও কুমিল্লা কে পদ্মা ও মেঘনা নামে ২টা বিভাগ করার কথা ঘোষনা দেন ৷ এখন প্রশ্ন হচ্ছে জেলা শহরে অবস্থিত মহানগর আওয়ামীলীগ কার্যালয় উদ্বোধন কালে ১১ এমপির মধ্যে স্থানীয় এমপি আকম বাহার সাহেবের পছন্দনীয় মাত্র ৩/৪ জন এমপি ছাড়া কোন এমপি কে দাওয়াত করেননি ৷ অথচ এই সুরম্য ভবন তৈরীতে সকল এমপি ও ধর্ণাঢ্য আওয়ামীলীগ নেতাদের আর্থীক সহযোগিতা রয়েছে ৷ জেলার বড় কোন নেতা না হয়েও শুধুমাত্র সদরের এমপি হওয়ার সুবাদে তিনি জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি/ সাধারন সম্পাদককে সহ জেলার অন্য কোন নেতাকে তিনি মূল্যায়ন ও সম্মান করেননা ৷ যার কারনে বিভাগের নাম কখনো ময়নামতি বিভাগ আবার কখনো মেঘনা বিভাগের নাম আসায় অন্য নেতা এমপিরা নীরব রয়েছেন ৷ কুমিল্লা বিভাগ আন্দোলনের সুচনায় জেলা আওয়ামীলীগের সকল নেতার বলিষ্ঠ ভূমিকা রয়েছে অথচ হাজী বাহার এমপি সাহেব বললেন আপা , " আমি ৮৮ সাল থেকে কুমিল্লা বিভাগ আন্দোলন করে আসছি ৷ পক্ষান্তরে প্রধানমন্ত্রী বললেন অন্য জেলার সকল নেতার থেকে লিখে আনো " ৷ এতে প্রতিয়মান হয় এমপি বাহার সাহেব বিভাগ প্রতিষ্ঠার একক নেতা হতে চান আর প্রধানমন্ত্রী তাঁকে একক কৃতিত্ব দিতে চাননি ৷ তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাথে মৃদু তর্ক করে সাময়ীক সস্থা জনপ্রিয়তা অর্জনের প্রয়াস পেলেও উপস্থিত অন্য এমপিদের মুখ লুকানোর দৃশ্য প্রধানমন্ত্রীর বাচনভঙ্গীতে মনে হলো তিনি এমন দৃশ্যের অবতারনার জন্য প্রস্তত ছিলেননা ৷ ৬টি জেলা ও ৫৯ টি উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা নামের বিভাগ শুধু মাত্র একজন ব্যাক্তি অহমিকা ও দাম্ভিকতার কারনে ব্যার্থতায় পর্যবর্ষীত হতে চলেছে ৷ কুমিল্লা জেলার সকল এমপি মন্ত্রী একযোগে ঐক্যমতে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে কুমিল্লা বিভাগের নাম প্রস্তাব করলে প্রধানমন্ত্রী সকলের আব্দার রাখবেন, নচেৎ নয় ৷ কিন্ত সে পথ এপপি বাহার সাহেব রাখেন নি ৷ তা ছাড়া মেঘনা নাম যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর উপহার সেহেতু আপত্তিইবা কেন ? মেঘনা বিভাগের দাপ্তরিক কাজ যেহেতু কুমিল্লা শহরের উপকন্ঠেই হবে তাহলে সবাই মিলে আওয়াজ তুলি " নাম দিয়ে কাম কি মেঘনা বিভাগ হলে ক্ষতি কি " ?