কামাল হোসেন টিটু :
মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যে রাতে কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের করিমাবাদ গ্রামে মৃত সেলিম মিয়ার বাড়ি ও গোয়াল ঘর আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবারের বরাত দিয়ে জানা যায়। সকালে ভাই বোন কে নিয়ে নানার বাড়িতে যায় মেহেদীর মা। মেহেদী হাছান পেশায় একজন নৈশপ্রহরী। দুপুরের পর কাজের উদ্দেশ্য চলে যান তিনিও। বাড়ি কেউ ছিলো না। আনুমানিক রাত সারে ১১টায় এলাকার এক প্রতিবেশী ফোন করে তার বাড়িতে আগুন লাগার বিষয়ে জানায়। বাড়িতে এসে দেখি সব শেষ হয়ে গেছে আগুনে। প্রত্যক্ষদর্শী রিফাত হোসেন নামের এক প্রতিবেশী বলেন, আনুমানিক সারে ১১টায় হঠাৎ চিৎকার চেঁচামেচি শুনে বাইরে এসে দেখতে পাই মেহেদীদের পুরো ঘরে আগুন জ্বলছে দাউদাউ করে। আগুনের তীব্রতায় কাছে যাওয়া যাচ্ছিলো না। এলাকাবাসী বহু চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। আনুমানিক সোয়া ১২টায় ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। তবে এর আগেই ঘরের ভেতরে ও বাইরের সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আমরা যুবকরা কয়েকজন মিলে শুধু একটি গরু রক্ষা করতে পেরেছি তবে গরুটিও আংশিক দগ্ধ ও আহত হয়েছে।
পড়নের কাপড় ও সন্তানদরা ছাড়া সহায়সম্বল সব হারানো মায়া আক্তার কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। শুধু পড়নের এই কাপড়টা ছাড়া আর কিছুই নেই এখন। তিনটি ছাগল, একটি বাছুর, মুরগী, হাঁসসহ খেয়ে না খেয়ে বহু কষ্টে জমানো ২০/২২ হাজার নগত টাকা ছিলো আলমিরাতে। সব কিছুই পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। সবমিলিয়ে আনুমানিক প্রায় ৬/৭ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় ভুক্তভোগী মেহেদী। কি ভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে সে বিষয়ে সরাসরি কেউ কিছু বলতে না চাইলেও, স্থানীয়দের মাঝে নানা ধরনের কানাঘুষা চলছে বলে জানা গেছে।
পোড়া ঘরের ভিটিতে দাড়িয়ে সব হারা নিঃস্ব সর্বশান্ত মেহেদীর পরিবারের সদস্যদের করুন আকুতি আর চোখের চাহনীই যেন বলছিলো, বিত্তবান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মাথা গোঁজার একটু ঠাই এবং সন্তানদের নিয়ে দু'বেলা দুমুঠো খাবারের ব্যবস্থা করে দেয়ার কথা।
স্থানীয় এলাকাবাসীদের কয়েকজন জানান, পরিবারটি একেবারে অসহায়। আমরা সকলে মিলে সামাজিক ভাবে কিভাবে তাদের সহায়তা ও পুনর্বাসন করা যায় তা নিয়ে বিকেলে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
খবর পেয়ে বুধবার সকালে ময়নামতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ লালন হায়দার শারীরিক অসুস্থতা নিয়েই ঘটনাস্থলে হাজির হন। তাৎক্ষণিক ভাবে নিজস্ব তহবিল থেকে ভুক্তভোগী পরিবারের খাবারের জন্য নগদ ২হাজার টাকা দেন এবং গৃহ নির্মাণের জন্য ২হাজার ইট দেয়ার কথা জানান। এছাড়াও তাদেরকে সরকারি ভাবে সহায়তা দেয়ার বিষয়ে আশ্বাস প্রদাণ করেন।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হালিমা খাতুন জানান, আগুনে সর্বস্ব হারানোর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি