এম শাহীন আলম :
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার পৌরসভাসহ ইউনিয়ন পরিষদ গুলোতে সরকারি আদেশ কিংবা কোন প্রকার নীতিমালা ছাড়াই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও'র)একক নির্দেশে এবং পৌর মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যানদের যোগসাজশে চলছে অবৈধ ব্যাটারী চালিত ইজি বাইক,মিশুক থেকে বাৎসরিক লাইসেন্স/ নিবন্ধনের নামে কোটি কোটি টাকা আদায়ের মহা-উৎসব,
অনুসন্ধানে সরেজমিনে দেখা যায়,যেখানে ব্যাটারী চালিত অটো-রিক্সা কিংবা মিশুকের মতো যানবাহন বন্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে,সেখানে ইউএনও পৌর মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যানরা নিজেদের ইচ্ছা মতো বিগত বছর গুলোতে এসব অবৈধ যানবাহনের নিবন্ধন- লাইসেন্স এর নামে ২০০থেকে ৫০০ টাকা গাড়ী প্রতি বাৎসরিক ফি আদায় করলেও চলতি বছরে ইজি বাইক,মিশুক গাড়ী প্রতি ৫ হাজার ২শত ২০ (৫২২০/-)টাকা করে আদায় করছে এবং পৌর এলাকায় প্রবেশ করলেই পৌর ট্রেক্সসহ বিভিন্ন ভূইফোঁড় সংগঠনের নামে বেনামে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজীর অভিযোগও পাওয়া যায়,
ভোক্তভোগীদের উল্লেখিত যানবাহন এর ড্রাইভার এবং মালিকরা দৈনিক বাংলা খবর কে জানান,যেখানে সারা বাংলাদেশের কোন জায়গায় লাইসেন্স কিংবা নিবন্ধন এর নামে কোন টাকা পয়সা নিচ্ছে না,সেখানে আমাদের লাকসামে চলতি বছরের গত কয়েক মাস যাবৎ লাইসেন্স নিবন্ধনের নামে গাড়ী প্রতি ৫হাজার ২ শত ২০ টাকা করে নিচ্ছে পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়,এর পরেও পৌরসভায় প্রবেশ করলেই পৌর কর আল্লাহর ৩০ দিন ৩৬৫ দিন তো দিতেই হয়, ভোক্তভোগীরা জানান,বর্তমানে যে হারে অটো ,মিশুক বাড়ছে এতে কোন রকম বৌ-বাচ্চা নিয়ে চলতেই অনেক কস্ট হয়,আবার পুলিশের হয়রানি তো আছেই, যা মরার উপর খরার মতো অবস্থা,
সরেজমিনে অনুসন্ধান কালে অবৈধ যানবাহনে নিবন্ধনের বিষয়ে উপজেলার গোবিন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন শামীম কে সরাসরি প্রশ্ন করা হলে ,তিনি দৈনিক বাংলা খবর কে জানান, ইউনিয়ন পরিষদের আয়ের উৎস/ সক্ষমতা বাড়াতে,আবার বলেন এসব যানবাহনে মালিকদের নিরুৎসাহিত করতে পৌরসভা মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যানদের সমন্বয়ে উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ম্যাডামের এর নির্দেশ ক্রমে এই সব নিবন্ধনের কাজ পৌরসভা সহ আমরা চালিয়ে যাচ্ছি, নিবন্ধনের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয় কিনা জানতে চাইলে চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন শামীম জানান হ্যাঁ এই টাকার কিছু অংশ সরকারি কোষাগারে জমা হয়,তাৎক্ষণিক জমার ট্রেজারী চালানের কপি দেখতে চাইলে শামীম চেয়ারম্যান তাৎক্ষণিক বলেন নিবন্ধনের টাকা গুলো ইউপি'র একাউন্টে বর্তমানে জমা আছে ইউএনও ম্যাডাম বললেই সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে দেবো বলে জানান,আর বেশি কিছু জানতে চাইলে চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন শামীম ইউএনও ম্যাডামের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন,
এই অবৈধ যানবাহনে লাইসেন্স/নিবন্ধন বিষয়ে লাকসাম পৌর মেয়র মো.আবুল খায়ের এর সাথে সরাসরি পৌরসভা কার্যালয়ে তার বক্তব্যের জন্য দেখা করে লাইসেন্স/নিবন্ধনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি গণ-মাধ্যমকে এড়িয়ে যান এবং পরবর্তীতে তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করে বক্তব্যের জন্য তার ভিজিটিং কার্ড দিয়ে বলেন আমার সাথে ফোনে কথা বলে আবার আসবেন তখন আমি আপনার প্রশ্ন গুলার উওর দেবো,আর অবৈধ যানবাহনের নিবন্ধনের বিষয়ে পৌর মেয়র মো.আবুল খায়েরও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন, এই সংবাদটি লিখার আগ পর্যন্ত বেশ কয়েকদিন তার মুঠো ফোনে অসংখ্য কল দিলেও তিনি কল কেটে দেন এবং কল রিসিভ করেননি,
অবৈধ যানবাহন ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা,মিশুক থেকে লাইসেন্স/নিবন্ধন এর নামে গাড়ী প্রতি ৫২২০ টাকা ফি নেওয়ার সরকারি কোন নিয়ম/বিধান/ নীতিমালা অনুমোদনের ব্যাপারে মোবাইল ফোনে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহফুজা মতিন কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন স্হানীয় সরকার মন্ত্রনালয় এর আইনে নিয়ম আছে পৌরসভা ইউনিয়ন পরিষদ
এর আয়ের সক্ষমতা বাড়াতে লাইসেন্স/নিবন্ধনের অনুমোদন আছে,উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজা মতিন প্রতিবেদককে স্হানীয় সরকারের আইন গুলি পড়ারও পরামর্শ দেন,তিনি জানান,আমি সরকারী আইন অনুযায়ী গাড়ী প্রতি ৫০০০ টাকা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি,বারতি নিলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান,নির্বাহী অফিসার প্রতিবেদককে সরাসরি তার উপজেলা কার্যালয়ে এসে কথা বলার জন্য বলেন,
খবর পাওয়া যায়,ইউএনও,পৌর মেয়র,ইউপি চেয়ারম্যান এর বক্তব্য চাওয়ার পর থেকে লাইসেন্স/নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানা যায়,
পরবর্তী অনুসন্ধানে পরের সংখ্যায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করা হবে