বিশেষ প্রতিনিধি :
সংবাদ প্রকাশের জেরে কুমিল্লার তিন পেশাদার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন অ্যাডভোকেট ফজলুল কবির নামের এক বিএনপি নেতা।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুরে কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের ১ নম্বর আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলাটির বাদি অ্যাডভোকেট ফজলুল কবির কুমিল্লা সিটির ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ন-আহ্বায়ক।
এ বিষয়ে বাদিপক্ষের আইনজীবী মাসুদ হাসান জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা যায়, কুমিল্লার প্রাচীনতম পত্রিকা সাপ্তাহিক "আমোদ" এর সম্পাদক বাকীন রাব্বি, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের কুমিল্লা প্রতিনিধি ও আমোদ পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মহিউদ্দিন মোল্লা এবং দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার কুমিল্লা প্রতিনিধি ও আমোদ পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক তৈয়বুর রহমান সোহেলকে আসামি করে মামলাটি করা হয়।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ সেপ্টেম্বর সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকায় "বিএনপি নেতাদের সহায়তায় পালালেন ওরা" শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়।
সেই সংবাদে উল্লেখ করা হয় যে, কুমিল্লা সদরের সাবেক এমপি বাহাউদ্দীন বাহার ও তার মেয়ে সাবেক সিটি মেয়র তাহসিন বাহার সূচনাসহ মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ডজনখানেক নেতা ভারতে পালিয়ে যান।
গত ২১ আগস্ট বুড়িচং উপজেলার চড়ানল সীমান্ত দিয়ে এক হুন্ডি ব্যবসায়ীর মাধ্যমে ভারতে পালান তাহসিন বাহার সূচনা। তাকে সীমান্ত পর্যন্ত যেতে সহায়তা করেন কুমিল্লা মহানগর বিএনপির কয়েকজন নেতা।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, সংবাদটিতে কোনো সূত্র উল্লেখ না করে মিথ্যা, বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করে কুমিল্লা মহানগর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মামলায় অভিযুক্ত তিন সাংবাদিক জানান, মামলার কথাটি জেনেছি। আমরা আইনিভাবে মোকাবিলা করবো। এ বিষয়ে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু বলেন, মামলার বিষয়টি শুনেছি। আমরা দেখছি কী করা যায়।মামলাটির নিন্দা জানিয়েছেন "জাতীয় সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন" এর নের্তৃবৃন্দরা সহ কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক।
ফারুক বলেন, যে সংবাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে, সেটিতে কারো নাম নেওয়া হয়নি, আদ্যক্ষরে লেখা হয়েছে। কেউ যদি মনে করতেন তাকে ম্যানশন করা হয়েছে, তবে সেটি তিনি পত্রিকা কর্তৃপক্ষের কাছে স্পষ্ট করার জন্য লিখিত অনুরোধ কিংবা প্রতিবাদ জানাতে পারতেন।
এছাড়া সাংবাদিকদের বিচারের জায়গা প্রেস ইন্সটিটিউট। সেখানেও আবেদন করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে আদালতে মামলা করা হয়েছে। যা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য কখনো কাম্য নয়।