কুমিল্লা প্রতিনিধি :
গত ০৬ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে জনৈক ভূক্তভোগী কর্তৃক মৌখিকভাবে র্যাব-১১ এর সিপিসি-২, কুমিল্লা ক্যাম্পে একটি অভিযোগ প্রদান করে। যেখানে সে উল্লেখ করে যে, র্যাবের পরিচয়ে একটি প্রতারক চক্র তার কাছ থেকে প্রায় ০৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা একটি ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১০ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে রাতে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের সক্রিয় তিনজন নারী সদস্যসহ মোট পাঁচজন সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত প্রতারকরা হলোঃ ১। কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার দক্ষিন চর্থা গ্রামের মৃত শাহজাহান মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন(৩৫), ২। একই জেলার সদর দক্ষিন থানার দিশাবন্দ গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে জুম্মন মিয়া(২৫), ৩। একই জেলার চান্দিনা থানার অম্বলপুর গ্রামের মৃত আলী আজগরের মেয়ে জোসনা আক্তার(২৫), ৪। একই জেলার কোতয়ালী থানার আড়াইউড়া গ্রামের মুছামিয়ার মেয়ে হাসি আক্তার(২৪) এবং তার আপন ছোট বোন ৫। মিন্নি আক্তার(১৮)। এ সময়ে তাদেও কাছ থেকে র্যাবের একটি জ্যাকেটও উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেফতারকৃত প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্যদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় প্রতারক চক্রের সদস্য জুম্মন মিয়া(২৫) একজন মাছ ব্যবসায়ী। সে মাছ ব্যবসার সুবাদে বিভিন্ন পেশার মানুষের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে। পরবর্তীতে সহজ-সরল ব্যক্তিদের টার্গেট করে নারীর প্রলোভন দেখাতো এবং নারীদেও সরবারাহ করতো।প্রতারক চক্রের সক্রিয় নারী সদস্য ও ভুক্তভোগী পুরুষকে একান্তে সময় উপভোগ করার ব্যবস্থা করতো। যখনি তারা একান্ত সময় কাটাতো ঠিক তখনি জুম্মন মিয়া(২৫) প্রতারক চক্রের অন্য সক্রিয় সদস্য আনোয়ার হোসেন(৩৫)সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনসদস্য নিয়ে প্রতারক চক্রের নারীসদস্য এবং ভুক্তভোগী পুরুষের একান্ত কাটানো মূহুর্ত চলাকালীন সময়ে ঘরে উপস্থিত হয়ে স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারন করে নিজেদের কে র্যাবের পরিচয় দিত এবং ভুক্ত ভোগী পুরুষের সাথে থাকা নগদ অর্থ ও মোবাইল ছিনিয়ে নিত। পরবর্তীতে ভূক্তভোগীকে জোরপূর্বক স্থিরচিত্র ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া ও মামলার ভয় দেখিয়ে ধাপে ধাপে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিত। তারা আরও স্বীকার করে যে, তারা বিভিন্ন সময়ে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা ক্যাম্পে অভিযোগ দেওয়ার নাম করে ভিতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন ভূক্তভোগীকে ফোন করতো এবং ভূক্তভোগী র্যাব অফিসের সামনে আসলে সে ভিতর থেকে বের হয়ে ভূক্তভোগীকে স্যার ব্যস্ত আছে পরে কথা বলবে। আমি এখন অফিসের কাজে বাহিরে যাচ্ছি অন্য আরেকদিন কথা বলবো। বিভিন্ন সময়ে অফিসের বাহিরে সেলফি তুলে সেগুলো ভূক্তভোগীদের প্রেরণ করতো এবং ভূক্তভোগীদের নিকট নিজেকে র্যাব হিসেবে বিশ্বাস স্থাপন করাতো।ভূক্তভোগীরা র্যাব অফিসের ভিতরে টাকা প্রদান করতে চাইলে সে ভূক্তভোগীদের র্যাব অফিসের ভিতরে টাকা প্রদান করলে সে ক্ষেত্রে সকল র্যাব সদস্য বিষয়টি জেনে যাবে এবং এতে করে তার চার-পাঁচগুন টাকা বেশী দিতে হবে বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করাতো। ভূক্তভোগীরা সামাজিক লাজ-লজ্জা ও মান সম্মানের ভয়ে বিষয়টি অন্য কারো সাথে শেয়ার করতে পারতোনা এবং বাধ্য হয়েই তাদের কে টাকা প্রদান করতো। উক্ত বিষয়ে গ্রেফতারকৃত প্রতারক চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। প্রতারক চক্র গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।