রফিকুল ইসলাম :
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে দেশ হাসপাতালের টেকনিশিয়ান এমদাদুলল হক মিঠু (২৯) হত্যার চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত মামলার রহস্য উন্মোচন, মুল আসামীকে গ্রেফতার করেছে কুমিল্লা জেলা পিবিআই। এ নিয়ে বুধবার সকালে পিবিআই কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো: মিজানুর রহমান জানান, সমকামীতাকে কেন্দ্র করেই মূলত বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন বিষয়ে জেলা পিবিআই পুলিশ সুপার মো: মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, গত ২৬ জুন সকালে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানাধীন স্বল্প পেন্নাই দীঘিরপাড় এলাকায় জনৈক কবির, পিতা-ফজলু মোল্লা, সাং-আঙ্গাওড়া এর মাছের প্রজেক্টের উত্তর পাড়ে ভিকটিম এমদাদুল হক মিটু (২৯), পিতা-আবুল হোসেন, সাং-হাড়পাকনা, থানা-মুরাদনগর, জেলা-কুমিল্লাকে গলায় গভীর কাটাক্ষত, মাথার পিছনে ঘাড়ের উপর দুইটি কাটা রক্তাক্ত জখম, ডান ও বাম হাতের কব্জির উপরের অংশে কাটা রক্তাক্ত জখম, বাম পায়ে হাটুর উপরে কাটা রক্তাক্ত জখম অবস্থায়তা মৃত দেহ পাওয়া যায়। পরে দাউদকান্দি থানা পুলিশ মৃত দেহ উদ্ধার করেন এবং লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন।
উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে ভিকটিমের বোন হোসেনারা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে দাউদকান্দি মডেল থানার মামলা নং-২৫, তারিখ-২৬/০৬/২০২০ইং ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়। হত্যা কান্ডের ঘটনায় পিবিআই, কুমিল্লা জেলা ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। পরবর্তীতে আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি পিবিআই এর উপর হস্তান্তর হয়। তদন্তকারী অফিসার পুলিশ পরিদর্শক (নি:) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম পিবিআই হেডকোয়াটার্স, ঢাকার এল, আই, সি এর সহযোগিতায় ডিজিটাল পদ্ধতি অনুসরণ করে আসামীকে গ্রেফতার ও মামলা রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করেন।
ঘটনার সহিত সংশ্লিষ্ট মর্মে সন্দিগ্ধ আসামী মো: ইমরান (২৪), পিতা-আবুল হোসেন মীর, সাং-গুলমাইজ, থানা-নড়িয়া, জেলা-শরিয়তপুরকে ঢাকা-উত্তরা হতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর ডিজিটাল তথ্য উপস্থাপন ও কৌশলগত জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। আসামীর দেওয়া তথ্য মতে উক্ত আসামীকে সঙ্গে নিয়া মামলার ঘটনাস্থল হতে আসামীর দেখানো মতে মামলার ঘটনার সহিত সংশ্লিষ্ট লোহারবাট সংযুক্ত ১৩ ইঞ্চি লম্বা একটি ধারালো ছোরা উদ্ধার করে উপস্থিত সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জব্দ করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানাযায় যে, আসামী এবং ভিকটিম উভয়ই সমকামী ছিল। তাহাদের মধ্যে সমকামীতা ও আর্থিক লেনদেন জনিত বিষয়ে সৃষ্ট দ্বন্ধের ফলে এমদাদুল হক মিঠু কে আসামী ইমরান গত ২৫ জুন রাত অনুমান সাড়ে ৮টায় উদ্ধারকৃত ছোরা দিয়ে হত্যা করে থাকে। আসামীকে গত ২৬ জুলাই স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দির জন্য বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করা হয়। পিবিআই পুলিশ সুপার আরো বলেন, এ ধরণের একটি ব্যতিক্রমী ও অপ্রত্যাশিত হত্যাকান্ডে আমরা বিষ্মীত। তাই এমন ধরণের হত্যাকান্ড যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটতে পারে সে কারণে সমাজের সকল নাগরিকদের আরো সচেতন হতে হবে।