হালিম সৈকত, কুমিল্লা থেকে :
উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা হওয়া এই ছাত্রলীগ বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের উন্মেষকালে মাতৃভাষা রক্ষার আন্দোলন ‘মহান ভাষা আন্দোলন’ এ নেতৃত্ব দেয়ার মাধ্যমে রক্তাক্ত ও সংগ্রামী যাত্রা পথের সূচনা হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের । এরপর থেকে সংগঠিত প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগ তার এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সফল হয়। আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে ছাত্রলীগের গৌরবদীপ্ত ও অবিস্মরণীয় ভূমিকা আজ সর্বজনস্বীকৃত ইতিহাসের অংশ ৷ ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অবদান ছাত্রলীগের ইতিহাসকে দান করেছে অনন্য বৈশিষ্ট ৷
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর ১৯৮১ সালে ১৭ মে দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মায়ের মমতায় ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করেন, আরো গতিশীলতা দিয়েছেন, করেছেন শক্তিশালী। ছাত্রলীগের নেতৃত্ব ছাত্রদের হাতেই তুলে দিয়েছেন। অবিবাহিত, নিয়মিত ছাত্ররাই এবং বয়সসীমা ২৯ বছরের নিচে যারা থাকবে তারাই নেতৃত্বে আসবেন।
তেমনি এক নেতৃত্ব তিতাস উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সফল সভাপতি ও কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ তোফাজ্জল হোসেন সাদ্দাম।
“শিক্ষা শান্তি প্রগতি ছাত্রলীগের মূলনীতি”, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেতা মোদের শেখ মুজিব”, “সন্ত্রাস নয় শিক্ষা শেখ হাসিনার শিক্ষা”, “যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা”, “ছাত্রলীগ আসছে রাজপথ কাঁপছে”, “সব অন্যায়ের প্রতিকার ছাত্রলীগের অঙ্গীকার”, “চাইলে শিক্ষার উন্নয়ন শেখ হাসিনার প্রয়োজন”, “বই খাতা আর কলম নিন, ছাত্রলীগে যোগ দিন”, “চাইলে শিক্ষার উন্নয়ন ছাত্রলীগের প্রয়োজন”, “ছাত্রলীগ দিচ্ছে ডাক সন্ত্রাসীর নিপাত যাক”, “এসো নবীন ভয় নাই ছাত্রলীগের সন্ত্রাস নাই”, “দিনবদলের শপথ নিন ছাত্রলীগে যোগ দিন”, “ছাত্রলীগের জন্ম প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম”, “এসো নবীন দলে দলে ছাত্রলীগের পতাকা তলে”, “দিন বদলের বইছে হাওয়া ছাত্রলীগের প্রথম চাওয়া”, “ছাত্রলীগের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার” — বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এমন স্লোগান দিয়ে যিনি মাঠ কাঁপিয়েছেন, তিনি হলেন রাজপথের লড়াকু সৈনিক তোফাজ্জল হোসেন সাদ্দাম। বর্তমানে
তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কুমিল্লা উত্তর জেলা কমিটি খুব শীঘ্রই হতে যাচ্ছে। সম্মেলনের মাধ্যমেই নতুন নেতৃত্বের হাতে উঠবে গৌরব-ঐতিহ্যের ধারক বাহক এ ছাত্র সংগঠনটির।
তোফাজ্জল হোসেন সাদ্দাম ছাত্র নেতৃত্বের অভিজ্ঞতায় অনেকটাই এগিয়ে। ১৫ নভেম্বর ২০১৫ থেকে ২৫ মার্চ ২০২২ ইং থেকে কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ থেকে ২২ জুলাই ২০২১ ইং পর্যন্ত তিতাস উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিতাস উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে এবং ২০১১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত গাজীপুর খান সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।
এছাড়া রাজপথে তিনি ছিলেন একজন অগ্রগামী সৈনিক। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে বিএনপি- জামায়াতের নির্বাচন বিরোধী সহিংসতার বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষে কাজ করেছেন নিরলসভাবে। এছাড়া করোনাকালীন সময়ের কঠিন পরিস্থিতিতে “হ্যালো ছাত্রলীগ” এর মাধ্যমে জনগণের মাঝে সুরক্ষা সামগ্রী, মাস্ক, স্যাভলন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ এবং গণসচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রতিটি ঘরে ঘরে কাজ করেছেন এবং খাদ্য সামগ্রীও পৌঁছে দিয়েছেন এই ছাত্রলীগ নেতা। বিনা পারিশ্রমিকে দরিদ্র- গরিব ও অসহায় কৃষকের ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন তার নেতৃত্বে তিতাস উপজেলা ছাত্রলীগ। করোনাকালীন কঠিন মুহূর্তে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনে তার ছিল বিশাল ভূমিকা। শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বই , ভর্তিসহ আর্থিক সহযোগিতা করেছেন সাদ্দাম। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে “মুজিব বর্ষের আহ্বান, ৩ টি করে গাছ লাগান” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বৃক্ষরোপন কর্মসূচী পালন করেছে তার নেতৃত্বেই।
এক প্রশ্নের জবাবে কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন সাদ্দাম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন ইতিহাসের সেরা সাহসী সন্তানেরাই ছাত্রলীগ করে। তিনি বলেছিলেন, সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই। আর ছাত্রলীগ হচ্ছে সোনার মানুষ গড়ার প্রতিষ্ঠান।
ছাত্রলীগ না করলে আমি আজকের অবস্থানে আসতে পারতাম না। আমাকে কেউ চিনতো না-জানতো না। আমার রাজনীতির জন্ম হয়েছে ছাত্রলীগ থেকে। ছাত্রলীগ আমার শৈশবের ভালোবাসা, কৈশরের উচ্ছ্বাস এবং প্রথম যৌবনের প্রেম। ছাত্রলীগ আমার অহঙ্কার, আমার গৌরব, গর্ব এবং অলঙ্কার। আমার রাজনীতির ঐতিহ্য, ছাত্রলীগ আমার অস্তিত্বে মিছে আছে। আজকে অতীতের কথা মনে পড়লেই মনে আনন্দের শিহরণ জাগে যে, স্কুল জীবনে এই সংগঠনের প্রেমে পড়েছিলাম।