এম শাহীন আলম :
কুমিল্লা গ্যাস সিস্টেম লিমিটেড বাখরাবাদের ঘুষখোর কর্তাদের যোগসাজশে গত ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে জ্বলছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ। বাখরাবাদ গ্যাস সংশ্লিষ্ট কর্তাদের চোখে কাঠের চশমা যেন দেখার কেউ নেই। জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের আমজাদের বাজার এলাকার মহাসড়কের পূর্ব এবং পশ্চিম পাশে দূর্গাপুর গ্রামে কোটি কোটি টাকা অনিয়মের মাধ্যমে বহু বছর ধরে শতাধিক পরিবারের মধ্যে অবৈধ ভাবে গ্যাস সংযোগ চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, গত এক যুগের বেশি সময় ধরে দূর্গাপুর গ্রামটিতে অবৈধ ভাবে গ্যাস সংযোগ চলছে। স্হানীয় এলাকাবাসী জানান, এই অবৈধ লাইন সংযোগেও তারা তাদের এলাকার স্হানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে এবং বাখরাবাদ গ্যাস অফিসের কিছু দূর্নীতিবাজ অসাধু কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায় সংযোগটি অদ্যবধি চালিয়ে যাচ্ছে। গ্যাস সংযোগ গ্রহিতারা জানান,তারা যখন গ্যাস সংযোগটি নেন তাদেরকে বলা হয়েছিল সংযোগটি বৈধ।তারা প্রতিটি পরিবার এই গ্যাস সংযোগের জন্য পরিবার প্রতি সর্বনিন্ম ৮০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে কেউ কেউ দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত দিয়ে গ্যাস সংযোগটি পান। স্হানীয় গ্যাস লাইন সংযোগ গ্রহিতারা জানান,তারা একটি বহি এর মাধ্যমে বেশ কযেক বছর ধরেও গ্যাস বিল দিয়েছিলেন। তবে কেউ তাৎক্ষনিক কোন প্রকার বই বা কোন প্রকার কাগজপত্র দেখাতে রাজি হননি।আর যে সকল লোকজন এই গ্যাস সংযোগটি নেওয়ার সময় সহযোগিতা করেছিলেন তাদের মধ্যে দুইজন মারা গেছে এবং তিনজন ব্যক্তি প্রবাসে আছে বলে জানা যায়।
সরেজমিনে স্হানীয়রা জানান,এই গ্যাস লাইন তো আজ বহু বছর ধরে চলছে।গত দেড় দুই বছর আগেও নতুন করে বাখরাবাদ গ্যাস অফিস থেকে লোক এসে প্রতি পরিবারের সাথে ১ লাখ টাকা করে রফার মাধ্যমে বেশ কয়েকটি পরিবারের মধ্যেও পুনরায় নতুন গ্যাস সংযোগ দিয়ে যায়। সরেজমিনে দেখা যায় এই অবৈধ গ্যাস সংযোগের পাইপলাইন গুলো রাস্তার ওপর ভেসে আছে যা অত্যান্ত বিপদজনক। যে কোন সময়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনারও আশংকা করছে স্হানীয় বসবাসকারী এলাকাবাসী।
আরো জানা যায়,লাইনটি অবৈধ হওয়ার কারনে যেহেতু নিয়মিত বিলও দিতে হয় না তাই এটা নিয়ে কারো মাথা ব্যথাও নেই। গ্যাস সংযোগ গ্রহিতারা জানান,মাঝে মধ্যে অভিযানের নামে বাখরাবাদ গ্যাস অফিস থেকে কিছু লোক অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের এখানে আসে তারা কিছু টাকা দিলে চলে যায়, দীর্ঘ সময় ধরে এই সংযোগটি এভাবেই চলছে। এই অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগের কারনে স্হানীয় লোকজন অনেকটা আতংকের মধ্যে আছেন বলে জানান,কারন রাস্তার ওপর যেভাবে গ্যাস লাইনের পাইপ গুলো ভেসে উঠছে তাতে করে যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে তারা জানান।
স্হানীয় সচেতন মহল জানান,বাখরাবাদের কিছু অসাধু কর্মকর্তার ঘুষ বানিজ্যের কারনে বিনা বিলে দীর্ঘ বছর ধরে অবৈধ গ্যাস সংযোগটি জ্বালাচ্ছে এলাকার প্রায় শতাধিক পরিবার।এই অবৈধ সংযোগটির কারনে সরকার হারাচ্ছে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।
এই অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেড এর ব্যবস্হাপনা পরিচালক আনোরুল ইসলামের সাথে তার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আপনি আমাকে তথ্য গুলা দিন আমি দেখে আপনাকে জানাচ্ছি।
এই অবৈধ গ্যাস লাইনটির শুধু সংযোগ বিচ্ছিন্নই নয়, যে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা তৎকালীন অবৈধ ভাবে ঘুষ বানিজ্যের মাধ্যমে গ্যাস সংযোগটি অনুমোদন সহ কোটি কোটি টাকা লুটে নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত যথাযথ ব্যবস্হা নেওয়ার জন্য বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেডের ব্যবস্হা পরিচালক (এমডি'র) এর প্রতি সু-দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অন্যথায় অবৈধ গ্যাস লাইনটি বন্ধ সহ জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্হা না নেওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে নিউজ চলমান থাকবে।