কুড়িগ্রাম ভূরুঙ্গামারীতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা ও মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

অপরাধ

বিশেষ প্রতিবেদক :
কুড়িগ্রাম ভূরুঙ্গামারীতে উপজেলা অবসরপ্রাপ্ত সেনা ও মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি আঃ মজিদ সরকার এর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই সমিতির সদস্যদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরে সংসদ সদস্য ২৫ কুড়িগ্রাম-১ কর্তৃক সমিতির উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ১ লক্ষ টাকা প্রদান করেন, জেলা পরিষদ কুড়িগ্রাম কর্তৃক ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থ বছরে দুই ধাপে ২ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। ভূরুঙ্গামারী উপজেলা পরিষদ কর্তৃক ২০২০-২১ অর্থ বছরে ত্রিশ হাজার টাকা প্রদান করেন। যা সমিতির ব্যাংক হিসেবে জমা করার কথা থাকলেও জমা না করে আঃ মজিদ আত্মসাৎ করেন।

অন্যদিকে সমিতির সদস্য হাজী এস কে মজিবর রহমান জানান, আমি জমি জমা সংক্রান্ত সমস্যায় সমিতির দ্বারস্থ হলে বিভিন্ন কৌশলে সমস্যা সমাধানের কথা বলে আমার কাছে বায়ান্ন হাজার টাকা নেন। ও আরো অনেক জীবিত মৃত সদস্যদের পরিবারের নিকট থেকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কুড়িগ্রাম, জেলা সমবায় কর্মকর্তা কার্যালয় কুড়িগ্রাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভূরুঙ্গামারী, বরাবর গত ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ ইং তারিখে সমিতির একাধিক সদস্য মিলিত হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ ইং তারিখে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা সমবায় অফিসার মোঃ নুর কুতুবুল আলম তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্তের দিন নির্ধারন করেন। নির্ধারিত তারিখে সমিতির সভাপতি আব্দুল মজিদ সরকার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন সংক্রান্ত ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে তদন্ত তারিখ পরিবর্তন করেন।

পরবর্তীতে ১০ জানুয়ারি ২০২২ ইং তারিখে তদন্তের দিন নির্ধারন করা হয়, সেই তারিখে সমিতির অফিসে তদন্তকার্য সম্পন্ন করা হয়। অভিযোগে উল্লেখিত সর্বমোট ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার বিষয়ে আঃ মজিদ সরকারের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সমিতির অনুদানের টাকা ব্যয়ের সঠিক নথিপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন, মৌখিক ভাবে আঃ মজিদ সরকার জানান অনুদানের টাকা সমিতির অফিস ঘর মেরামত ও বাথরুম টাইলস করা সহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজে ব্যয় করা হয়েছে। অনুদানের টাকা ক্যাশ বইয়ে লিপিবদ্ধ না করা, ও ব্যাংক হিসেবে জমা না করার বিষয়ে তিনি কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেননি।

সমিতির ব্যাংক হিসাব যাচাই করে দেখা যায় অনুদানের টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করা হয়নি। এবং তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সমিতির নামে প্রাপ্ত অনুদানের অর্থ ব্যয়ের ভাউচার সংরক্ষণ ও জরুরী ভিত্তিতে ক্যাশ বইয়ে লিপিবদ্ধ করার জন্য বলা হয়। এবং এস কে মজিবর রহমানের নিকট থেকে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে তার সাথে সমন্বয় করে সমাধান করতে বলেন।

আরো এক ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা অবঃ সেনা সার্জেন্ট মোঃ তছলিম উদ্দিন ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর চেক জালিয়াতি করে টাকা উত্তোলনের অভিযোগ করে বলেন, আমার চতুর্থ মেয়ের শশুর আলহাজ্ব মোঃ মজিবর রহমান তিনি আমার বড় মেয়ের স্বামী লাকির নামে ৪০ হাজার টাকার একটি চেক প্রদান করেন সেই চেকটি লাকিকে দেওয়ার জন্য আমার স্ত্রীর কাছে গচ্ছিত রাখেন। ইতিমধ্যে আমার পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী আঃ মজিদ সরকার আমার স্ত্রীরর কাছে সুকৌশলে চেকটি নিয়ে জালিয়াতি করে টাকা উত্তোলন করেন। পরবর্তীতে আমি জানতে পেরে তার কাছে টাকা চাইলে সে নানা তালবাহানা করে আসছে, তিনি আরো বলেন এই আব্দুল মজিদ সরকার সে দীর্ঘ দিন যাবত এলাকার অনেক মানুষের নিকট থেকে ফাঁকিবাজি ও ছলছাতুরী করে মানুষের টাকা আত্মসাৎ করেছে এবং এটাই তার পেশা।।

এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার নুর কুতুবুল আলম জানান গত ২২ সালের তদন্ত রিপোর্টের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়, এবং সমবায় বিধি ও আইন মোতাবেক নির্বাচন সম্পূর্ণ না হওয়ায় জরুরী ভিত্তিতে কমিটি গঠনের মাধ্যমে সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলা হয়।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে সভাপতি আব্দুল মজিদ বলেন আগামীকাল আমার নির্বাচন নিউজটি এই মূহুর্তে না করার জন্য বার বার অনুরোধ করেন।তার কিছুক্ষণ পর ভূরুঙ্গামারি থেকে সাংবাদিক পরিচয়ে আনোয়ারুল নামের এক ব্যক্তি মোবাইলে ফোন দিয়ে প্রতিবেদকের নাম পরিচয় জানতে চেয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করলে প্রতিবেদক কলটি কেটে দেন।পরক্ষনে সভাপতি মজিদকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
অনুসন্ধান চলছে আরো বিস্তারিত আসছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.