এম শাহীন আলম :
বাগেরহাট রামপালের গিলাতলা, শোলাকুড়া এলাকার মৃত শেখ আব্দুল হকের পুত্র ভ্যান চালক শেখ আবু লাহাব (৫৮) তার দীর্ঘদিনের ২০/৫০ টাকা করে সঞ্চয় করা অর্থ সু-কৌশলে আত্নসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। আর এই প্রতারনার কাজে অভিযুক্ত করা হয়েছে খুলনা রুপসা উপজেলার (পূর্ব রুপসা) বাগমারা এলাকার মৃত আলহাজ্ব মিনহাজ উদ্দিন এর পুত্র মোঃ মহিউদ্দিন (৬৫) ও তার ভাগ্নে জামাই সেকেন্দার আলী (৩৫) কে। ভুক্তভোগী শেখ আবু লাহাবের স্ত্রী ছালেহা বেগম (৫০) জানান, আমি অন্যের বাড়ীতে বাসায় কাজ করি পাশাপাশি মাছ কোম্পানিতেও কাজ করি। পূর্ব রুপসা বাগমারা এলাকার প্রতারক ত্রাস মহিউদ্দিন ও তার সহযোগী ভাগ্নে জামাই সেকেন্দার আলীর মিষ্টি কথার ফাঁদে ফেলে ০.০৮২৫ একর জমি, দাম- ২,৭৫০০০ (দুই লক্ষ পঁচাত্তর হাজার) টাকা ঠিক করিয়া একটা ভূয়া বায়নাপত্র লিখিয়া দিয়া ১,৫০০০০ (এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা গ্রহণ করে এবং পরে আর এস ১০১৬ খতিয়ান, যাহা মৃত এ্যাডঃ ফজলুল হক মল্লিক এবং আর ২/৩ জনের নামে রইয়াছে । তাই রুকসানা হক এর স্বামী মৃত এ্যাডঃ ফজলুল হক এর নামে একটা ভূয়া দলিল আমাকে লিখিয়া দেয়। যার কোবলা দলিল নং -২৬০৮/১৩ বাড়ী, এবং রেজিস্টির সময় ১,২৫,০০০ (এক লক্ষ পঁচিশ হাজার) টাকা গ্রহণ করেন।পরে আমি সার্ভেয়ার দিয়ে জমি মাপাতে গেলে দেখা যায়, এই জমি রুকসানা হক এর স্বামী মৃত এ্যাডঃ ফজলুল হক নিজে বেঁচে থাকা অবস্থায় বিক্রি করিয়া দিয়াছেন। অতএব আমাদের কাছে ভূয়া লোক ও ভূয়া দলিল দিয়া রুপসা তথা খুলনার ভয়ংকর ভূমিদস্যু মহিউদ্দিন আমাদের দীর্ঘদিনের কষ্টার্জিত অর্থ সু-কৌশলে আত্মসাত করেছে। এ ক্ষেত্রে আমরা অনেকের কাছে বিচার চাইছি কিন্তু কেউ ভয়ে বিচার করতে চায় না। আমাদের কাছে দেয়া ভূয়া প্রমান নিয়া প্রশাসনের কাছে যাই কিন্তু সেখানেও একই কাজ। কথায় কথায় মহিউদ্দিন ও তার ছেলে হাসান ও তার ভাগ্নে জামাই সেকান্দার আমাদের প্রায়ই মারতে ধরতে আসে,ভয়ে বাইরেও যেতে পারি না। প্রতিনিয়ত আমাদের জীবন নাশের হুমকি দিয়ে বলে, সকল প্রশাসন ও নেতাকর্মীদের ম্যানেজ করে আমরা মাঠে নেমেছি, কেউ আমাদের কিছু করতে পারবে না। "যা তোদের কোন বাপ আছে নিয়ে আয়" তিনি আরো বলেন, এই সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় নেতাকর্মীর কাছে অভিযোগ দিলেও কেউ পাশে দাঁড়ায় না। গোপন সূত্রে জানাগেছে, মোঃ মহিউদ্দিন অত্র এলাকার নেতাকর্মী ও প্রশাসনের কিছু ঘুষখোর অফিসারের হাত করে দীর্ঘদিন ধরে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া তিনি নিজের অবস্থান ঠিক রাখতে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কিশোর গ্যাং সহ ছিনতাই,চাঁদাবাজি ও মাদকের সাথে জড়িত লোকদের হাত করে শুধুমাত্র অর্থের জন্য বিভিন্ন উপজেলার হতদরিদ্র মানুষের টার্গেট করে মিথ্যা মামলা ও করে থাকেন। ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, ইতিপূর্বে আমরা গত ০৮/০৬/২২ ইং তারিখে রুপসা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রুবাইয়া তাসনিম বরাবর অভিযোগ করি কিন্তু উনি কোন ব্যবস্থা না নিয়া গত ২০/০৬/২২ ইং তারিখে রুপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সরদার মোশাররফ হোসেনকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। ওসি সাহেবের নির্দেশে থানা থেকে সমাধানের জন্য দারোগা আসে, তারাও সমাধানের কথা বলে আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়া চলিয়া গেছে এখন ডাকলে কেউ ফিরে তাকায় না। এখন পরিবার নিয়ে আমরা রাস্তায় নেমে গেছি। ভ্যান চালক আবু লাহাব আরো বলেন, এভাবে চলতে থাকলে জনগণ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? আমাদের মতো গরীব মানুষের পাশে কেউ কি নেই? তাহলে দেশে প্রশাসন থেকে জনগণের কি লাভ?এ বিষয়ে সচেতন মহল মনে করেন, স্থানীয় নেতাকর্মী ও প্রশাসন যদি অর্থের বিনিময়ে এসকল ভয়ানক অপরাধীদের অপরাধ করার সুযোগ তৈরি করে দেয় তবে আইনের প্রতি জনগণের আস্থা তথা সুশাসন কমে যাবে এবং অচিরেই দেশ ধ্বংসের দিকে নিমজ্জিত হবে। উক্ত ঘটনার সত্যতা যাচাই করার জন্য মহিউদ্দিন, সেকেন্দার আলী ও রুকসানা হকের কাছে জানতে চাইলে তাদের থেকে উক্ত প্রতারনার অভিযোগ সম্পর্কে নির্দোষ প্রমাণিত করার সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায় নাই। অবশেষে প্রতারণার ভুক্তভোগী ভ্যান চালক আবু লাহাব ও পরিবারের সদস্যরা এহেন অপরাধের বিচার চেয়ে সকল প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের কাছে সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত সহায়তা প্রদানের জন্য বিনীত ভাবে অনুরোধ জানান।