মোঃ খাইরুজ্জামান সজিব :
তফসিল অনুযায়ী খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৭ অক্টোবর। এ বছর সদস্যপদে আসছে পরিবর্তন বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন অফিস। বিগত সময়ে যেখানে ১৫ জন সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এবছর সেটি কমে আসবে। এ বছর সেটা পরিবর্তিত হয়ে সাধারণ সদস্য পদ হয়েছে ৯ টি ও সংরক্ষিত সদস্য পদ হয়েছে ৩টি মোট ১২টি।
অফিসিয়ালি নির্দেশনা না পেলেও জেলা নির্বাচন অফিস জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটারবৃন্দের তালিকা প্রনয়নের কাজ শুরু করেছে। অফিসিয়ালি নির্দেশনা পাওয়া মাত্র নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
অপরদিকে জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। বর্তমান জেলা পরিষদের প্রশাসক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ বিগত নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেন। তার বিপরীত প্রার্থী ছিলেন বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অজয় সরকার।
এ বছর আরো নতুন নাম শোনা যাচ্ছে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দেলওয়ারা বেগম, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, সাবেক নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজিত অধিকারী, নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বর্তমান চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি কাজী আমিনুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক তেরখাদা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এ বছর খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আসতে পারে পরিবর্তন। বর্তমান প্রশাসক ও সাবেক চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদের বয়স ও শারিরিক অবস্থা এবং সাম্প্রতিক সাংগঠনিক কার্যক্রম বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কেন্দ্র। এ কারনেই জেলার একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থীদের নাম শোনা যাচ্ছে আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি দেলওয়ারা বেগম ও নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি কাজী আমিনুল হক, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব মোঃ সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু বর্তমানে দেশের বাইরে থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে দেলোয়ারা বেগম এর অনুসারীরা নিশ্চিত করেছেন যে তিনি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন।
একই রকম বক্তব্য নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজিত অধিকারী ও নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজানের।
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা বলেন, আমি দলের কাছে মনোনয়ন চাইব। দল যাকে মনোনয়ন দেবেন তাকে নিয়েই কাজ করব। এখানে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ সুজিত অধিকারী বলেন, আমি দলের কাছে মনোনয়ন চাইব। দল যে সিদ্ধান্ত নিবেন সেই সিদ্ধান্ত নিয়েই কাজ করব।
সাবেক নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা-০২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান বলেন, দল যদি মনে করেন আমাকে দিয়ে তারা জেলা পরিষদ নির্বাচন করাবেন সে ক্ষেত্রে আমার তো কোন আপত্তি থাকবে না। আমি রাজনীতি করি, দলের যে কোন সিদ্ধান্ত মাথা পেতে মেনে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
এ বিষয়ে বর্তমান খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ বলেন, আমি আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন চাইব কি চাইবো না সেটি নির্ভর করছে দলের হাই কমান্ডের উপর। দলের হাই কমান্ড যা বলবে সেইভাবেই আমি আমার কার্যক্রম পরিচালনা করব। দলের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্তেই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে ৬বার দায়িত্ব পালন করে আসছি। পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি ও করছি। অতএব হাই কমান্ডের সিদ্ধান্তই আমার সিদ্ধান্ত।
আর গত বছর শেখ হারুনুর রশীদ এর বিপরীতে নির্বাচন করা জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অজয় সরকার বলেন, আমি এবার জেল পরিষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করব না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসন থেকে মনোনয়ন প্রার্থী।
অপরদিকে অফিসিয়ালি নির্বাচনের তফসিল না পেলেও জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার বৃন্দের তালিকা প্রনয়নের কাজ শুরু করেছে জেলা নির্বাচন অফিস।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এম. মাজহারুল ইসলাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার বৃন্দরা হলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, খুলনা সিটি কর্পোশেনের কাউন্সিলর ৩১ জন, কেসিসি’র সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ১০ জন, ৬৮ জন ইউপি চেয়ারম্যান, ০৯ জন উপজেলা চেয়ারম্যান, ১৮ জন ভাইস চেয়ারম্যান, সকল সাধারন ও সংরক্ষিত ইউপি সদস্যবৃন্দ। তিনি আরো জানান আগামীকাল নির্ধারন হবে চুড়ান্ত ভোটার তালিকা।
উল্লেখ্য, ২৩ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন পত্র জমাদানের শেষ দিন। জেলা প্রশাসক এ নির্বাচনের রিটানিং অফিসার। ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ইভিএমে। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন পত্র বাছাই ১৮ সেপ্টেম্বর, ২৫ সেপ্টেম্বর প্রত্যাহার এবং ২৬ সেপ্টেম্বর প্রতীক বরাদ্দ