বিশেষ প্রতিনিধি :
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে পুলিশের উপর হামলায়, আসামি ছিনতাই করে নেওয়ার ঘটনায় এস,আই হায়াতুর রহমান বাদী হয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান্দারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সুযোগ্য চেয়ারম্যান মোঃ সাব্বির খানসহ ৩৮ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করে।
মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা আবুল কালাম আজাদ জানায়, উপজেলার বহুগ্রাম ইউনিয়নের খোদ্দাদুর্বাশুর, দিস্তাইল গ্ৰামের জাকির কাজী ও আলো খন্দকারের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন বিরোধ চলতে ছিলো। তারই জেরে বুধবার (৬মে) খন্দকার ও কাজী সমর্থদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে দু'পক্ষের কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুরসহ কয়েকজন আহত হয়।
এরই জেরে জাকির কাজী'র স্ত্রী স্বপ্না বেগম বাদী হয়ে ৩৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। প্রতিপক্ষ হায়াত খন্দকার বাদী হয়ে ৬৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে।
শনিবার (৯ মে) বিকাল তিনটায় ১১ পুলিশ সদস্যের একটি দল মামলার আসামিদের ধরতে খোদ্দাদুর্বাশুর, দিস্তাইল গ্রামে অভিযান চালিয়ে
মামলার এজাহার ভুক্ত চার আসামিকে আটক করে থানার উদ্দেশ্যে রওনা হয় ভাটরা মোড়ে পৌঁছালে, খান্দারপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সাব্বির খান ও তার ছোট ভাই সজল খান, বহুগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল শেখ পুলিশের গাড়ী গতিরোধ করে। দুই চেয়ারম্যান আসামিদের ছেড়ে দিতে অনুরোধ করে। ইতি মধ্যে সাব্বির খান সমর্থিত জনতা ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এতে একজন পুলিশ অফিসার সহ ৭ জন পুলিশ আহত হয় এবং ৩ আসামি কে ছিনিয়ে নেয়। পরে এক আসামি ও আহত পুলিশ সদস্যদের নিয়ে থানায় চলে আসে।
এলাকা সূত্রে জানা যায়,' কাজী সমর্থিত লোকজন প্রভাবশালী ও বিত্তবান হওয়ায় খন্দকার সমর্থিত এজাহার মামলার ৪ আসামিকে রহস্যজনক ভাবে ছেড়ে দেয়। পরে পুলিশ আলো খন্দকার সমথিত লোকজনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এজাহার ভুক্ত ১ আসামীকে গ্ৰেফতার করে। নন এফ আর ভুক্ত ঘুমিয়ে থাকা স্কুল ছ ফেরদাউস (১৬)সহ আরো দুই জনকে আটক করে নিয়ে যায়।
এ সময় উপস্থিত প্রায় শতাধিক মহিলা পুলিশের নিকট বলেন, এজাহার ভুক্ত আসামী ধরে নিয়ে যাচ্ছেন আমরা আপত্তি করবোনা না। নিরাপরাধ নন এফ আর লোকজকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছেন কেন। কারন জানতে চাইলে পুলিশ বলেন যে, আমরা কাজী সমর্থিত আসামিদের ধরতে আসিনি। পুলিশ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ দিয়ে বলেন, আমরা খন্দকার সমর্থিত লোকজনদের ধরতে এসেছি।
তখন নিরুপায় হয়ে তাদের পরিরিবারের লোকজন ফোন করে বিষটি চেয়ারম্যান সাব্বির খানকে অবহিত করেন। চেয়ারম্যান সাব্বির খানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান,' আমি তখন মুকসুদপুর -কাশিয়ানীর উন্নয়নের রুপকার (সাবেক) সফল বানিজ্য মন্ত্রী লেঃ কর্নেল ফারুক খান এমপি সাহেবের নির্দেশনায়, আমার ইউনিয়নের জাকর গ্রামের দুস্ত, হতদরিদ্র, অসহায় ও দিনমজুরদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করতেছিলাম, আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা খন্দকার সমর্থিত লোকজন বিষয়টি আমাকে বিস্তারিত জানালে আমি তৎক্ষনাৎ এস,আই, মিজান ও এস,আই হায়াতুর রহমান'কে মোবাইল ফোনে কারন জানতে চাই।
তখন পুলিশ আমাকে ভাটরা মোড়ে আসার জন্য অনুরোধ করে। আমি তখন ভাটরা মোড়ে উপস্থিত হয়ে পুলিশের কাছে জানতে চাই কাজী সমর্থিত এজাহার ভুক্ত আসামীকে ছেড়ে দিয়ে খন্দকার সমর্থিত নন এফ,আর মেধাবী স্কুল ছাত্র ফেরদাউস সহ দুজনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন কেন। প্রতি উত্তরে এস,আই মিজান ও এস,আই হায়াতুর রহমান ভুল শিকার করে নন এফ,আর আসামি স্ব-ইচ্ছায় ছেড়ে দেয়। এজাহার ভুক্ত আসামী নিজাম ছাড়ে না এবং তাকে ছাড়তে অনুরোধ করিনি। এ সময় আমার সমর্থিত প্রায় শতাধিক লোকজন উপস্থিত হয়ে যায়। পুলিশ তখন জনতাকে হঠাতে লাটি চার্জ করে।এতে প্রায় ৭০ জন লোক আহত হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা পুলিশকে উদ্দেশ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়ে। কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়, পুলিশ আমার ভাই স্বজল খানকে শারিরিক ভাবে আহত করে, আমি নিজে আহত হয়ে পুলিশকে নিরাপদে সরে যেতে সহযোগিতা করি।
বিনা অপরাধে আমাকে মামলার প্রধান আসামি করে, পুলিশ বাদী হয়ে ৩৮ জনের নামে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট মামলা দায়ের করে। আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসডিয়াম সদস্য (সাবেক) বানিজ্য মন্ত্রী, গোপালগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফারুক খান এমপি মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি
এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্দতন কর্তৃপক্ষকে সঠিক ও সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। নিরাপরাধ ব্যাক্তিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে অনুরোধ জানাচ্ছি।