Doinik Bangla Khobor

চট্রগ্রাম মিরসরাই উপজেলা প্রকৌশলী রনি’র অদৃশ্য শক্তির বলয়ে ২ বার বদলির আদেশ স্থগিত হলেও রহস্যজনক নিরব এলজিইডি প্রশাসন

এম শাহীন আলম :
তদবির বাণিজ্যে অদৃশ্য শক্তির হস্তক্ষেপে আওয়ামীপন্থী চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই এর অভিযুক্ত উপজেলা প্রকৌশলী রনি সাহার বদলির আদেশ স্থগিত হয়েছে বলে এলজিইডি বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়। বার বার এই স্থগিতাদেশকে কেন্দ্র করে চট্রগ্রাম এলজিইডি ভবনে প্রকৌশলীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও আলোচনার ঝড় বইছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের চট্রগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলা প্রকৌশলী ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের দোসর সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও তার ছেলের আস্থাভাজন ও দুর্নীতিতে অভিযুক্ত উপজেলা প্রকৌশলী রনি সাহার ব্যাপক আর্থিক কেলেঙ্কারি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এখনো বহাল তবিয়তে রাখায় স্থানীয়দের মাঝে সমালোচনা ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, এই রনি সাহার নিজ জেলা চট্রগ্রামে এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামীদের সহযোগী হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এই উপজেলায় কমিশন বানিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। বিগত বছর গুলোতে রনি সাহা আওয়ামী মতাদর্শী ঠিকাদারদের সাথে যোগসাজশ করে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার হওয়া সত্বেও আওয়ামীলীগের সাবেক মন্ত্রী মোশারফ হোসেন পন্থী ঠিকাদরদের বিল দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে রনি সাহার সহযোগীতা কাজ না করেও বিল প্রদানের কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া নিম্নমানের কাজ হওয়া সত্বেও রনি সাহা তৎকালীন ঠিকাদারদের আপ্যায়ন,অফিস খরচ ও খুশি করার নামে ঘুষ বাণিজ্য নিয়ে ঠিকাদারদের কোটি কোটি টাকার বিল দেয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অভিযোগ উঠেছে গত জুনে সমাপ্ত ঘুর্ণিঝড় আম্পান প্রকল্পে স্থানীয় আওয়ামীপন্থী ঠিকাদারদের যোগসাজশে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার কাজ না করে বিল উত্তোলন করার অভিযোগ রয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান আলী ও মিরসরাই উপজেলা প্রকৌশলী রনি সাহার বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর ঐ সকল ঠিকাদাররা পালিয়ে গেলে।এখন দুর্নীতিবাজ রনি সাহা ও হাসান আলী কোন মতে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। বিষয়টি চতুর উপজেলা প্রকৌশলী রনি সাহা গত আগষ্ট মাসের পর সব তথ্য গোপন করেছেন বলে স্থানীয় ঠিকাদারেরা অভিযোগ করেন।

গত দুইমাস আগে সরেজমিনে মিরসরাই উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ে গিয়ে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ায় তথ্য কমিশনের নিয়মানুযায়ী গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে সম্পাদিত এবং চলমান কাজ সমূহের বিষয়ে আবেদন এর মাধ্যমে তথ্য চাইলে গত দুইমাস অতিবাহিত হওয়ার পরও এযাবৎ সময়কালীন প্রকৌশলী রনি সাহা মোবআই কলটি রিসিভ করেননি এবং তাকে তার হোয়াটসঅ্যাপে নক দিলেও তিনি কোন উত্তর দেননি।
গত ৫ আগস্ট-২০২৪ আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পরও স্থানীয় প্রভাবশালী ঠিকাদারদের সেল্টারে প্রভাব খাটিয়ে ঠিকাদারদের সাথে যোগসাজশে আওয়ামী আমলের মতো ঠিকাদাররা নিম্নমানের উপকরণ সামগ্রী ব্যবহার করা সত্ত্বেও আর্থিক সুবিধা নিয়ে বিল দিয়ে যাচ্ছে অভিযোগ রযেছে তার বিরুদ্ধে। এ ধরনের বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারি সহ অনৈতিক অভিযোগের কারণে স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কার্য্যালয় হইতে গত দুই মাসে দুই বার তাকে অন্যত্রে বদলী করা হলেও রনি সাহা অদৃশ্য প্রভাবশালী মহলের সর্বোচ্চ ব্যক্তিদের তদবিরের মাধ্যমে তার বদলীর আদেশ দুই বারই স্হগিত করে পূনরায় মিরসরাই উপজেলায় থেকে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে বিশেষ সূত্র মতে জানা যায়। সরজমিনে অনুসন্ধানে স্হানীয় কয়েকজন ঠিকাদারের সাথে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামীলীগের মতাদর্শী ঠিকাদরদের সাথে রনি সাহার ঠিকাদারী কাজের যৌথ ব্যবসা থাকায় এই উপজেলা থেকে তিনি অন্যত্র যেতে অনিচ্ছুক বলে তিনি সর্বোচ্চ তদবির চালিয়ে বার বার বদলির আদেশ স্থগিত করেছেন। স্থানীয় লোকজন তাদের বক্তব্যে বলেন বৈষম্য দুর করার লক্ষ্যে এতো আন্দোলন সংগ্রাম করে দেশে সকল সেক্টরে রদবদল হলেও মিরসরাই এখনো কিভাবে ফ্যাসিস্ট এর মদদপোষ্টরা স্ব-পদে একেই জায়গায় বহাল থাকে। ।এই বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী রনি সাহার বক্তব্য নেয়ার জন্য মোবাইলে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।