এম শাহীন আলম :
কথায় আছে চোরের মন পুলিশ পুলিশ আর সেই পুলিশই যখন অপরাধের সাথে যুক্ত থাকে তখন পুলিশকে আপনি কি বলবেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কিছু ঘুষখোর পুলিশের কারণে অপরাধীরাও পুলিশকে তোয়াক্কা করছেনা, তারা জানে পুলিশকে ঘুষ দিলে সকল পাপ মাফ আর তাই বর্তমানে অপরাধী সন্ত্রাসীরা যে কোন অপরাধ করতে দ্বিধাবোধ করছে না। বর্তমানে সরকারি পিসিপিআরএ রানিং মামলা থাকলেও মামলার নিস্প্রত্তি ছাড়াও ঘুষখোর পুলিশ অফিসারদের টাকা দিলেই মিলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সনদ। আর এসব ঘুষখোর দূর্নীতিবাজ পুলিশদের কারণে আজ দেশে পুলিশ প্রশাসন নিয়ে মানুষে মুখে মুখে বদনাম আর দেশ বিদেশে পুলিশ প্রশ্নবিদ্ধ। আর ঘুষখোর পুলিশকে নিয়ে এমন কয়েকটি ঘটনা সঠিক তথ্য নিয়ে লিখছি যা ঘটেছে চাঁদপুর সদর মডেল থানায়। এরেই মধ্যে অনিয়ম আর ঘুষ বানিজ্যের মাধ্যমে অপরাধী আসামীদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সনদ দেওয়া নিয়ে যথাযথ ব্যবস্হা গ্রহনে স্বরাষ্ট্র সচিব বরাবর দরখাস্ত আবেদন সহ একাধিক পত্র-পত্রিকায় নিউজ হওয়ার কারণে চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপারকে ম্যানেজ করে চাঁদপুর মডেল থানার ওসি তার অনিয়ম আর অপকর্ম আড়াল করতে খুব তড়িগড়ি করে রাষ্ট্রীয় এবং জনস্বার্থের বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে এরেই মধ্যে অহেতুক সন্দেহ করে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে অন্যত্রে বদলি করেন। এতো বড় একটা অভিযোগ থাকার সত্বেও জেলা পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন রহস্যজনক নিরব রয়েছে।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে বিশেষ সূত্রমতে জানা যায়,শুধু যে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে অনিয়ম তাি নয় বর্তমান ওসি যোগদানের পর থেকে চাঁদপুর মডেল থানায় আটক বানিজ্য ও জনসাধারনের হয়রানী চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। যা দেখার কেউ নেই।
উল্লেখ্য, অভিযোগ উঠেছে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় কোন প্রকার তদন্ত আর হয়রানি ছাড়া কন্ট্রাকে ঘুষের টাকা দিলেই মিলে আসামিদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ। আর ঘুষ না দিলেই আপনার কাগজপত্র সব ঠিক থাকলেও হয়রানির শেষ নেই। সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব অনিয়ম গুলো চাঁদপুর সদর মডেল থানার বর্তমান ওসির যোগসাজশে আর তদন্ত কর্মকর্তা এএসআই মহিউদ্দিন ও কম্পিউটার অপারেটর চন্দন দাসের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে চললেও যা দেখার কেউ নেই।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, এই চাঁদপুর সদর মডেল থানায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জন্য গেলে ঘুষ না দিলে অনেক হয়রানির শিকার হতে হয় সেবা গ্রহিতাদের।আর ঘুষের টাকা দিলেই সহজে কাঙ্খিত সেবাটি মিলে। আরো জানা যায়, আসামিদের পুলিশের “পিসিপিআর”মামলা চলমান থাকার সত্বেহ মামলার নিস্পত্তি ছাড়াই আসামিদের সাথে মামলার ধারার ধরণ বুঝে সর্বনিম্ম ৩০ হাজার থেকে শুরু করে লাখ লাখ টাকা রফা করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স মতো এতো গুরুত্বপূর্ণ সনদ’টি দেওয়া হয়। অনুসন্ধানকালে কথা হয় চাঁদপুর থানার গেইটের বাহিরে এক পুলিশ সদস্যের সাথে তিনি জানান, আমি ছোট পদে সামান্য চাকুরি করি পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের বিষয়ে সব দেখভাল করেন ওসি স্যার তার সাথে সহযোগিতা করেন এএসআই মহিউদ্দিন স্যার আর কম্পিউটার অপারেটর চন্দন। আমরা অনেক কিছু দেখেও না দেখার ভান করি কারণ সিনিয়ার অফিসাররা অনিয়ম করলেও তো আমরা কিছু বলতে পারি না। পুলিশ সদস্য জানান, বেশিরভাগ পুলিশ ক্লিয়ারেন্সই তো টাকার বিনিময়ে নিতে হয়। তা না হলে ঘুরতে হয়।আর এসব কাজ কিছু দালালের মাধ্যমে হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।
থানার আশপাশের দোকানী সহ স্হানীয় লোকজন জানায় এই ওসি থানার আসার পর থেকে অনিয়ম বেড়ে যায়, টাকা ছাড়া তিনি কিছু বুঝেন না।আর এই থানায় টাকা দিলে সকল কাজ সহজ আর না দিলে দিনের পর দিন ঘুরতে হয়।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রথমত মোঃ নাজমুল হাসান,পিতা মৃত হারুনুর রশিদ আসামিকে এরেই মধ্যে চাঁদপুর মডেল থানা থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ টি দেওয়া হয়েছে যার বিরুদ্ধে পুলিশের পিসিপিআর এ গত ২০১৮ এবং ২০২১ সালের করা দুইটি মামলা চলমান রয়েছে। দ্বিতীয়টি হলো হৃদয় খান, পিতা রুহুল আমিন খান এই আসামির বিরুদ্ধে পুলিশের পিসিপিআর এ গত ২০২১ সালের করা দুইটি মামলা চলমান থাকার সত্বেও চাঁদপুর সদর মডেল থানা থেকে তাকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ সনদটিও দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এমন আরো ৬ টি ঘটনা আছে যা ধারাবাহিক নিউজে ক্রমানয়ে প্রকাশ করা হবে।
এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে চেয়ে কম্পিউটার অপারেটর চন্দন দাস ও এএসআই মহিউদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তারা দুজনই বিষয়টি অস্বীকার করে এড়িয়ে যান। পরক্ষণে চাঁদপুর মডেল থানার ওসিকে বিষয়টি অবগত করতে তার সরকারি মোবাইল ফোন নাম্বারে কল দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনে তেরামি করে বলেন তার সাংবাদিককের সাথে কথা বলার সময় নেই।
থানায় কারো কোন উত্তর না পেয়ে চাঁদপুর পুলিশ সুপার কে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি। পুলিশ সুপারকে কলে না পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে কল দিয়ে বিষয়টি অবগত করলে তিনি এক প্রকার থানার ওসির পক্ষে সাফাই গাইলেও কথার এক পর্যায়ে তিনি বলেন সঠিক তথ্য থাকলে নিউজ প্রকাশ করতে।চলমান মামলার আসামিদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ৮ টি কপি থেকে পুলিশ সুপার,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি,তদন্ত কর্মকর্তা এএসআই মহিউদ্দিন,কম্পিউটার অপারেটর চন্দন দাস সহ সকলের ওয়াটসঅ্যাপে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও পিসিপিআর এর কাগজের কপি গুলা এরে মধ্যে পাঠানো হয়েছে। কাগজ গুলো পাঠানোর পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) বিষয়টি তদন্ত করবেন বলেও জানান। এই বিষয়ে সঠিক তদন্ত মাধ্যমে দোষী পুলিশ কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দেওয়ার জন্য চট্রগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ প্রধান সহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এরে মধ্যে উপরোক্ত বিষয়টি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্হা নিতে স্বরাষ্ট্র সচিব বরাবর আবেদন করা হয়েছে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মহা-পুলিশ পররিদর্শক এর বরাবরে দ্রুত ব্যবস্হা নিতে আবেদনের প্রস্তুুতি চলছে। চাঁদপুর মডেল থানার ওসির বিষয়ে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে,ঘুষখোর পুলিশদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্হা না নেওয়া পর্যন্ত ক্রমানয়ে ধারাবাহিক নিউজ চলবে।