জয়পুরহাটে শিক্ষক নিয়োগে দূর্ণীতি ও অনিয়ম

অপরাধ

জয়পুরহাট প্রতিনিধি :
জয়পুরহাট জেলার সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কালাই উপজেলার হারুঞ্জা নমিজন উচ্চ বিদ্যালয়। শিক্ষা ব্যবস্থার বেশ সুনাম থাকলেও এবার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতায় সহকারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগে দূর্ণীতি ও অনিয়ম প্রসঙ্গে। জানা যায়, গত ১৬/০৩/২০২০ ইং তারিখে সরকারি বিধি মোতাবেক এবং বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সর্বশেষ জনবল কাঠামো অনুযায়ী শূন্যপদে একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য দৈনিক যায় যায় দিন পত্রিকায় একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরপর-ই শুরু হয় নিয়োগ বাণিজ্য। সরকারি বিধি না মেনে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধন শিক্ষক মিজানুর রহমান এক প্রকার নিয়োগ চুড়ান্ত করে বিধি মোতাবেক পরীক্ষা ও অন্যান প্রক্রিয়া সম্পূন্ন না করেই অন্য প্রার্থীদের নিয়োগদানে অপারগতা প্রকাশ করে ব্যাংক ড্রাফট এর টাকা যা বিজ্ঞপ্তিতে অফেরৎযোগ্য উল্লেখ থাকলেও তা প্রার্থীকে ফিরিয়ে দিতে চান তিনি।
উক্ত পদে আবেদনকারী প্রার্থী রওশন আরা পারভীনসহ বেশ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান জয়পুরহাট সদর উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান এর নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাকে নিয়োগ দিবে মর্মে এক প্রকার নিশ্চিত করে রেখেছেন। তবুও নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য এখন যা করছেন তা নামমাত্র লোক দেখানো। অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান একজন প্রার্থীর স্বজনের সাথে মোবাইল ফোনে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেছেন, যেখানে তিনি বলেন- দেখেন নিয়োগটা নিয়ে আমাদের নিজেদের মাঝে টাকা পয়সা নিয়ে ঝামেলা চলছে, আপনি তো জানেন আমার মামাতে ভাই ওয়াহেদ আছে, সেও আমার স্কুলে সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে ঢুকতে চেয়েছিলে কিন্তু আমি তাকেও নিতে পারছিনা।
কেননা ইতিমধ্যেই একজনকে কথা দেয়া হয়েছে। এবং কিছু টাকাও (স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি) সভাপতিকে দেয়া হয়েছে। তবুও আপনি যেহেতু ব্যাংক ড্রাফট করেছেন এক সময় আসেন টাকাটা আপনাকে দিয়ে দিবো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি শহিদুল ইসলাম মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ বানিজ্য করছেন এটা সত্য। স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম এর সাথে কথা বললে তিনি অর্থের লেনদেন এর বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে নিজেকে অসুস্থ দাবি করে বলেন, আমি কিছু জানি না, আপনি প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলেন। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান এর সাথে কথা বললে তিনি প্রতিবেদকের কাছে অর্থের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তার অর্থের লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য প্রমান আছে এ কথা বলা হলে তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান। এছাড়াও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাংক ড্রাফট এর টাকা অফেরৎযোগ্য উল্লেখ থাকলেও তিনি কেন নিয়োগ এর আগেই প্রার্থীকে টাকা ফিরিয়ে দিতে চেয়েছেন জানতে চাইলে, তিনি বলেন এটা বিধি বহির্ভূত, এমন কথা বলা আমার ঠিক হয়নি। নিয়োগ বোর্ডের প্রতিনিধি জয়পুরহাট সরকারি বাজলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক রোস্তম আলী হেলালী বলেন, এ ধরনের কোন তথ্য আমার জানা নেই। যদি এমন কোন দূর্ণীতি বা অনিয়ম হয়ে থাকে তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবে। এ বিষয়ে জয়পুরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাহাদুজ্জামান এর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.