সোহেল রানা, সাভার থেকে :
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সাভারের আশুলিয়ায় এক ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে ব্যবসায়ীর বাড়ি-ঘরে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ইউপি সদস্যকে প্রধান আসামি করে ৬ সহযোগীর নাম উল্লেখ করে আজ্ঞাত ২০-২৫ জনের নামে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী আহাদ আলী।
সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুজ্জামান।
মামলার আসামিরা হলেন- সাভার উপজেলার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল হালিম মৃধা, শরিফুল ইসলাম শফি, মনির মন্ডল, মোস্তফা কবির, রবিউজ্জামান ওরফে রবি, দেলোয়ার হোসেনসহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জন।
পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৭ অক্টোবর বিকেলে ধামসোনা ইউনিয়নের কাইচাবাড়ি আহাদনগর এলাকায় ভুক্তভোগীর বাড়ি নিজের সম্পত্তি দাবি করে দ্রুত বাড়ি ছাড়তে বলেন অন্যথায় হত্যার হুমকি দিয়ে যান ইউপি সদস্য হালিম মৃধা। পরে ১২ অক্টোবর হালিম মৃধা ও তার অন্যতম সহযোগী মনির মন্ডলসহ আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত জিপ গাড়ি ভাঙচুর করে ২০ লক্ষ টাকা ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এক লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করে। এছাড়া জানালার গ্লাস ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করে ও নগদ সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা লুট করে হামলাকারীরা। এসময় বাধা দিলে ওই বাড়ির কয়েকজনকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
এদিকে মামলা দায়েরের পর সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও তার পরিবার।
আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম কামরুজ্জামান বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে ।
উল্লেখ্য, আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের বিতর্কিত ইউপি সদস্য হালিম মৃধার নামে চাঁদাবাজি, মাদক, সাংবাদিককে হত্যা চেষ্টা, জমিদখল, সাধারণ মানুষকে নির্যাতনসহ বেশ কয়েকটি মামলা ও অভিযোগ রয়েছে আশুলিয়া থানায়। গত ৮ জুলাই আশুলিয়ায় গাজিরচট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে জিটিভির স্থানীয় প্রতিনিধি শেখ শরিফ সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তার উপর মাদকাসক্ত অবস্থায় হামলা করেন এই ইউপি সদস্য। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিকের দায়ের করা মামলায় আসামি হালিম মৃধাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেছে তদন্তকারী সংস্থা।
এছাড়া ইউপি সদস্য হালিম মৃধার অন্যতম সহযোগী
হামলাকারী মনির মন্ডলের বিরুদ্ধে রয়েছে চাঁদাবাজি ও অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার বিস্তর অভিযোগ। গত কয়েক বছর ধরে পুলিশের নিয়োগে ঘুষ গ্রহণ বন্ধে পুলিশের ঊর্ধতন মহল থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও বিভিন্ন ব্যক্তিকে পুলিশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন এই প্রতারক।
মামলার ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে হালিম মৃধার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মুঠো ফোনে প্রতারক মনির মন্ডল সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে কলটি কেটে দেন। আশুলিয়া প্রেস ক্লাবের এক সিনিয়র সাংবাদিক জানিয়েছেন মনির মন্ডল নিয়মিত মাদক সেবন করে মানুষকে রাস্তাঘাটে বেকায়দায় ফেলে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করে থাকেন। এর আগে অভিযান চালিয়ে এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) তাকে গ্রেফতার করেছিল বলেও জানান তিনি।