বিশেষ প্রতিনিধি :
ঢাকার সাভারে ধোকায় পড়ে জান্নাত লাভের আশায় শিক্ষক কর্তৃক বারবার মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা বলাৎকারের শিকার হচ্ছেন। অভিভাবকরা জানার পর অনেকেই লোকলজ্জার ভয়ে এসব অভিযোগ করতে বিরত থাকছেন।
বলাৎকারের শিকার হওয়া এক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেন এই প্রতিবেদক। ওই শিক্ষার্থী জানান, হুজুর প্রত্যেকদিন রাত ১ টায় উঠে তাহাজ্জত নামাজের জন্য উঠায় । এ সময় তার বিশেষ কক্ষে নিয়ে জোর করে একটি ট্যাবলেট খাইয়ে দিয়ে বলেন ওস্তাদ খুশি তো আল্লাহ খুশি। ওস্তাদ কে খুশি করতে পারলে তুমি জান্নাত পাইবা । আর ঘুম আসেনা তখন পোশাক খুলে তিনি আমাকে তার পুরুষাঙ্গ দিয়ে পায়ুপথে অনেক জোরে ধাক্কা দেন। এতে অনেক ব্যথা হতো।
সম্প্রতি এক মাদ্রাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুই শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে। তাই অভিভাবকদের ভাবিয়ে তুলে আবারও বিষয়টি আলোচনার শীর্ষে। তাদের মধ্যে অজানা কারণে একজনের পরিবার অভিযোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে মাদ্রাসা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে বাড়িতে নিয়ে যায়। অপরজন থানায় মামলা করেছেন।
সাভার পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের বিরুলিয়া রোডের মজিদপুর এলাকার নূরানী তালিমুল কোরআন মাদরাসার দুইতলা আবাসিক ভবনে এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় এক ভুক্তভোগি শিক্ষার্থীর (১০) মা বাদী হয়ে রোববার (৩ এপ্রিল) রাতে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। সোমবার (৪ এপ্রিল) সকালে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মাকারিয়াস দাস ।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম আল আমিন হাসান সাইম। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ধুবাউড়া থানার সাতানিপাড়া এলাকায়। তার বাবার নাম জসিম উদ্দিন। তিনি সাভারের বিরুলিয়া রোডের মজিদপুর এলাকার নূরানী তালিমুল কোরআন মাদরাসায় এক বছর যাবত নাজেরা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী উক্ত মাদরাসায় আবাসিক হোস্টেলে থেকে নাজেরা বিভাগে পড়ালেখা করে। ওই মাদরাসায় শিক্ষক মাওলানা আল-আমিন হাসান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
শুক্রবার (১ এপ্রিল) রাত আড়াইটার দিকে আবাসিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় ওই শিক্ষার্থীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বলাৎকার করেন। পরের দিন ভুক্তভোগী শিশুটি বাসায় ফিরে কান্নাকাটি করে। পরে পরিবারের সদস্যরা কান্নার কারণ জানতে চাইলে শিশুটি বলৎকারের বিষয়টি তার বাবা-মাকে খুলে বলে।
জানতে চাইলে নূরানী তালিমুল কোরআন মাদরাসার পরিচালক মাওলানা আব্দুর রহমান বলেন, শিক্ষক দ্বারা শিক্ষার্থীদের বলৎকারের ঘটনা দুঃখজনক । এর আগেও এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল তবে আমরা সুষ্ঠু বিচার করে ওই শিক্ষককে বহিষ্কার করেছিলাম। এবারও তাই করা হয়েছে। বারবার এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কেন এমন প্রশ্নে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
সমাজপতিরা বলছেন, যাদের কাছ থেকে দ্বীন শিক্ষা গ্রহণ করা হয় , তাদের কাছ থেকে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কাজ কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কাজেই এহেন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সামাজিক জনসচেতনতা সৃষ্টি সহ আইনের কঠোর প্রয়োগ হওয়া উচিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তারা।
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে ।