ঢাকা আশুলিয়া থানার এস আই মালেক এর বিরুদ্ধে ভোক্তভোগীকে লাঞ্ছিত সহ মারধরের অভিযোগ

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা আশুলিয়া থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস আই) আব্দুল মালেকের দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ আশুলিয়াবাসী। কথায় কথায় ভুক্তভোগীদের অকথ্য, অশালীন ভাষায় গালাগালি ও মারাধর যেন আব্দুল মালেকের কাছে পুলিশি সেবার একটি অংশ। তার কাছে সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীরা নারী কিংবা পুরুষ হউক বাদী কিংবা বিবাদী কেহই রেহাই পান না তাঁর এমন অস্বাভাবিক আচরণ এবং গালিগালাজ থেকে বিশেষ করে নারী ভুক্তভোগী হলে তো কথায় নেই  এ যেন এক পেশাদার গালবাজ পুলিশ । মালেকের অসৌজন্যমূলক আচরণ থেকে বাদ পরেননি সংবাদকর্মীও।

ইতোপূর্বে উক্ত সংবাদ প্রতিবেদকের হাতে এস আই আব্দুল মালেকের অকথ্য ভাষায় গালাগালির একটি অডিও, ও ভিডিও চিত্র আসছে।

যেখানে তিনি একজন অসহায় নারী ভুক্তভোগীকে অকথ্য ও অশালীন ভাষায় জনসমক্ষে গালাগালি করছেন।  জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই নারী তাঁর হবু স্বামীকে নিয়ে বিয়ের কেনাকাটার উদ্দেশ্যে গত ৪ ঠা জুন – ২৪ ইং রাত ৮ টার দিকে  আশুলিয়ার কাঁইচাবাড়ি এলাকা থেকে একটি ইজিবাইকে (অটো) যোগে বলিভদ্র বাজারে যাওয়ার সময় তিনজন অপরিচিত ব্যক্তি তাদেরকে জিম্মি করে অপরিচিত একটি স্থানে নিয়ে ঘরে বন্দি করে হাত পা বেঁধে বেধড়ক মারপিট করে তাদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে এবং ওই নারীর বিবস্ত্র  ভিডিও ধারণ করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

এমতাবস্থায় পরিবারের লোকজন ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চক্রটির বিকাশ নাম্বারে পাঠালে তাঁর হবু স্বামী শফিকুলকে আটক রেখে ওই নারীর চোখ বেঁধে বিভিন্ন রাস্তা ঘুরিয়ে আশুলিয়ার শ্রীপুর বাস স্ট্যান্ডে রাত ১ টার সময় ছেড়ে দেয়। ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে জানালে ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন চক্রটি।
তবুও  ভুক্তভোগী ঐ নারী তাঁর সঙ্গে অপহরণের শিকার হবু স্বামী শফিকুলকে উদ্ধার করতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন এবং শফিকুলকে চক্রের হাত থেকে উদ্ধারের আকুতি মিনতি জানান। এসময় টহল ডিউতে থাকা আশুলিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস আই) আব্দুল মালেক ৯৯৯ এর কল পেয়ে ঘটনাস্থল শ্রীপুর আসেন। এসেই তিনি কোন কিছু না শুনেই অকথ্য,অশালীন  ভাষায় ভুক্তভোগীকে নারীকে গালাগালি করতে থাকেন। বলেন, বয়ফ্রেন্ড চু* দা* ই তে আইছো ক্যা? শালার বেটারা লজ্জা লাগে না। লাং নিয়ে আইছো, চু…দে না মা….গে মা*ল পরে ঠেঙ্গে!

এই তর বয়ফ্রেন্ড কেডা? চল দেখি কই আটকাই রাখছে, এই তর বিয়া হইছে কয়ডা?  আরো দুই চারটা বিয়া কর বদমাইশ মিয়া লোক কথাকার। এই তর বাপ মা নাই? হাতে এত বড় টার্চ ফোন থাকতে বয়ফ্রেন্ড চু*দা লাগবে কেন?  এভাবে প্রায় ২-৩ মিনিট গালাগালির পর দায়সারা দায়িত্ব পালন করে সেখান থেকে চলে আসেন তিনি।

ভুক্তভোগী সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিকারের পরিবর্তে  পুলিশের এমন আচরণ আর অকথ্য ভাষায় গালাগালিতে নিরুপায় হয়ে পুলিশের প্রতি ঘৃণার আত্মপ্রকাশ করে সেদিন সেখান থেকে চলে যান ওই নারী।
ভুক্তভোগী নারী জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার জামালপুর  গ্রামের আব্দুস ছামাদের মেয়ে রাজিয়া বেগম। বর্তমান তিনি বাইপাইল নামাবাজার ভাড়া বাসায় থেকে ফাউটেন্ড নামক তৈরী পোশাক কারখানায় কাজ করছেন।

এখানেই শেষ নয় উক্ত ঘটনার দুই দিন পরে আশুলিয়া থানায় সেবা নিতে আসা ইব্রাহিম নামের এক ব্যাক্তি জানান, তাঁর নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে মাসুমা আক্তার মিমকে ১ দিন যাবৎ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না  তাই তিনি সাধারণ ডায়েরি করতে ডিউটি অফিসারের দারস্থ হয়েছিলেন সেদিন ডিউটি অফিসার হিসেবে দায়িত্ব ছিলেন এস আই আব্দুল মালেক।আমার মেয়েকে ১ দিন যাবৎ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা এমন সমস্যার কথা জানালে তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি দেন।

বলেন, শু*য়া*রের বাচ্চা তোকে জুতা দিয়ে পিটাবো মেয়েকে দেখে রাখতে পারিস না, গার্মেন্টসে চাকরি চু* দা…বা বউ দিয়ে গার্মেন্টস করাবা আর মেয়ে খুঁজে দিবো আমরা বাহির হ এখান থেকে মা* দা* র.. চো*..দ। আরো অনেক কিছু বলেছে আমি অনেক অনুরোধ করার পরেও তিনি জিডি নেন নি শুধু এক টুকরো কাগজে একজন স্যারের মোবাইল নাম্বার লিখে আমার হাতে ধরিয়ে দিয়েছে। ভুক্তভোগী ইব্রাহিম খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার লস্কর গ্রামের নায়েব আলীর ছেলে।বর্তমান আশুলিয়ার সোনিয়া মার্কেট এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে তৈরি পোশাক কারখানায় সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন।

কলেজ ছাত্রী মদিনা আক্তার নামে আরও একজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, আমাকে একজন বখাটে ছেলে প্রতিনিয়ত উত্যক্ত করায় ও মেরে ফেলায় হুমকি দেওয়ায়  আমি আশুলিয়া থানায় সাধারন ডায়েরি করতে গিয়েছিলাম সেদিন ডিউটি অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন এস আই আব্দুল মালেক। আমি সব কিছু খুলে বলার পরে তিনি সাধারণ ডায়েরি নিতে অনিহা বোধ করেন এবং কি আমার সাথে খারাপ আচরণ করেন পরে আমার আমি  ঢাকা জেলার পুলিশ সুপারকে  বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানালে তিনি এস আই আব্দুল মালেক কে জিডি নিতে বলেন এবং আমি জিডি করাতে সক্ষম হই।

ঢাকা ইপিজেড গেইট সংলগ্ন ফুটপাতের চা দোকানি মহসিন আলী  চা চক্রে সংবাদকর্মীদের জানান সাভারের আশুলিয়া  আসনে নতুন এমপি হওয়ায় ফুটপাতে দোকান  বসাতে নিষেধ করেছেন তবুও পেটের দায়ে আমরা দোকান করি প্রায় সময় পুলিশ এসে দোকানপাট ভাংচুর করে  সেদিন আশুলিয়া থানার এস আই মালেক স্যার আমার দোকান ভাংচুর করে দোকানের উপরে থাকা ত্রিপল ছিড়ে ফেলে। আমার দোকানে থাকা ২টি এল পিজি গ্যাস সিলিন্ডারের বোতল নিয়ে যায়। আমি চাইতে গেলে আমাকে বোতল প্রতি  ২ হাজার করে টাকা দিতে বলে আমি গরিব মানুষ চা বিক্রি করে খায় এত টাকা পাবো কই পরে আমি ওসি অপারেশন নির্মল কুমার স্যারের কাছে গিয়ে  বলি স্যার খুব ভালো মানুষ কোন প্রকার টাকা লাগবে না বলে তার থেকে আমাকে বোতল গুলো ফেরত নিয়ে দেন।

নাম বলতে অনিচ্ছুক ফুটপাতের আরো একাধিক দোকানদার জানান এস আই মালেক আসলে আমরা সবাই আতঙ্কে থাকি উনি এসে আমাদের উরাধুরা মায়ের শুরু করে সেই সাথে অকথ্য ভাষায় গালাগালি তো আছেই তার এমন আচরণে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। উনি মারতে শুরু করলে কোন কিছুই দেখেনা কোথায় লাগলো কে বাঁচলো নাকি মরল আমরা তো পেটের দায়ে ফুটপাতে দোকানদারি করি আমাদেরও তো পরিবার আছে। নাম ঠিকানা প্রকাশ না করার শর্তে একজন হোটেল মালিক জানান নতুন এমপি সাহেব নাকি রাত বারোটার পরে সকল প্রকার দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সেজন্য প্রতিদিন রাতে পুলিশ এসে ঝামেলা করে

বিশেষ করে এসআই মালেক আসলে তো কোন কথাই নেই এসেই সবাইকে মারপিট শুরু করে একদিন রাতে আমার বাবুর্চি ও পাশের চায়ের দোকানদারকে বেধড়ক পিটিয়েছে আমরা ভয়ে কিছু বলতে পারি না। তাছাড়া আমরা তো অবৈধ কিছু করিনা সৎ ভাবে ব্যবসা করে খায় তবুও পুলিশ আমাদের উপর নির্যাতন করে।

দৈনিক আজকের বসুন্ধরা পত্রিকার নারী সংবাদকর্মী সিমা জাহান সাথী এস আই আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, একটি ফ্ল্যাট ক্রয় বিক্রয়ের জেরে উভয় পক্ষের মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৯৯৯ এর কলে ঘটনাস্থলে এস আই আব্দুল মালেক আসেন। আমি একজন সংবাদকর্মী হিসেবে সংবাদ সংগ্রহ সুত্রে ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে আশুলিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস আই)  আব্দুল মালেক আমার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।যা কি না পুলিশের অপেশাদারিত্বের পরিচয় বহন করে। তাহার এহেন আচরণ  একজন সংবাদকর্মীর জন্য লজ্জাজনক বিষয় পুলিশ সাংবাদিক একে অপরের পরস্পর  তাদের সম্পর্ক হবে সুসম্পর্ক। একজন সংবাদকর্মী যদি পুলিশের কাছে এরকম আচরণের শিকার হয় সেখানে  সাধারন জনগণের নিরাপত্তা কোথায়।

এছাড়াও আরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে এস আই আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খুলছেন না অনেকেই।

আশুলিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস আই ) আব্দুল মালেকের কাছে তাঁর এমন অস্বাভাবিক আচরণ এবং ভুক্তভোগীদের অকথ্য ভাষায় গালাগালির কারণ  সহ সকল  অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন প্রকার মন্তব্য প্রকাশ করেন নি।

এবিষয়ে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এ এফ এম সায়েদের সাথে  মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

থানায় সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীদের, কোন পুলিশ অফিসার গালাগালি করতে পারে কি না এমন প্রশ্নে সাভার সার্কেল এসপি শাহিদুল ইসলাম বলেন, শুধু পুলিশ নয় একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে গালাগালি করাও জঘন্য অপরাধ। পুলিশের সদস্যর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে   ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একজন পুলিশ অফিসারের এমন উশৃংখল আচরণে সচেতন মহল বলছেন, পুলিশ জনগণের বন্ধু পুলিশ জনগণের সেবক পুলিশ জনগণের  জানমালের  রক্ষাকারী সাধারণত বিপদ আপদে থানা পুলিশের শরণাপন্ন হন সাধারণ মানুষ। সেই পুলিশ-ই যদি  মানুষের সাথে এরকম আচরণ কর থাকেন তাহলে ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষ পুলিশের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলবে । এবং বিচারহীনতায় ভুগবেন ভুক্তভোগীরা বেড়ে যাবে অপরাধের মাত্রা এতে করে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করবে সাধারণ মানুষের উপর । বর্তমান প্রেক্ষাপটে কিছু কিছু অতি উৎসাহী ও অসৎ পুলিশ অফিসারের কারণে  পুরো পুলিশ ডিপার্টমেন্টের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে তারই উদাহরণ এস আই আব্দুল মালেক।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.