নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের “প্ররোচনায়” দুদক তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।
সাঈদ খোকন বলেন, মেয়র তাপস তার ব্যর্থতা ঢাকার জন্য বারবার আমার প্রতি হয়রানি ও বিদ্বেষমূলক আচরণ করে আসছেন। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই আমার মনে বিশ্বাস জন্মেছে, শুধু আমার মনে হয়, ঢাকাবাসীর মনে বিশ্বাস জন্মেছে, তার প্ররোচনাতেই এ কাণ্ড ঘটেছে।
গত রোববার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ও তার পরিবারের তিন সদস্যের আটটি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন।
ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো জব্দের বিষয়ে দুদকের আবেদনে বলা হয়, হিসাবগুলোতে অস্বাভাবিক ও বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন হয়েছে। অভিযোগটি সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে ব্যাংক হিসাবগুলো থেকে যেন অর্থ উত্তোলন, স্থানান্তর বা হস্তান্তর করা না যায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে ব্যাংক হিসাবগুলো জরুরিভিত্তিতে অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
সাঈদ খোকন ও তার পরিবারের যে আটটি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে সাঈদ খোকনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তিনটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এ ছাড়া তার মা ফাতেমা হানিফের একটি, বোন শাহানা হানিফের দুটি ও স্ত্রী ফারহানা আলমের দুটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে।
সাঈদ খোকন এ প্রসঙ্গে বলেন, আমি আইনিভাবে মোকাবেলা করব। ঢাকাবাসীকে নিয়ে প্রয়োজন হলে আরেকবার সংগ্রাম হবে।
গত বছরের শেষ দিকে রাজধানীর ফুলবাড়িয়া মার্কেটে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ নিয়ে মেয়র তাপসের সঙ্গে সাঈদ খোকনের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। তখন সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তোলেন মালিকরা। প্রায় ৩৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খোকনসহ সাত জনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়।
ওই উচ্ছেদ অভিযানের পর এক মানববন্ধনে যোগ দিয়ে সাঈদ খোকন বর্তমান মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনেন। তার সেই বক্তব্যে মানহানির অভিযোগ তুলে তাপসের দুই সমর্থক আদালতে মামলার আবেদন করেন। পরে একটি মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় এবং অন্যটি খারিজ করে দেন আদালত।
মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে মেয়র তাপসকে উদ্দেশ্য করে সাঈদ খোকন বলেন, কতটুকু ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন, এই শহরের মানুষ জানে। কত পারসেন্ট ভোট পেয়েছেন এই শহরের মানুষ জানে। যাই হোক ক্ষমতায় আছেন, মানুষের কাজ করেন। আরে ভাই, ঢাকার মরা লাশটার উপরও তো ট্যাক্স বসিয়ে দিয়েছেন। আপনি কিভাবে ঢাকাবাসীর ভালোবাসা আশা করেন? আপনার ব্যর্থতার দায় ঢাকার জন্য আর মানুষ পান নাই? বারবার শুধু আমার উপরই? কেন … কেন?
দুদকের ভূমিকায় উষ্মা প্রকাশ করে সাঈদ খোকন বলেন, এ শহরে কি হচ্ছে মানুষ কি জানে না… দেখে না…দুর্নীতি দমন কমিশনে কি হচ্ছে? কী দিয়ে কী করতে চান? শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চান? মানুষ কিন্তু এই ধরনের অপমান, অপদস্থতা কখনও মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে কমিশনের নিরপেক্ষ ভূমিকা দেখতে চাই। এ শহরে যেমন লক্ষ নাগরিক কোটি নাগরিক রয়েছে, আমিও একজন সাধারণ নাগরিক। একজন সাধারণ নাগরিকের যে অধিকার রয়েছে, আমি সেই প্রাপ্য অধিকারটুকু ফিরে পেতে চাই।