মোঃ জাহিদ হোসেন, দিনাজপুর) থেকে :
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে চাঞ্চল্যকর ভ্যানচালক মেহেদুল ইসলাম(৪০)হত্যার ঘটনায় প্রায় দেড় মাস পর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে দিনাজপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। নিহতের ব্যবহৃত ভ্যান এবং মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলশ। ভ্যান ছিনতাই করতেই পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ভ্যানচালক মেহেদুল ইসলামকে (৪০) হত্যা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আব্দুল্লাহ আল মাসুম।
রবিবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে ব্যর্থ হওয়ায় দিনাজপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) শাহ ইফতেখার আহম্মেদের নির্দেশে মামলার তদন্ত দেওয়া হয় ডিবিকে। ডিবির উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহেদুল ইসলাম দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে জড়িত দুজনকে শনাক্ত এবং শনিবার (০২ ডিসেম্বর) রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে আসামীদেরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।’
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার শেরপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে লেচু মিয়া (৩৫) এবং একই গ্রামের এনতাজ মন্ডলের ছেলে ইদু মন্ডল (২৫)।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘ভ্যান ছিনতাই করতে গত ১৫ অক্টোবর পীরগঞ্জ জেলার চতরা বাজারে বসে পরিকল্পনা করে আসামীরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী পরেরদিন ১৬ অক্টোবর সন্ধায় আসামীরা ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ বাজারে আসে এবং স্থানীয় দোকান থেকে ১০ টাকার রশি কিনে কয়েক খন্ড করে নেয়। এরপর সেখান থেকে নূনদহ ঘাটে যাওয়ার জন্য নিহত ভ্যানচালক মেহেদুলের ভ্যানটি ভাড়া করে। যাত্রাপথে ভ্যানে থাকা আসামিরা প্রসাব করার জন্য ফাঁকা রাস্তায় ভ্যানটিকে থামাতে বলে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা ভ্যানচালকের হাত-পা রশি দিয়ে এবং মুখে গামছা পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে রাস্তার পাশের আবাদি জমিতে তার লাশ ফেলে রেখে ভ্যান এবং চালকের মোবাইলটি নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর গ্রেপ্তার আসামী লিচু মিয়া তার সাথে থাকা সঙ্গীদের ১২ হাজার টাকা দিয়ে ছিনতাই করা ভ্যানটি নিজেই নিয়ে কিনে নেন।’
এরআগে গত ১৭ অক্টোবর সকাল ৮টার সময় ঘোড়াঘাট উপজেলার ৩নং সিংড়া ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামে রাস্তার ধারের আবাদী জমি থেকে মেহেদুল ইসলামের (৪০) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ভ্যানচালক মেহেদুল একই ইউনিয়নের আবদুল্লাহপাড়া গ্রামের মৃত মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। একই দিন নিহতের স্ত্রী আফরোজা বেগম (৩৬) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে ঘোড়াঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।