অনলাইন ডেস্ক :
বিদেশে অর্থপাচারের ফলে দেশে চলমান উন্নয়নের সুফল থেকে দেশবাসী বঞ্চিত হচ্ছে বলেন মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে যে পরিমাণ অর্থপাচার হচ্ছে তা খুবই উদ্বেগজনক। দেশে এখন উন্নয়নের রোল মডেল। তবে বিদেশে অর্থপাচারের ফলে এই উন্নয়নের সুফল দেশবাসী পাচ্ছেন না।
বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি কার্যালয়ে বাংলাদেশে বিদেশীদের কর্মসংস্থান : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদক প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
গবেষণা ও প্রতিবেদন প্রণয়ন করেন মনজুর ই খোদা।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমরা এর আগেও একটি গবেষণা করেছিলাম। সেখানে দেখা গেছে যে ছয়টি দেশে বাংলাদেশি কর্মীদের কোনো টাকা লাগে না সেখানেও ভিসা করতে বছরে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লেনদেন হয়। বাংলাদেশে যারা বৈধ ও অবৈধভাবে কাজ করছেন তারাও বছরে ৩ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার করছেন।
তিনি বলেন, বিদেশি কর্মী নিয়োগে দেশে কোনো নিয়ম কানুন মানা হয় না। বিদেশী নিয়োগের পূর্বশর্ত হলো ওই কাজের জন্য দেশে যোগ্য কেউ আছে কী না খোঁজ করা। তবে আমাদের নিয়োগকর্তারা আগে থেকেই বিদেশী নিয়োগের জন্য মনস্থির করে ফেলেন।
‘বৈধভাবে বিদেশি কর্মী নিয়োগে সাতটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। এর মধ্যে স্থানীয় নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষে বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুনঃবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিদেশি কর্মী নিয়োগ করতে হয়।
বিডা, বেপজা, এনজিও ব্যুরো থেকে ভিসার সুপারিশ পত্র নিতে হয়। বাংলাদেশ মিশনে ভিসার আবেদন করতে হয়।
নিরাপত্তা ছাড়পত্রের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, এনএসআই ও এসবিতে আবেদন করতে হয়।
বিডা, বেপজা, এনিজিও ব্যুরোতে কাজের অনুমতির জন্য আবেদন করতে হয়।
ট্যাক্স আইডিন্টিফিকেশন সংগ্রহ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে হয় এবং ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে আবেদন করতে হয়।-বলেন ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি আরো বলেন, অবৈধভাবে বিদেশি কর্মী নিয়োগে এতো প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয় না। এক্সপার্টের সঙ্গে বিদেশে থেকেই যোগাযোগ করে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগপ্রাপ্ত ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে আসেন এবং কাজ করেন। সাধারণত বাংলাদেশে তিন মাসের ভ্রমণ ভিসা দেওয়া হয়। ভিসার মেয়াদ শেষ হলে ওই কর্মী আবার দেশে ফিরে যান এবং ভ্রমণ ভিসার জন্য আবেদন করেন।
বাংলাদেশে মোট ২১ ধরনের বিদেশি কর্মী রয়েছে। এদের মধ্যে তৈরি পোশাক শিল্প, টেক্সটাইল, বায়িং হাউজ, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, তেল গ্যাস কোম্পানিতে লোকজন বেশি কাজ করছেন বলে জানান ইফতেখারুজ্জামান।
এছাড়া বাংলাদেশে অবস্থান করা বিদেশিদের প্রকৃত সংখ্যা সরকারের কোনো দপ্তর জানে না বলেও জানান তিনি।