দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের

অন্যান্য

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, দেশের সবকিছু স্বাভাবিক হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলায় অভিভাবকগণ চরম উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে এখন চিন্তাভাবনা করতে হবে। মাদরাসা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্তে আসা উচিত সরকারের। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, কওমী মাদরাসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের টিকাদান দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা উচিত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে জাতিকে মুখ বানানোর পাঁয়তারা করছে সরকার। শিল্প কল-কারখানা, মার্কেট, শপিংমল, এমনকি পর্যটন কেন্দ্রগুলোও খোলে দেয়া হয়েছে। এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সরকার ভয় পাচ্ছে কেন?
তিনি বলেন, মহামারি করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা।

শিক্ষার সঙ্গে জড়িত সবকিছুতেই বিপর্যয় নেমে এসেছে। লাগাতার ১৮ মাস ধরে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। মাঝখানে কিছুদিন কওমি মাদরাসা চালু থাকলেও গত এপ্রিল থেকে আবারো তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আলিয়া মাদরাসাও খোলেনি গত ১৮ মাসে। স্কুল, কলেজ ও আলিয়া মাদরাসার সকল ধরণের পরীক্ষা বন্ধ। গত বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অটো পাস দেয়া হয়েছে। এ বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এখনো হয়নি। পরীক্ষা হবে কি না, তাও স্পষ্ট নয়। শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিল ছেড়ে এবারও অটো পাসের অপেক্ষায়।

চরমোনাই পীর বলেন, দেশের প্রায় ৪ কোটি ছাত্র-ছাত্রী নিয়মতান্ত্রিক লেখাপড়া থেকে শুধু বঞ্চিত হচ্ছে তাই নয়, অনেকের শিক্ষাজীবনই শেষ হয়ে গেছে। অনেকে নানারকম অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। মাদকাসক্ত হয়েছে অনেক ছাত্র-ছাত্রী। অনলাইনে পড়াশুনার অজুহাতে ছাত্র-ছাত্রীদের একটি বিপুল অংশ অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন গেমসে আসক্ত হয়ে গেছে। এসব বিপর্যয়তো শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সংক্রান্ত। এর বাইরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে আর্থিক বিপর্যয়েও লাখ লাখ পরিবার পথে বসেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে লাখ লাখ নন-এমপিও শিক্ষক বেকার হয়ে গেছেন। শিক্ষকগণ চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

তিনি বলেন, সরকারের উদাসীনতা, অদূরদর্শিতা ও খামখেয়ালীতে দেশের শিক্ষাখাত আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হাজার হাজার কিন্ডার গার্টেন এবং প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, দেশে লাখ লাখ পরিবার আছে যাদের জীবন জীবিকা শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। লাখ লাখ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেছে শিক্ষা উপকরণকে কেন্দ্র করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাতে সেসব ব্যবসায়ীরা আজ বিপর্যস্ত। তাদের দিকে সরকারেরও কোনো নজর নেই। সরকার চাচ্ছে সবাইকে ভ্যাকসিন দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে। কিন্তু ভ্যাকসিন নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সহসাই সবাই ভ্যাকসিন পেয়ে যাবে, এমন আশা করা যায় না। তাই আর সময় না বাড়িয়ে অতিদ্রুত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.