লাতিফুল সাফি,নীলফামারী থেকে :
নীলফামারী জেলাধীন কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ১নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলতি অর্থ বছর-২০২২ইং এর ক্ষুদ্র মেরামতসহ অন্যান্য বরাদ্দ খাতে দুর্নীতি ও শিশু শ্রেণিতে ভর্তি সংক্রান্ত অনিয়ম ও বিনামূল্যে বই বিতরণে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আলেমুজ্জামানের নামে অর্থ গ্রহণের অভিযোগের তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে- চলতি অর্থ বছরে ক্ষুদ্র মেরামত বাবদ ২ লক্ষ এবং স্লীপসহ অন্যান্য ছোট বরাদ্দ খাতে ব্যয় পরিকল্পনা অনুযায়ী যেভাবে ব্যয় হওয়ার কথা ছিল, তা অনিয়মের মধ্যদিয়ে অর্থ আত্মসাত করার প্রমাণসহ তথ্য মিলেছে।
তথ্য সূত্রে বর্ণনা :
পুটিমারী ১নং সপ্রাবিতে চলতি অর্থ বছর-২০২২ইং এর ক্ষুদ্র মেরামতের ব্যয় পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিতে পানি উত্তোলন ও সরবরাহের জন্য মটর পাম্প এবং পানি সংরক্ষনের জন্য ট্যাঙ্কি ক্রয়ের কথা ছিল। কিন্তু মটর পাম্প ও ট্যাঙ্কি বিগত অর্থ বছরের বরাদ্দ থেকে ক্রয় ও স্থাপন আগে থেকেই সচল ভাবে বিদ্যমান ছিল।
প্রধান শিক্ষক আলেমুজ্জামান তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সুকৌশলে পূর্বে থেকে সচল ভাবে বিদ্যমান থাকা মটর পাম্প ও ট্যাঙ্কি স্থান্তারের মাধ্যমে ব্যয় পরিকল্পনার হিসেব অনুযায়ী মটর বাবদ(=১৩,৫৮৪/- এবং ট্যাঙ্কি বাবদ=৬৬৭৫/-) টাকা ক্রয় দেখিয়ে। মাত্র দু‘টো খাতে =২০,২৫৯/- টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- সরকারি নিয়মানুযায়ী নির্ধারিত সময়ে তিনি স্কুলে অনুপুস্থিত, যেখানে স্কুলে উপস্থিতি সময় সকাল ৯.০০টা। ৯.২০ ঘটিকায় কিশোরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জনাব- শরিফা আক্তারের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বিষয়টি দেখবেন মর্মে বলেন। (তথ্য সংরক্ষিত)। উক্ত বিদ্যালয়ে থাকাকালিন তিনি মোবাইল কলের ফলে ৯.৪০ মিনেটে স্কুলে আসেন।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলেমুজ্জামানের সাথে অফিস কক্ষে বসে প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়। কিন্তু বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিক ভাবে ব্যয় না হওয়ার বিষয়ে কথা গুলো তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের সত্যতা নিশ্চিত করতে আমরা তাকে সাথে নিয়ে ব্যয় পরিকল্পনা ও বাস্তবায়িত কাজ ক্ষতিয়ে দেখি এবং অনুমতি সাপেক্ষে চিত্র ধারণ করি।(চিত্র সংরক্ষিত)।
ব্যয় পরিকল্পনা অনুযায়ী অনিয়মের বর্ণনাঃ
১। Ramp (লেবেল সিঁড়িঁ) পূর্ব নির্মাণ- সংষ্কারও করা হয়নি।( ব্যয় ধরা হয়েছে=১১৫৩২/-) টাকা,
২। সার্টার কেচিগেট পূর্বে থেকেই বিদ্যমান- সংষ্কারও করা হয়নি। ব্যয় ধরা হয়েছে(=২৪৯৪৫/-) টাকা।
৩। দু‘টো দরজার ফ্রেম পরিবর্তন করার কথা ব্যয় পরিকল্পনায় থাকলেও তা করা হয়নি। ব্যয় ধরা হয়েছে(=১০,৩৮৩/-) টাকা। পূর্বের ফ্রেম বিদ্যমান।
৪। ৮টি ডোর (দরজা), ২৪টি উইনডো (জানালা) পেইন্টিং করা হয়নি। অথচ ব্যয় পরিকল্পনায় বরাদ্দ ধরা হয়েছে।
৫। ১২টি জানালা মেরামত করার বরাদ্দ থাকলেও মেরামত কাজ হয়েছে মাত্র ৫টি।
এছাড়াও শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপকরণ ও নান্দনিক উপকরণ ক্রয়ে ব্যয় পরিকল্পনা অনুযায়ী অনিয়ম করা হয়েছে।
উল্লেখ থাকে যেঃ
দু‘টো “খেলনা ঘোড়া”র ক্রয়মূল্য(=২৬০০/- হলেও দেখানো হয়েছে=৫৬০০/-) টাকা। এবং একটি ফ্লাশ কার্ডের মূল্য ধরা হয়েছে(=২০০০/-) টাকা।
উল্লেখিত ঘটনার বিষয়সহ কিশোরগঞ্জ উপজেলাধীন আরও বেশ কয়েকটি সপ্রাবির অনিয়ম সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য প্রদানের ভিত্তিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফা আক্তার ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ নবিশ উদ্দীনকে অবগত করা হলেও দ্বায়িত্বপূর্ণ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। শিক্ষা খাতে দুর্নীতি ও অনিয়ম ধামাচাপা দেওয়ার ব্যাপারে উল্টো বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সুপারিশ কল করা হয়েছে(তথ্য সংরক্ষিত)।
শিক্ষা খাতে এমন দুর্নীতির রোধে ব্যবস্থা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারী ও সত্যতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে যথাযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ সচেতন ও সুধী মহলের দাবী।
পরবর্তী অনুসন্ধানে পরের সংখ্যায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করা হবে