আহসান হাবীব :
নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও স্বপদে বহাল রয়েছেন নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলার মটরচালকলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল। তার বিরুদ্ধে পদের ক্ষমতাবলে দোকান ভাড়া পরিশোধ না করা, জিপির নামে বিপুল অঙ্কের চাঁদাবাজি করা, নিজ গ্রুপের লোকদের নানা অবৈধ সুবিধা দেয়া, অন্যদিকে সাধারণ সিএনজি চালকদের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা, সিএনজি চালকদের সাথে অশালীন আচরণসহ নানান অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দিনকে দিন এমন নানা অভিযোগের পাহাড় জমলেও যেন ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়েছেন তিনি। হয়নি কোনো তদন্ত, নেই কোনো ব্যবস্থা।
বয়োবৃদ্ধ আবুল কালাম খাজা (৭৪) কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি একজন গরীব অসহায় মানুষ, ৭৪ বছর বয়সে অসহায় হয়ে খুব কষ্ট করে কনকনে শীতের মধ্যে হারিছ চৌধুরীর বাজার পাহারাদারের (নাইট গার্ড) চাকুরী করি, হারিছ চৌধুরীর বাজার মেইন রোডের পর্ব পাশে আমার একটা দোকান ঘর আছে, আমার নিজ মালিকানা দোকান ঘরটি মটরচালকলীগের সুবর্ণচর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সোনাপুর থেকে এসে ভাড়া নেয়, ভাড়া নিয়ে মটরচালকলীগের নাম দিয়ে সিএনজি চালকদের কাছ থেকে জিপির নামে চাঁদা তোলে, গত ৫ মাস যাবৎ আমার দোকান ঘর ভাড়া দিচ্ছে না, ভাড়া চাইতে গেলে দিচ্ছি দিবো বলে বিভিন্ন টালবাহানা করে, বিষয়টি আমি বাজার সেক্রেটারি মহিউদ্দিন মাস্টারকে জানিয়েছি, এবং বর্তমান নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ খসরু কেউ জানিয়েছি, আমি বৃদ্ধ মানুষ, বয়সের ভারে নাইট গার্ডের চাকুরী করা সম্ভব হচ্ছে না, ঘরটিতে আমি নিজে দোকান করবো, আর ভাড়া দিবো না, এমতাবস্থায় সে আমার ঘর ছেড়ে দিচ্ছে না, ভাড়াও পরিশোধ করছে না।
সিএনজি চালক মোঃ মানিক বলেন, আমি একজন সিএনজি চালক, আমি একটা ভাড়া সিএনজি চালাইতাম, গত কিছুদিন আগে গাড়িটি চুরি হয়ে যায়, আমি এবং আমার কোম্পানি অনেক খোজাখুজি করছি, গাড়ির কোন সন্ধান পায়নি, কোম্পানি আমার উপর কোন চাপ সৃষ্টি করেনি, কিন্তু আমাদের সিএনজি সংগঠনের সেক্রেটারি কামরুজ্জামান কামরুল আমার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করছে, আমি তার দাবীকৃত পাঁচ হাজার টাকা দিতে পারিনি বিদায় সে আমাকে বিভিন্ন রকম হুমকি ধামকি ও গালমন্দ করছে, আমি তার ভয়ে কিছুদিন গাড়ি চালানো বন্ধ রাখছি, আমাদের কোন গাড়ি এক্সিডেন্ট করলে সহযোগিতা না করে উল্টো ওই চালকের কাছ থেকে সে চাঁদা আদায় করে।
কথা হয় আরেক সিএনজি চালক রুহুল আমীনের সাথে, তিনি জানান, আমরা বাপ-ছেলে তিনজন সিএনজি চালক, গত কয়েকমাস আগে আমি এক্সিডেন্ট করি, আমার গাড়িটি জনতা আটক করে রাখে, আমি আমাদের প্রতিনিধি হিসেবে সেক্রেটারি কামরুজ্জামান কামরুলের কাছে আসি, উনাকে বললাম আমি আপনার খরচ দিবো, আপনি ঘটনাস্থলে চলেন, উনি বললেন আমি সেখানে কেন যাবো, এটা আমার দ্বায়িত্ব না, তাহলে দ্বায়িত্ব কার? আমরা তাকে চাঁদা মাশুল দিয়ে আসতেছি, কোন চালক এক্সিডেন্ট করলে এই জিপির টাকা থেকে দশটা টাকা সহযোগিতা করা হয় না, বরং উল্টো উনাকে টাকা দিতে হয়। আমরা বহিরাগত এমন সেক্রেটারি চাই না, আমাদের চালকদের মধ্য থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে একজন সেক্রেটারি চাই,
তিনি আরো বলেন, এই সেক্রেটারি সুবর্ণচরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে লোক নিয়োগ দিয়ে জিপির নামে চাঁদা কালেকশন করাই, জিপির একটা টাকা ও চালকের কোন কল্যাণে আসে না, সব ভাগবাটোয়ারা করে খেয়ে ফেলে, একজন চালক এক্সিডেন্ট করলে বা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দেখতে পর্যন্ত যায় না।
এই বিষয়ে জানতে মটরচালকলীগের উপজেলা সেক্রেটারি কামরুজ্জামান কামরুলের ফোনে বার বার কল করে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।