এস আল-আমিন খাঁন,পটুয়াখালী থেকে :
পটুয়াখালী সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে বিরঙ্গনার জমি জোরপুর্বক দখল করে নেয়া একই ব্যাক্তিরা মা ও ভাইকে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বিতাড়িত করার পায়তারার অভিযোগ পাওয়া গেছে।অভিযোগকারী, মোসাঃ জামিনা বেগম (৭৫), ও মতিউর রহমান তালুকদার (৬৫).
অভিযোগ সুত্রে, একজন দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করা মমতাময়ী মা জামিনা বেগমের জমি জোর পুর্বক দখলে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জামিনা বেগম হলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাক-হানাদার বাহিনী ও তাদের দোষর পটুয়াখালী রাজাকারদের সহায়তায় ইটবাড়িয়া ইউনিয়নে দুর্গাপুর গ্রামে একাধিক নারীদের ধরে নিয়ে এসে সার্কিট হাউসে পাষবিক নির্যাতন চালায় তাদের ভিতরে একজন।জমি দখলকারীরা হলেন, সোহাগ পারভেজ (৩৫), বনি তালুকদার (২৮), আতিকুল ইসলাম ওরফে সুমন তালুকদার (৩২), উভয় পিতাঃ আব্দুল লতিফ তালুকদার (৭০), জান্নাতি বেগম, জাহানারা বেগম ও বহিরাগত লিলি মৃধা, কামাল মৃধা। দখলকারী অস্ত্রের ভয় ও জীবন নাশের হুমকি দিয়ে প্রায় ৪-৫ বছর ধরে জোরপূর্বক জমি দলখ করে রেখেছে। এবিষয়ে দখলী জমি ফেরত পেতে ২০১৯ সালে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপারের বরাবর লিখিত আবদেন করলে সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। উক্ত বেদখলীয় জমি উদ্ধারের অফিসার ইনচার্জ স্থানীয় গনমান্য ব্যাক্তিদের সমন্বয়ে শালিশ বৈঠকের ব্যবস্থা করে।বিজ্ঞ শালিশ গনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাহার জমির সত্যতা পাওয়া গেলে তৎকালীন সময় বর্ষা মৌসুম থাকায় জমি বুজিয়ে দেয়া হয় নাই। পরবর্তীতে বিভিন্ন শালিশগনের দারস্থ হয়ে ও আজও জমি বুজে পাননি মমতাময়ী মা বিরঙ্গনা জামিনা বেগম।জামিনা বেগম তার জমি ফেরত পেতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুতি জানিয়ে আইনের সহযোগিতা কামনা করেন।
এছাড়াও আহত মতিউর রহমান তালুকদার অভিযোগ করেন, একই পিতার সন্তান হয়েও পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য পায়তারা চালাচ্ছে সৎ ভাই আব্দুল লতিফ তালুকদার (৭০), পিতাঃ মৃত হাতেল আলী তালুকদার, ও তার ছেলেরা (১). সোহাগ পারভেজ (৩৫), (২). আতিক তালুকদার ওরফে সুমন (৩২), (৩). বনি আমিন (২৮), উভয় পিতাঃ আব্দুল লতিফ তালুকদার।জানাগেছে, দীর্ঘদিন ধরে ৭৮.৪৮ শতাংশ জমি নিয়ে উভয়ের মধ্যে বিরোধ চলমান রয়েছে। এবিষয়ে একাধিকবার শালিস মিমাংসার চেষ্টা করা হয়। কিন্তুু বিবাদীরা কোন শালিস মিমাংসা না মেনে ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে।
এবিষয়ে গত (৩১/০১/২০২২ ইং) তারিখ বিবাদীদের নামে পটুয়াখালী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মতিউর রহমান (৬০), পিতাঃ মৃত হাতেম আলী তালুকদার।অভিযোগের ভিত্তিতে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এ,এস,আই লিমন কে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়কে পক্ষকে আইন ভঙ্গ না করার জন্য বলা হয়।
উক্ত অভিযোগের জের ধরে গত ০৫/০২/২০২২ ইং তারিখ শনিবার মাগরিবের নামাজের সময়কালীন পরিকল্পিত ভাবে বিবাদীগন, সোহাগ, বনি, আতিকুল, জান্নাতি বেগম, জাহানারা বেগম ও বহিরাগত লিলি মৃধা, কামাল মৃধা পথরোধ করে দেশীয় অস্ত্র বাংলা দাও, লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও মারধর করে বাদী মতিউর রহমান তালুকদার ও তার ভায়রা জাকির হোসেনকে গুরুত্বর আহত করে।পরে তাদের স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এব্যাপারে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১'ম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আশিকুর রহমান আমলী আদালত 'ক' অঞ্চল, সি,আর ২৬৮/২২ নং মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি ও সুষ্ঠু বিচারের সার্থে বাদী পক্ষদ্বয়কে জখমীদয়ের MC আগামী ১৫/০৩/২২ ইং তারিখের মধ্যে বিজ্ঞ আদালতে জমা দেয়ার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্বাবধায়কে MC প্রদান করার জন্য লিখিত স্মারক অবহিত করেন। যাহার স্মারক নং-৫২৯, তারিখ-০৬/০২/২০২২ ইং।
এবিষয়ে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।