বিশেষ প্রতিবেদক :
রাজধানী ঢাকার ধামরাইয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে দৈনিক যুগান্তর সাংবাদিক শামীম খানের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সাটুরিয়া উপজেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কা জনক।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে গাঙ্গুটিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ধামরাই উপজেলায় অবৈধ প্রস্তাবে একাধিক নারীর জুতা পেটা খাওয়া গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি ও একাধিক দুর্নীতির সংবাদ দৈনিক যুগান্তর পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে সাংবাদিকদের ওপর প্রতিহিংসায় ক্ষিপ্ত হয়ে সুযোগের অপেক্ষায় থাকে কাদের মোল্লা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। তারা শামীম খানকে মাঝে মধ্যেই প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই জের ধরে শনিবার দুপুরে একসময়ের ডাকাত দলের সর্দার কাদের বাহিনী সন্ত্রাসী কায়দায় শামীম খানের ওপর অতর্কিত হামলা করে প্রাণনাশের চেষ্টা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উপজেলার গাঙ্গুটিয়া এলাকায় শনিবার ১২টার দিকে ইউনিয়ন বিএনপির পদযাত্রা শুরু হয়। এ সংবাদ সংগ্রহ করতে ওই এলাকায় যায় দৈনিক যুগান্তর ধামরাই প্রতিনিধি শামীম খানসহ একাধিক সংবাদকর্মী। এ সময় আগেই ওত পেতে থাকা ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত কাদের বাহিনী সংবাদ কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা শামীম খানকে পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙ্গে রক্তাক্ত করে অচেতন করে ফেলে রাখে। সন্ত্রাসীরা শরীরের জামা ছিড়ে পকেটের নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, আইডি কার্ড ও ল্যাপটপ নিয়ে পালিয়ে যায়।
আরও জানা যায়, শামীম খানের অবস্থা বেগতিক দেখে স্থানীয়রা যুগান্তরের সাটুরিয়া প্রতিনিধি সাজাহান সরকারকে টেলিফোনে জানালে তিনি তাকে উদ্ধার করে সাটুরিয়া হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানায়- শরীরের বিভিন্ন স্থানে অনেকগুলো সেলাই দেওয়া হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কা মুক্ত নয়।
এ ঘটনায় শামীম খানের পুত্র দৈনিক কালবেলার ধামরাই প্রতিনিধি ইমরান খান বলেন, গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের কাদের মোল্লার চরিত্র নিয়ে ও অপকর্মের সংবাদ প্রকাশ করাই কাল হয়েছে আব্বার। কাদের মোল্লার নির্দেশে গাঙ্গুটিয়া এলাকার সোলায়মান, আবু বকর, আ. মান্নান, শাকিল শিকদার, সুমন, আবুল বাশার, জব্বার মোলা, করিমসহ অন্তত ১৫-২০ জনে মিলে আমার বাবাকে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন। কাওয়ালী পাড়া ফাড়ি পুলিশের একটি টিম সেখানে উপস্থিত ছিল। নির্বাক পুলিশের সামনে হামলার ঘটনায় আমরা হতাশ। মামলার প্রস্তুতি চলছে। সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে ন্যায় বিচার কামনা করছি।
এ ঘটনায় ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লার সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিকুর রহমান আতিক বলেন, যুগান্তরের সাংবাদিক শামীম খানের উপর বর্বরোচিত হামলা হয়েছে এটা সত্যি তবে পুলিশের উপস্থিতিতে নয় বরং পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।