বিশেষ প্রতিবেদক :
রাজনীতিহীন একটি রাষ্ট্র বিপজ্জনক। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতির এক উজ্জল নক্ষত্র। ইতিহাস প্রমান করে যতবার দেশে অসাংবিধানিক শাসন জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছে, ততবারই আক্রান্ত হয়েছে রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদরা। এসময় রাজনীতিবিদদের চরিত্রহরণের পরিকল্পিত প্রচেষ্টা দেখা গেছে। দেশ ও জাতির স্বার্থেই কাজী জাফরের মত দক্ষ রাজনীতিকদের স্মরণ করতে হবে বার বার।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদের ৬ষ্ট মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে নাগরিক স্মরণ মঞ্চ আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে আলোচকবৃন্দ উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
নাগরিক ন্সরণ মঞ্চের সমন্বয়ক ও এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা’র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বাংলাদেশ লেবার পার্টি চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, মহাসচিব আবদুল্লাহ আল মামুন, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান মিজু, বাংলাদেশ ন্যাপ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, মহানগর যুগ্ম সম্পাদক মো. শামিম ভুইয়া প্রমুখ।
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, অশুভ শক্তি ও তাদের দোষররা সকল সময়ই ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেন, রাজনীতিবিদরা দেশের মঙ্গল চান না। তারা দুর্নীতিবাজ। তারা অশিক্ষিত। অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েমের পক্ষে সবচেয়ে ভালো যুক্তি হলো রাজনীতিবিদদের গালি দেওয়া। সাধারণ মানুষও রাজনীতিবিদদের সমালোচনা সাময়িকভাবে গ্রহণ করে, তারা হাত তালি দেয়। কিন্তু কিছু দিন পরই তাদের মোহভঙ্গ ঘটে। সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে, ভালো হোক মন্দ হোক, রাজনীতিবিদদের কাছে তারা অন্তত তাদের সমস্যার কথা জানতে পারে। তাই অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে রাজনীতির জয় হয়েছে বার বার।
তিনি বলেন, কাজী জাফর আহমেদ ছিলেন সমাজ পরিবর্তনে গণতান্ত্রিক সংগ্রামের আদর্শে উদ্বুদ্ধ জননন্দিত ও আত্মনিবেদিত রাজনৈতিক নেতা ও সংগঠক। দেশের সাম্রাজ্যবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। হার না মানা এই নেতার জীবন ও কর্ম গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
লেবার পার্টি চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী কাজী জাফর আহমেদের অমর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং অর্জনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের সব অর্জনই রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদদের হাত ধরেই। ১৯৫২, ’৬৯, ’৭১, ’৯০ সব রাজনৈতিক বিজয়ের মাধ্যমেই বাংলাদেশ একটা করে মাইলফলক ছুঁয়েছে। এখনো দেশে ওয়ান-ইলেভেনের ভূত সক্রিয়। বিরাজনীতিকরণের চক্রটি এখনো তৎপর। তাদের তৎপরতায় দেশকে আবার বিরাজনীতিকরণের পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কিনা, সে প্রশ্ন উঠতেই পারে?
সভাপতির বক্তব্যে মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, দেশ-জাতি ও গণতন্ত্রের স্বার্থেই কাজী জাফর আহমেদদের স্মরণ করতে হয়। দেশকে রাজনীতি শূণ্য করতে আবারো রাজনৈতিক নেতাদের ‘দুর্নীতিবাজ’ হিসেবে চিত্রিত করারও এক নোংরা, কুৎসিত খেলা দৃশ্যমান। কেউ দুর্নীতির পক্ষে নয়, কেউ যদি দুর্নীতি করে তার অবশ্যই বিচার করা উচিত। কিন্তু বিচার না করে, কুৎসা ছড়ানো রাজনীতিবিরোধী অপশক্তিরই পুরনো খেলা। সেই খেলা আবার নতুন করে শুরু হলো কিনা, সে প্রশ্ন অনেকের মনেই এসেছে।