বগুড়া প্রতিনিধি :
বগুড়ার শাজাহানপুরে গ্রাহকের মোবাইল ব্যাংকিং নম্বর সংগ্রহ করে প্রতারণার অভিযোগে আরিফ খাঁন (২২) ও আমিরুল ইসলাম (২০) নামে দুই তরুণকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) দুপুরে গ্রেফতারদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার আরিফ খাঁন মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার রাজাপুর মধ্যপাড়া গ্রামের আফিল উদ্দিনের ছেলে এবং আমিরুল ইসলাম একই উপজেলার চরচৌগাছি গ্রামের কবির শেখের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শাজাহানপুর উপজেলার দুবলাগাড়ী এলাকায় জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তি বিকাশ, নগদ ও ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করেন। দেড় সপ্তাহ আগে থেকে কিছু গ্রাহক অভিযোগ করছিলেন যে তার দোকান থেকে বিকাশ বা নগদে লেনদেন করার পর অফিসের পরিচয়ে তাদের নম্বরে ফোন করে বলা হচ্ছে, আপনার অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। অ্যাকাউন্টটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। যদি অ্যাকাউন্ট সচল রাখতে চান তাহলে আপনার মোবাইলে পিন (মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পিন) নম্বরটি টাইপ করুন। পিন টাইপ করার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স শূন্য হয়ে যায়। এভাবে অনেক গ্রাহক প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমের সন্দেহ হলে তিনি সর্তক হন এবং প্রতারক চক্রটিকে শনাক্ত করতে চেষ্টা চালান। একপর্যায়ে গ্রেফতার ওই দুই তরুণের ওপর তার সন্দেহ হয়। তারা মাঝেমধ্যেই জাহাঙ্গীরের দোকানে বিকাশ ও নগদে ক্যাশইন-ক্যাশআউট করতেন। লেনদেনকালে উদ্যোক্তা খাতায় নম্বর লেখার সময় তারা লুকিয়ে তাদের মোবাইলে ভিডিও করতেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম তার বন্ধুদের সহযোগিতায় চক্রটিকে ধরার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (৮ মার্চ) উদ্যোক্তা খাতায় তার দুই বন্ধুর মোবাইল নম্বর লিখে রাখেন জাহাঙ্গীর। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই তরুণ এসে বিকাশে আট হাজার টাকা ক্যাশইন করেন। এসময় তারা আগের দিনের মতো উদ্যোক্তা খাতায় লেখা নম্বরগুলো ভিডিও করেন। ওইদিন বিকেলে ওই দুই নম্বরে অফিসের পরিচয়ে ফোন করে তারা প্রতারণার চেষ্টা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর বুধবার (৯ মার্চ) বিকেলে আবার ওই তরুণ এসে লেনদেনকালে ভিডিও করার সময় তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন জাহাঙ্গীর। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদেরকে আটক করে। পরে এ ঘটনায় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গ্রেফতাররা আন্তঃজেলা প্রতারক চক্রের সদস্য। এরা দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। গ্রেফতারদের বাড়ি মাগুরা জেলায় হলেও তারা ১৫ দিন ধরে বগুড়ার তিনমাথা এলাকায় একটি হোটেলে কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকে। সেখান থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে এভাবে প্রতারণা করে আসছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন জব্দ করে প্রতারণার অনেক প্রমাণ পাওয়া গেছে। মামলা দায়ের শেষে গ্রেফতারদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।