বগুড়ার নাগর নদীর বালু ভূমিদস্যুদের দখলে

অপরাধ

বিশেষ প্রতিনিধি(বগুড়া) :
বগুড়ার কাহালু, দুপচাঁচিয়া ও শিবগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত নাগর নদীর বিভিন্ন অংশ প্রভাবশালী বালু ও মাটি ভূমিদস্যুদের দখলে চলে গেছে। এই তিন উপজেলার ৭-৮টি পয়েন্টে শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন ও এস্ক্যাভেটর (খনন) মেশিন দিয়ে নদীর তীর কেটে মাটি ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। এতে আশপাশের গ্রামের বাড়িঘর ও ফসলি জমি ধসে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক ট্রাকে করে মাটি পরিবহণ করায় আশপাশের সড়কগুলোও ভেঙে যাচ্ছে। নদী থেকে বালু উত্তোলন ও তীর কাটা বন্ধে উপজেলা আইন-শৃংখলা কমিটির সভায় বার বার আলোচনা করলেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে গেছে। ভুক্তভোগী জনগণ পরিবেশ বিপর্যয় রক্ষায় প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নের ভুগোইল কালিতলা হিন্দুপাড়ায় প্রভাবশালী আবদুল জলিল, ইনতেজার, বিপ্লব, শিবগঞ্জ উপজেলার ছাতুয়ারপাড়া গ্রামের রুবেল, রফিকুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমান নাগর শ্যালো মেশিন বসিয়ে নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন ও এস্ক্যাভেটর মেশিন দিয়ে নদীর পাড় থেকে মাটি কাটছে। এছাড়া কাহালু উপজেলার বীরকেদার ইউনিয়নের বকুলতলা গ্রামের চকবন্যা, পাঁচতিতা ও কোলার পাঁথার এলাকায় বেশ কয়েকটি পয়েন্টে দীর্ঘদিন ধরে শ্যালো মেশিন বসিয়ে কাহালুর বীরকেদার ফকিরপাড়ার বায়েজিদ, শাহজাহান আলী মেম্বার, কালাই ইউনিয়নের ঘোনপাড়া গ্রামের মোকাব্বর, সাইফুল ইসলাম হাসু, আপেল, জাইদুল বীরকেদার মিয়াপাড়ার মেজবাহ, আঠালিয়া গ্রামের সুইট এবং দুপচাঁচিয়ার আবু বক্কর, জিয়ারুল, সাগর, রতন, রুবেল প্রমুখ বালু উত্তোলন ও স্কেভেটর মেশিন দিয়ে নদী তীর থেকে মাটি খনন করছে। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক ট্রাকে করে মাটি ও বালু নিয়ে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। ট্রাকগুলো যাতায়াত করায় সড়কগুলো ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে। তারা বালু ও মাটি বিক্রি করে লাভবান হলেও সরকারের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি নদীর তীরের গ্রামগুলোতে ভুমিধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে বালু উত্তোলনকারী ও মাটি কাটার সঙ্গে জড়িতরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়নি। তারা শুধু বলে, সবাইকে ম্যানেজ করেই তারা বালু ও মাটির ব্যবসা করছে। এ প্রসঙ্গে কাহালু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, বালু উত্তোলন ও মাটি কাটা বন্ধে অনেকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়েছে। কয়েকদিন আগেও তিন জনকে জেলে নেওয়াসহ দুটি ট্রাক ও একটি এস্ক্যাভেটর মেশিন জব্দ করা হয়েছে। বগুড়ার ভ্রাম্যমাণ আদালতে ভুগোইল কালিতলা এলাকায় দুটি শ্যালো মেশিন জব্দ করে জরিমানা করা হয়েছে। এরপরও কয়েকটি পয়েন্টে গোপনে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটা চলছে। অভিযানের খবর পেয়ে উত্তোলনকারীরা মেশিন নিয়ে আত্মগোপন করেছে। তিনি আরও জানান,‘বিকল্প উপায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে নদী থেকে বালু উত্তোলন ও মেশিন দিয়ে তীর কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.