মুক্তারুজ্জামান :
বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার রেলওয়ে জংশন স্টেশনের পশ্চিম পাশে রেলের জায়গায় অনুমোদন না নিয়ে ভবন নির্মাণ করার অভিযোগে জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম মাদরাসার মূল গেটে তালা দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল পাকশী বিভাগের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নুরুজ্জামান গত রবিবার বিকাল ৩টার দিকে তালা ঝুলিয়ে দেন। অবশেষে ঘটনার ২২ ঘন্টা পর সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মাদরাসাটির তালা খুলে দেয়া হয়েছে।
জানাগেছে, ১৯৭৪ সালে সান্তাহার জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম মাদরাসা ও এতিমখানাটি স্থানিয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের সহযোগিতায় রেলওয়ে জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ৬০০ শিক্ষার্থীদের পাঠদানের পাশাপাশি ধীরে ধীরে মাদরাসাটি সম্প্রসারণ করা হয়। সেই সাথে রেল কৃর্তপক্ষের কাছে লিজ নেয়ার জন্যও আবেদন করা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত মাদরাসাটির লিজ পাওয়া যায়নি। এমন পরিস্থিতিতিতে গত রোববার বিকেল ৩টার দিকে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল পাকশী বিভাগের ভুসম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নুরুজ্জামান নোটিশ ছাড়াই আকষ্মিকভাবে ওই মাদরাসাটি ঘুরে দেখে গেটে তালা ঝুঁলিয়ে দেন।
ওই দিন বিকেল ৪টায় মাদরাসা কমিটির সভাপতি ও সাবেক গভর্ণর আলহাজ্ব কছিম উদ্দীন আহমেদ, ডাক্তার হামিদুর রহমান রানাসহ অন্যান্য সদস্যরা সান্তাহার রেলওয়ে রেস্ট হাউজে রেলওয়ের উপ-সচিব সাইদুর রশিদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি বিকেল ৫টায় মূল গেটের তালাখুলে দেয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু তারপর থেকে আর তালাটি খুলে দেয়া হয়নি। এরপর সোমবার সকালে মাদরাসা প্রাঙ্গনে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক আহম্মেদ আলী সরদার স্বপনসহ কমিটির অন্যান সদস্য ও মাদরাসা সংশ্লীষ্টদের নিয়ে সান্তাহার পৌর মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু, বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আশরাফুল ইসলাম মন্টু, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম চম্পা, কাউন্সিলর আব্দুল কুদ্দুসসহ স্থানিয় নেত্ববৃন্দরা আলোচনায় বসেন।
সেই বৈঠক থেকে ভুসম্পত্তি কর্মকর্তা নুরুজ্জামানের সাথে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম চম্পা মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি মাদরাসাটির তালা খুলে দিতে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। এরপর বেলা সাড়ে ১২টায় সান্তাহার রেলওয়ের প্রশাসনের উপস্থিতিতে ভুসম্পত্তি বিভাগের লোকজন এসে মূলগেটে করা তালা খুলে দেয়।
মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মাহাবুবুল ইসলাম জানান, মাদরাসার পাশে পুকুর ও বেশ কিছু দোকান রয়েছে। সেগুলো লিজ নিয়ে নিয়মিত খাজনা দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু মাদরাসাটি লিজ নেয়ার জন্য বহুবার ঘোরাঘুরি করেও লিজ পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত গত দুই বছর আগে রেলমন্ত্রনালয়ে আবেদন করা হয়। রেলমন্ত্রী, সচিবসহ সংশ্লীষ্ট কর্মকর্তারা সেটি গ্রহণ করে সুপারিশ করে পাঠান। কয়েকটি দপ্তর ঘুরে ফাইলটি বর্তমানে পাকশী বিভাগের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তার কার্যালয়ে দেড় বছর ধরে আটকে রয়েছে। ফলে আজ পর্যন্ত সেই মাদরাসাটির লিজ অনুমোদন হয়নি।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের পাকশী বিভাগের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নুরুজ্জামানের মুঠোফোনে ফোন করলে তিনি রিসিভ না কারায় তার মন্তব্য পাওয়া যায় নি।