মতিন খন্দকার টিটু :
বগুড়ার নুনগোলা ইউনিয়নে বিয়ের ৩ মাসের মাথায় স্বামীর ঘরের সিলিং এর সাথে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে শরিফা আক্তার (১৯) নামে এক নববধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এলাকাবাসী জানায়, কাহালু ভুগইল পাইকড় ইউনিয়নের কালিতলা গ্রামের আবু সামাদের কন্যা শরিফাকে ৩ মাস আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করেন হাজরাদিঘী উত্তারপাড়া গ্রামের শাহ আলমের পুত্র রাকিব হাসান। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে শরিফার ওপর নির্যাতন চালাতো যৌতুক লোভী স্বামী রাকিব।
নিহতের বাবা, মা জানান, বিয়ের পর থেকে ৪০হাজার টাকা যৌতুকের জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দেন শরিফাকে। সেই টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে শরিফাকে বিভিন্ন সময়ে গালাগাল ও তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতেন স্বামী রাকিব ও তার পরিবারের লোকজন। এরই মধ্যে মেয়ের নির্যাতন সইতে না পেরে ১০ হাজার টাকা জামাই রাকিব হাসানকে দিয়ে বাকি ৩০হাজার টাকা ৩মাস পর দেওয়ার সময় নিয়ে ছিলেন শরিফার পরিবার।
নিহত শরিফার মা, মেয়ের লাশের পাশে আহাজারি করে বলেন, সকালে তার জামাই ৩০ হাজার টাকা আনতে বলেন, সে মাদকের ব্যবসা করবে যদি টাকা সময় মত না আসে তাহলে তার মেয়েকে একবারে নিয়ে যেতে বলেন। শরিফার বাবা মা জানান, যৌতুকের দাবিকৃত ৩০হাজার টাকা সময় মত না দিতে পারায় স্বামীর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে তার মেয়েকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। স্বামীর বাড়ির বিভিন্ন বঞ্চনা ও লাঞ্ছনার পরও ৩ মাস সংসার করেছেন শরিফা। তাকে শারীরিক ও মানিসকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, যার কারণে বিয়ের ৩ মাস হতে না হতেই তাদের মেয়েকে লাশ হতে হলো। প্রথমে ঘরে সিলিং ফ্যানের রডের সাথে ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত লাশ পরিবাররের লোকজন উদ্ধার করে বারান্দায় রেখে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে বগুড়া সদর থানার তদন্ত ইন্সপেক্টর মুক্তার ও এসআই রেজাউল করিম সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সুরুতহাল রিপোর্ট শেষে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এঘটনায় পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে জানা যাবে আসলে এটি হত্যা না আত্মহত্যা। তবুও নিহতের শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে আটক করতে পুলিশের অভিযান চলছে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছিল।