মতিন খন্দকার টিটু :
জেলা পুলিশ বগুড়ার টিম সোনাতলা নৃশংস বীভৎস অচিন্তনীয় এক ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে আসামি গ্রেফতার করেছে। ২০১৯ সালের পহেলা জুলাই সোনাতলা থানায় একটা হারানো জিডি হয়েছিল(জিডি নং ২৫)। সেখানে জুন মাসের ১৫ তারিখ থেকে সোনাতলা সদর ইউনিয়নের রানিরপাড়া গ্রামের পেশায় কৃষক রফিকুল ইসলাম (৪৭) নামক এক ব্যক্তি নিখোঁজ আছে মর্মে জানানো হয়েছিল। জিডিটি করেছিলেন নিখোঁজ ব্যক্তির ভাই শফিকুল যদিও তার স্ত্রী এবং তিনটি সন্তান ছিল। সোনাতলা থানার পাশে প্রবাহিত যমুনা নদী দিয়ে গত একবছরে অনেক পানি গড়িয়েছে কিন্তু হাল ছাড়েননি টিম সোনাতলা, সার্কেল এএসপি কুদরত ই খুদা শুভ লেগে ছিলেন,লেগে ছিলেন ইন্সপেক্টর তদন্ত জাহিদ।
ঘটনার প্রায় একবছর পর গতরাতে তেকানি চুকাইনগরের শাকিল (২২) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া গেলে আটক করা হয় নিখোঁজ ব্যক্তির স্ত্রী রেহানা এবং ছেলে জসিমকে। এরপর স্ত্রীর গোপন প্রেমিক মুহিদুলকে। মুহিদুল রফিকের প্রতিবেশী।নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে তারা একপর্যায়ে স্বীকার করে যে মুহিদুল, রফিকুলের বউ রেহানা,ছেলে জসিম এবং রেহানার বোনের ছেলে শাকিল মিলে রফিকুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, তার লাশ বস্তায় ভরে বাড়ি থেকে প্রায় এককিলোমিটার দূরে বগুড়া সোনাতলা রেললাইনের পাশে প্রায় তিনফুট গর্ত করে পুঁতে রেখেছিল।
খুনের কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, পরকীয়া প্রেমের পথের বাধা সরাতেই রফিকুলকে মেরে ফেলার প্ল্যান করে রেহানা এবং মুহিদুল। ছেলেকে বাবার নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মানসিক ব্ল্যাকমেইল করে পক্ষে নিয়ে এসে পিতৃহত্যার মতো ঘৃণ্য কাজে জড়িত করে মা রেহানা। ঘটনাচক্রে শাকিল জড়িয়ে যায়। ঘটনার দিন মুহিদুল এবং জসিম ঘুমের বড়ি এনে রাতের খাবারের সাথে মিশিয়ে রফিকুলকে খাইয়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করিয়ে গলা টিপে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে চারজনই সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। এরপর শাকিল, মুহিদুল এবং জসিম লাশ ঘাড়ে করে রেললাইনের পাশে নিয়ে পুঁতে রাখে।
আজ পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম বার স্যার এঁর উপস্থিতিতে পানির মধ্য থেকে গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় আশেপাশের কয়েকগ্রামের কয়েক হাজার লোক জমায়েত হয়েছিল। খবর প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক ভাইয়েরাও সেখানে চলে আসেন।