আবু সাঈদ-বগুড়া থেকে
সময়ে শহরের বিভিন্ন সড়কে হিজড়াদের উপস্থিতি বেড়েছে। তারা ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে পড়া যানবাহনের আরোহীদের কাছ থেকে একপ্রকার জোর করেই টাকা আদায় করে। বর্তমানে মহামারী করোনাভাইরাস এর সময়ে যানবাহন চলাচল সীমিত থাকলেও প্রয়োজনীয় কাজে শহরে আসা ব্যক্তিদেরকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে টাকা আদায় করছে তারা। হিজড়াদের টাকা তোলা নতুন কিছু নয়। আগে মানুষ যা দিত, তা নিয়েই খুশি থাকত হিজড়ারা। কিন্তু ইদানীং তাদের আচরণ বদলে গেছে। রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, দোকানপাট যেখানে-সেখানে টাকার জন্য মানুষকে নাজেহাল করছে তারা। হিজড়াদের কেউ কেউ অভিযোগ করছে, শহরে অনেক ‘নকল’ হিজড়া আছে, যাদের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিনা পরিশ্রমে অর্থ উপার্জন করা। কেউ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলেই গায়ে হাত দিচ্ছিল, আজেবাজে কথা বলছিল। তারা বাস, সিএনজি ,অটোরিক্সা সহ অন্যান্য যানবাহন থেকে নেমে যেতেই একাধিক যাত্রী বললেন, হিজড়াদের টাকা আদায় এখন রীতিমতো উৎপাতে পরিণত হয়েছে। হিজড়াদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারের এখনই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০০৪ সালে একটি জরিপ করেছিল। ২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার হিজড়াদের একটি পৃথক লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। হিজড়ারা বলে, গ্রামাঞ্চলে কিংবা জেলা শহরগুলোয় হিজড়াদের একঘরে হয়ে থাকতে হয়। সে কারণে তারা শহরে চলে আসে। সদ্য জন্ম নেওয়া কোনো শিশুর খবর পেলেই বাসাবাড়িতে চলে আসছে হিজড়ারা। তাদের দাবির পরিমাণ অর্থ না দিলে বিশৃঙ্খলা শুরু করে।
তবে বগুড়া জেলা হিজড়া সমিতির সভাপতি সুমি বলেন, টাকা না তুলে তারা নিরুপায়। তাদের আয়-রোজগারের কোনো সুযোগ নেই। বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছে। মহামারী করোনা ভাইরাস এর সময় বগুড়া জেলা ট্রাক মালিক শ্রমিক সভাপতি আব্দুল মান্নান আকন্দ ১০ কেজি করে চাল দেন এবং বগুড়া সদর আসনের সংসদ সদস্য সিরাজ ১০ কেজি চাল সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করেন যা অনেক আগেই ফুরিয়ে গেছে আর কেহ তাদেরকে কোন সহযোগিতা করছে না।
এ ব্যাপারে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সানাউল্লাহর সাথে কথা বললে তিনি জানান, রমজান মাসে সুমির নেতৃত্বে একদম হিজরা সমাজসেবা কার্যালয়ে এসে তাদের বরাদ্দের টাকার দাবি করে করোনাভাইরাস এর সময় ট্রেনিং না করে টাকা দেওয়া যাবে না বললে তারা কার্যালয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তবে যারা এসেছিল তারা সবাই প্রকৃত হিজড়া নয়। প্রকৃত হিজড়া ছাড়া আমরা ট্রেনিং করাতে পারি না। চলতি বছরের মার্চ মাসে সিভিল সার্জন ৬১ জন হিজড়ার শারীরিক পরীক্ষা করেন তার মধ্যে মাত্র ৯ জন প্রকৃত হিজরা বাকিগুলো সবাই হিজরার ভান করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। প্রকৃত হিজরা হলো ১. সাহিন ২. লক্ষ্মী হিজড়া ৩. মোহাম্মদ প্রামানিক ৪. মনিকা ৫. সুমি ৬. সাজ্জাদ হোসেন শামীম ৭. বিন্দু হিজরা ৮. মোজাফফর ও ৯. আবু হেনা দুলালী। করোনাভাইরাস স্বাভাবিক হলে প্রকৃত হিজড়াদের ট্রেনিং করানো হবে।