Doinik Bangla Khobor

বগুড়া ধুনটে বিয়ের দাবিতে ৫দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন প্রেমিকার

মতিন খন্দকার টিটু :
বগুড়ার ধুনটে বিয়ের দাবীতে প্রেমিকের বাড়ীতে অনশন করছে রুমা আক্তার (২৪) নামের এক প্রেমিকা। অনশনকারী রুমা আক্তার সিরাজগঞ্জ থানার কুরালিয়া গ্রামের মৃত. হযরত আলী কন্যা। ঘটনাটি ঘটছে উপজেলার চালাপাড়া গ্রামে। এ ঘটনায় প্রেমিক আব্দুল্লাহ মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে পালাতক রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
সরে জমিনে জানা যায়, উপজেলার চালাপাড়া গ্রামের আবুল কাসেম মুন্সির ছেলে আব্দুল্লাহ ডিজিটাল পদ্ধিতিতে কোরআন শিক্ষা দেন। ৩বছর পূর্বে আব্দুল্লাহ কোরআন শিক্ষা দেওয়ার জন্য সিরাজগঞ্জ জেলার কুরালিয়া গ্রামে যান এবং সেখানে কোর আন শিক্ষার কাজ শুরু করেন। সেখান রুমা আক্তারের মা আব্দুল্লাহর নিকট কোরআন শিক্ষা নিতে থাকেন। তারপর থেকেই রুমা আক্তারের পরিচয় হয় আব্দুল্লাহর সাথে। মোবাইল নাম্বার আদান প্রদান হয় তাদের। মোবাইল ফোনে কথা বলা আবার মাঝে মধ্যে রুমা আক্তাদের বাড়ীতে যেত আব্দুল্লাহ। আব্দুল্লাহর কথা বার্তায় প্রেমে পড়ে যায় রুমা আক্তার। এরপর থেকে শুরু হয় তাদের গভীর প্রেম। এক পর্যায়ে রুমা আক্তারকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে নিয়ে ঢাকা যায় আব্দুল্লাহ। তারা ২ জনে ঢাকা পোশাক কারখানায় কাজ করতে থাকে। সেখানে আব্দুল্লাহ প্রতি মাসে ৩/৪ বার রুমার বাসায় এসে রাত্রি যাপন করতো।
অনশনকারী রুমা আক্তার জানান, আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আব্দুল্লাহ আমার সাথে সর্ম্পক করে। তারপরে সে আমাকে ঢাকাতে নিয়ে যায় এবং পোষাক কারখানায় তার কথা মতে চাকুরি নেই। সেও অন্য পোষাক কারখানায় লাইনমেন হিসাবে চাকুরী নেয়। সে আমাকে হাদিস কোরআন বেশি জানে দেখে আমাকে বলে মুন্সি বা কাজী ছাড়া কি বিয়ে হয় না অবশ্যই হয়। ঢাকাতে যাওয়ার পর থেকে সে আমাকে স্ত্রী রুপে ভোগ করেছে। আমার ৩ বছরের র্গামেন্টের বেতন সে নিয়েছে। মাঝে মধ্যে বলতো যে গ্রামের বাড়ীতে ঘর দিতে হবে টাকা লাগবে টাকা দাও আমি আমার বাড়ী থেকে টাকা এনে দিয়েছি। আব্দুল্লাহ আমার থেকে সর্বমোট সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার বেশি নিয়েছে। কিন্তু শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ করার কথা বললে সে বলতো যে পরে যে কোন সময় আমরা কাজী ডেকে আবার পুনরায় বিয়ে করবো। আমি সরল বিশ্বাসে তাকে ভালোবেসে আমার সমস্ত কিছু দিয়েছি। তাকে শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ করার চাপ দিলে সে আমাকে বলতো যে রোজার ঈদে বাড়ীতে গিয়ে কাজী ডেকে বিবাহ করবো। ইতি মধ্যে করোনা ভাইরাসের কারনে আমি যে পোশাক কারখানায় কাজ করতাম সেটা বন্ধ হয়ে যায়। এ কথা শোনার পর থেকেই আব্দুল্লাহ আমাকে এড়িয়ে চলতে থাকে। সে সর্বশেষ এপ্রিল মাসের ৩ তারিখে রাত্রে আমার কাছে যায়। সেখানেই রাত্রি যাপন করে সকালে আমাকে বলে যে তোমার তো বেতন দিবো ১২ তারিখে আমি বাড়িতে গেলাম তোমার বেতন উঠলে আমি তারপরে এসে তোমাকে নিয়ে যাবো। তারপর থেকে তাকে আর ফোন দিলে সে ঠিক মতো ফোন রিসিভ করে না। এরপরে আমি বেতন পাইলে ১৫ তারিখে আমার গ্রামের বাড়িতে চলে আসি। তারপর থেকে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায় না। কিছু দিন পূর্বে সে একবার ফোন রিসিভ করলে তাকে আমি বলি বাড়িতে চলে আচ্ছি সে আমাকে বলে ঢাকাতে আবার কবে যাইবা। আমি বলি আমি আর ঢাকাতে কোন দিন যাবো না সংসার করবো এ কথা শুনার পরই সে ফোনে কেটে দেয়। এরপরে ফোন দিলো আর সে ফোন রিসিভ করে না কেটে দেয়। আমি আমার ভালোবাসার অধিকার নিয়ে গত ২৪/০৫/২০২০ইং আব্দুল্লাহর বাড়ীতে এসেছি। সে আমাকে দেখার পরেই বাড়ী থেকে পালিয়ে যায় এবং মোবাইল ফোন বন্ধ করে রেখেছে। আব্দুল্লাহর ভগ্নিপতি মজিদ মল্লিক আমাকে এ বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার অশ্লীল ভাষায় গালি গালাজ করেছে এমনি মারমুখি আচরন করেছে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, আব্দুল্লাহ আসলেই মেয়ে লোভী। এর আগেও অনেক মেয়েকে বিয়ের লোভ দেখিয়ে ত্ােদর কাছ থেকে টাকা নিয়েছে এবং তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। এনিয়ে বেশ কয়েক বার সালিশ বৈঠক হয়েছে। তবে আব্দুল্লাহ গ্রামের কোন মুরুব্বী বা মাতুব্বরকে তোয়াক্কা করে না। তার ভগ্নিপতি একই গ্রামে মৃত. মোখলেস মল্লিকের ছেলে মজিদ মল্লিকের ছত্র ছায়ায় থাকে। এবারেও তাকে পালিয়ে যেতে মজিদ মল্লিক সহযোগিতা করেছে। তারা আরো জানান, ইতি পূর্বে মজিদ মল্লিক আব্দুল্লাহকে ২ টি বউ ছেড়ে দিতে সহযোগিতা করেছে। এবং ২য় পক্ষের ১টি কন্যা সন্তানও রয়েছে আব্দুল্লাহর। এগুলো গোপন রেখে সে আবার নতুন করে রুমার সাথে জড়িয়ে পড়ে।
ধুনট সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবুল কাসেম জানান, এই বিষয়টি নিয়ে আমি ও আব্দুল্লাদের সমাজের মুরুব্বী প্রভাষক রানাউল ইসলাম বিষয়টা মিমাংসা করার জন্য আব্দুল্লাহর পরিবারের নিকট বার বার গিয়েছি কিন্তু তাদের কোন প্রতিক্রিয়া পাই নাই।
ধুনট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাল মিয়া জানান, এ বিষয়টি আমার জানা ছিলো না বা আমাকে কেউ অবগত করে নাই।
ধুনট থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা জানান, বিষয়টি আমার জানা আছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।