হালিম সৈকত, কুমিল্লা :
রাজনীতি এক রহস্যময় অভিযাত্রা। রাজনীতির দাঁড়িপাল্লায় কে কখন বড় হয়, হারিয়ে যায়, ফিরে আসে বলা কঠিন। রাজনীতিতে উত্থান পতন, ভাঙা - গড়া আছেই। এতে ধৈর্য হারালে চলবে না। যারা ধৈর্য হারায় তারা হেরে যায়। যারা টিকে থাকে তাদের আদর্শের পরিবর্তন হয় না। সে আদর্শ হলো মাটি ও মানুষের কাছে থাকা। বিগত দিনে মোঃ রাজা মিয়া সওদাগর
সে আদর্শের স্বাক্ষর রেখেছেন বলে অনেকেই মনে করেন। কথা হয় তার সাথে রাজনীতিতে তার জড়িত হওয়া থেকে এখনকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য। বীর চট্টলার বীর সৈনিক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দুই বারের সাবেক সফল মেয়র মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সাথে চলতে গিয়েই তিনি আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। তিনি চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে মহিউদ্দিন চৌধুরী এজেন্টের দায়িত্বও পালন করেন। তিনি বলেন, তখন থেকেই আমি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়ি। চট্টগ্রামে আমি লোহার ব্যবসা করতাম। এক সময় ব্যবসা ছেড়ে এলাকায় চলে আসি। একদিন শুনলাম কুমিল্লার নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে সাবেক ডেপুটি স্পিকার অধ্যাপক আলী আশরাফ, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম আঃ আউয়াল সরকার, বঙ্গবন্ধু পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি মরহুম শফিউল বশর ভান্ডারী, সাংবাদিক শাহজাহানসহ হোমনায় একটি মিটিংয়ে যাচ্ছেন। আমি কুপি বাতি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম নেতৃবৃন্দের সাথে দেখা করার জন্য। অবশেষে নেতৃবৃন্দ আসলেন কথা হলো। তাঁরা আমাকে দায়িত্ব দিলেন, কড়িকান্দি ইউনিয়ন কমিটি করার জন্য। তখন আমাদের তিতাস উপজেলা হয়নি। আমি সাধারণ সম্পাদক ও আলীরগাঁও এর বারেক ভূইয়াকে সভাপতি করে কমিটি করি। জেলার নেতৃবৃন্দ কড়িকান্দি এসে কমিটি গঠন করে দেন। সে সময় যুবলীগের কমিটিও করা হয়। মুন্সি মুজিবুর রহমান ও আমির হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, ছাত্রলীগেরও প্রথম কমিটি করা হয় সে দিন।
সেই সভায় এসেছিলেন অধ্যাপক বিমল গোপ, বাদল রায়, আবুল কাশেম সরকার, লিল মিয়া সরকার ও
জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন আ'লীগ নেতা গোলাম মাওলা সরকারসহ আরও অনেকে।
তখন আমাকে তারা দাউদকান্দি উপজলা আ'লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য নির্বাচিত করেন। এরপর আমি কুমিল্লা উত্তর জেলা কৃষকলীগের সহ সভাপতি ছিলাম। ১৯৯৬ সালে আমি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করি হাঁস মার্কা নিয়ে। ২০১৩ সালে আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করি।
তিতাস উপজেলা তাঁতীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলাম। বর্তমানে আমি তিতাস উপজেলা আ'লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ কুমিল্লা উত্তর জেলা শাখার সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি।
তিনি আবেগ ভরা কন্ঠে আরও বলেন, আমার সৌভাগ্য হয়েছিল ৭ মার্চে ঢাকার রেইসকোর্স ময়দানে সরাসরি বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণ শোনার ও দেখার।
তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, ঠিক দিন তারিখ মনে নেই একদিন জননেত্রী শেখ হাসিনা একটি জনসভায় বন্দরামপুর স্টেশন দিয়ে হোমনা যাবেন। আমি যথারীতি এলাকার সকল মুরব্বিদের নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকি। কিন্তু পথে অনেক দেরী হয়ে যাওয়ায় জননেত্রীকে নামতে নিষেধ করলেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ফোর্স। পাশে কবরস্থান থাকায় তারা রিস্ক মনে করলেন। আমি আবদার করায় নেত্রী নিজেই নেমে সকলের সাথে কুশল বিনিময় করলেন। এই হলো আমার নেত্রী।
কোন আক্ষেপ কিংবা দুঃখ আছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জীবনে কিছুই পাইনি। তাতে কোন দুঃখ নেই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে বুকে লালন করে শেষ নিঃশ্বাসটুকু ত্যাগ করতে চাই। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য তনয়া যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তা দেখে মনে আশার সঞ্চার হয়েছে। আল্লাহ তাঁকে হাজার বছর বাঁচিয়ে রাখুক। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।