অনলাইন ডেস্ক :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। তবে চাহিদা বিবেচনায় অতিরিক্ত আরও ৩০০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছর এবং আগামী অর্থবছরে মোট ৪০০ কোটি টাকা খরচ হবে- এমন বিবেচনায় নতুন করে অর্থ বরাদ্দ চেয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপ-সচিব মো. রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অর্থ সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। এখনও অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে বরাদ্দের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
এতে আরও বলা হয়, গত ১৯ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি কর্তৃক চাওয়া ওই অর্থ সংশ্লিষ্ট খাতে বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী যথাযথভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে এ সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি কর্তৃক চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দের অতিরিক্ত ১০০ কোটি টাকা এবং আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রাক্কলিত বাজেটে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনে এক অর্থবছরের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ দুই অর্থবছরের জন্য ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে। তাদের চাহিদা বিবেচনা করে বরাদ্দ দেয়া হবে।
২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মগ্রহণের শতবছর পূর্ণ হবে। বাংলাদেশ ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর এ জন্মশতবর্ষ উদযাপনকরবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। একইসঙ্গে হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটিও।
ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস গত ১০ জানুয়ারি বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। মুজিববর্ষ উদযাপনে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, বঙ্গবন্ধুর নামে আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তন, ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ এবং হাতে হাত রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতিকৃতি গড়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়ার আয়োজন। থাকছে কনসার্টসহ নানা আনন্দ আয়োজন ও রক্তদানসহ সেবাধর্মী কর্মসূচি। প্রকাশ করা হবে জন্মশতবার্ষিকীর বিভিন্ন স্যুভেনির ও স্মারক বক্তৃতা।
১৭ মার্চ মূল অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং বঙ্গবন্ধুর আমলের রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্বদের। আমন্ত্রিতদের মধ্যে আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন প্রমুখ।
জানা গেছে, জন্মশতবার্ষিকীর মূল আয়োজন শুরু হবে ১৭ মার্চ সূর্যোদয়ের সময়। সকালে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান। এদিন ঢাকা ও গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় একইসঙ্গে অনুষ্ঠান শুরু হবে। সকালে টুঙ্গিপাড়ায় থাকবে জাতীয় শিশু দিবসের নানা আয়োজন। বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে মূল অনুষ্ঠান। সারাদেশেই এদিন আয়োজন করা হবে আনন্দ র্যালির। সাজানো হবে গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনা ও সড়কদ্বীপ। এছাড়া হবে দেশি-বিদেশি শিল্পীদের সমন্বয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।