রিয়েল তন্ময় :
মহান মুক্তিযুদ্ধে বর্বর পাক হানাদার বাহিনী দ্বারা সম্ভ্রম হারানো বীরাঙ্গনাদের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে সিনেমা ‘বীরাঙ্গনা ৭১’। প্রথমবারের মতো মুক্তিযুদ্ধের গল্প নিয়ে নির্মিত এই চলচ্চিত্রে একসঙ্গে অভিনয় করছেন জনপ্রিয় নাট্যাভিনেতা শাহেদ শরীফ খান ও দর্শকপ্রিয় চিত্রনায়িকা শিরিন শিলা। সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন এম সাখাওয়াৎ হোসেন। সিনেমার সংলাপ ও চিত্রনাট্য রচনা করেছেন পরিচালক নিজেই। চলতি বছরের শেষ সিনেমা হিসেবে সিনেমাটি ৩০ ডিসেম্বর (শুক্রবার) প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে। মুক্তি সামনে রেখে বুধবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে চলচ্চিত্র পুরস্কার সংশ্লিষ্টরা। এসময় সিনেমার কলাকুশলীরা উপস্থিত ছিলেন।
সিনেমার অংশ হতে পারে আনন্দিত অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী, নৃত্য পরিচালক, মডেল মুনমুন আহমেদ। বক্তব্য তিনি বলেন, বিজয়ের মাসে সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের এই সিনেমাটিতে যুক্ত থাকতে পেরে ভালো লাগছে। মুক্তিযুদ্ধের কিছুর সাথে যুক্ত থাকতে পারা সৌভাগ্যের। এই সময়ে এই ধরনের সিনেমা নতুন প্রজন্মের সবারই দেখা উচিত। অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা নির্মাণে আগ্রহী হয় না দর্শক দেখবে না বলে। তবে প্রযোজক-পরিচালক চ্যালেঞ্জং নিয়ে সিনেমাটি নির্মাণে এগিয়ে এসেছে।
বাংলাদেশের মঞ্চনাটকের আলোচিত অভিনেতা, আলোকিত ব্যক্তিত্ব ঝুনা চৌধুরী। পাশাপাশি টিভি ও সিনেমারও একজন সমাদৃত অভিনেতা তিনি। এই অভিনেতা বলেন, অনেক চড়াই উতরাই পার করে আমাদের চলচ্চিত্রের নবজাগরণ হয়েছে। এখন অনেক ভালো ভালো সিনেমা নির্মিত হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা আমাদের এখানে তেমন একটা নির্মাণ হয় না। যেগুলো হয় সেভাবে অর্থ উঠে আসে না। মুক্তিযুদ্ধের এই সিনেমা নির্মাণে এগিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ। আমাদের চলচ্চিত্র আমাদেরই এগিয়ে নিতে হবে। মূল ধারার সিনেমা এগিয়ে নিতে হবে৷ সবাই সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে দেখবেন।
শিরিন শিলা বলেন, এটা আমার পরম সৌভাগ্য যে একজন বীরাঙ্গনার ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছি। এই সিনেমার কাজ শুরু হয়েছিল বছরের শুরুর দিকে। বেশ ভালোভাবেই কাজটি নির্মাতা শেষ করেছেন। চলতি মাসের শেষপ্রান্তে মুক্তি পাচ্ছে এটি। চলতি বছরে এটাই আমার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম সিনেমা। বীরাঙ্গনা চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার জন্য আমি অনেক কষ্ট করেছি।
অভিনেতা খলিলুর রহমান কাদেরী বলেন, আমি ৭১ দেখেছি। তখন বয়স ছিল ১২ বছর। তখনকার পাক সেনাদের অমানবিক নির্যাতন দেখেছি। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে ততদিন মুক্তিযুদ্ধের নিয়ে সিনেমা হবে আশা করি। সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে দেখার অনুরোধ করছি৷
অতিথি হয়ে বরেণ্য অভিনেতা ও নির্মাতা কাজী হায়াৎ বলেন, এই বিজয়ের অর্জনে যা ঘটেছিল তার প্রধান ছিল নারীদের সম্মান। সেই বীরাঙ্গনা নিয়ে এই সিনেমা। এইসব সিনেমা নির্মাণ করার জন্য খুব কম লগ্নিকারক থাকে। সাধারণত মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা অনুদানে নির্মিত হয়। তবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সিনেমাটি নির্মাণ করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
অভিনেতা প্রাণ রায় বলেন, মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, ছোটবেলায়ও তেমন জানতে পারিনি। এসব চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমরা জানতে পারব। খুবই ইমোশনাল একটা সিনেমা এটি। অনেক শীতের মধ্যে শুটিং করতে হয়েছে। সিনেমার বাজেটও বেশি ছিল না। তারপরও এর সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করেছি।
সিনেমাতে আরও অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, ঝুনা চৌধুরী, খলিলুর রহমান কাদেরী, সুমনা সোমা, ইমতু রাতিশ, মৌরি মাহাদি, প্রাণ রায়, বড়দা মিঠু, আশরাফ কবির, আহেমদ সাব্বির রোমিও প্রমুখ