বিশেষ প্রতিবেদক :
ধুমধামে প্রবাসী বাংলাদেশি রাকিব হোসেন শুভ ও জার্মান কনে আলিসার বৌভাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১১ মার্চ) বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের উলাল বাটনা গ্রামে রাকিবের বাড়িতে প্রায় তিন হাজার অতিথি নিয়ে বৌভাতের এ অনুষ্ঠান হয়।
রাকিব হাসান শুভ বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের উলাল বাটনা গ্রামের শহীদুল ইসলামের ছেলে। শহীদুল ইসলাম চরবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে রাকিব বড়।
শহীদুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালের ১৫ মার্চ জার্মানে রাকিব ও আলিসা ভালোবেসে বিয়ে করেন। বিয়েতে আমাদের এবং আলিসার পরিবারের সম্মতি ছিল। সেই বিয়েতে মেয়েপক্ষের অভিভাবক ও স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। তবে প্রবাসের সেই বিয়েতে অংশ নিতে পারেননি আমাদের পক্ষের লোকজন। বিয়েতে বরপক্ষের হয়ে শুধু আমি যেতে পেরেছি। বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই নববধূকে সঙ্গে নিয়ে দেশে আসার কথা ছিল রাকিবের। বাড়ি আসলে ধুমধাম করে বৌভাত করার করার কথা ছিল। ভেবে রেখেছিলাম বরিশালের বাড়িতে আসলে আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিমন্ত্রণ করে বড় অনুষ্ঠান করবো। কিন্তু তখন বাধ সাধে করোনা।
তিনি বলেন, বিয়ের পর থেকে ছেলের বউকে দেখার জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিলেন রাকিবের মা নাসরিন জাহান মুন্নী। আমার মেয়ে সাদিয়াও পরদেশি ভাবিকে দেখার জন্য ছিল ব্যাকুল। তাদের বাড়ি আসার অধীর অপেক্ষায় ছিল স্বজনরাও। এর মধ্যে রাকিব-আলিসার কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে ছেলে সন্তান। ছেলের বয়স এখন ছয় মাস। আমরা তাদের আসার প্রতীক্ষায় ছিলাম। অবশেষে সন্তানকে নিয়ে গত ৫ মার্চ বাড়ি আসে রাকিব।
রাকিবের বাবা বলেন, ছেলের বিয়ে উপলক্ষে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারিনি। গত বুধবার রাকিব ও আলিসার গায়ে হলুদ হয়। আজ বউভাতের আয়োজন করা হয়েছে। আত্মীয়-স্বজনসহ প্রায় ৩ হাজার অতিথি এসেছেন। তারা খাবার খেয়েছেন। ছেলের বউ ও নাতিকে দেখেছেন। দোয়া করেছেন। এতেই আনন্দে বুকটা ভরে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিয়েতে ছেলের বউয়ের স্বজনদেরও আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। তবে আলিসার ছোট বোনের পরীক্ষার জন্য তারা আসতে পারেননি। কিন্তু ভিডিও কলে প্রতিদিনই তাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। তারা এসব আয়োজন দেখে অনেক খুশি হয়েছেন। এছাড়া আলিসা গায়ে হলুদ থেকে বৌভাত অনুষ্ঠান, সব কিছুই উপভোগ করেছে। এখানকার সবুজ প্রকৃতি ও মানুষের আন্তরিকতা আলিসার ভালো লাগছে বলে সে জানিয়েছে। মার্চের শেষের দিকে রাকিব ও আলিসার জার্মানি ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম বলেন, রাকিব হাসান হেলিকপ্টারে করে জার্মান বউ নিয়ে বাড়িতে এসেছে। হেলিকপ্টার ও জার্মান বউকে দেখতে কয়েকশ’ মানুষ জড়ো হয়েছিল। হেলিকপ্টার থেকে তারা নেমে আসার পর ঘোড়ার গাড়িতে করে নেওয়া হয় বাড়িতে। এমন দৃশ্য খুব একটা গ্রামে দেখা যায় না। এছাড়া জার্মান বধূকে দেখতে তাদের বাড়িতে ভিড় লেগেই রয়েছে। তারা বাড়িতে আসার কারণে এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।