এম শাহীন আলম :
এক সময়ের বিলুপ্ত হওয়া বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার ক্রমেই বংশ বিস্তার করতে শুরু করেছে সারা দেশব্যাপী। এরেই মধ্যে বাংলাদেশের প্রায় ২৫ টি জেলায় এই সাপ ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিষধর সাপটি বন্য এলাকা ছেড়ে সাপটির খোঁজ মিলছে উপকূলীয় এলাকার বরিশাল, পটুয়াখালী, চাঁদপুর সহ ঢাকার আশপাশের এলাকাগুলোতেও। চলতি বছর এ সাপের কামড়ে মারা গেছেন অন্তত ১০ জন।
সাধারণত অন্যান্য সাপ মানুষকে এড়িয়ে চললেও রাসেল ভাইপারের ক্ষেত্রে উল্টো। এই সাপ নিজেকে বিপন্ন মনে করলেই করে বসে আক্রমণ। আক্রমণের ক্ষেত্রে এটি এত ক্ষিপ্র যে, ১ সেকেন্ডের ১৬ ভাগের ১ ভাগ সময়ে শেষ করতে পারে পুরো প্রক্রিয়া। ক্ষেপে গেলে শব্দ করে প্রচণ্ড জোরে ঠিক যেন প্রেসার কুকারের মতো।
এছাড়াও রাসেল ভাইপারের বিষ হেমাটোটক্সিক, যার কারণে ছোবল দিলে আক্রান্ত স্থানে প্রথমে পঁচন ধরে। ছোবলের পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফুলে যায় ক্ষতস্থান। এর বিষ নষ্ট করে দিতে পারে মানবদেহের ফুসফুস, কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ।
অন্যান্য সাপ ডিম পাড়লেও রাসেল ভাইপার বাচ্চা দেয়। গর্ভধারণ শেষে স্ত্রী রাসেল ভাইপার সাধারণত ২০ থেকে ৪০টি বাচ্চা দেয়। তবে ৮০টি পর্যন্ত বাচ্চা দেয়ার রেকর্ডও রয়েছে। একদিকে উচ্চ প্রজনন ক্ষমতা, অন্যদিকে বেজি, গুইসাপসহ প্রকৃতি থেকে সাপের শত্রু বিলীন হয়ে যাওয়া সেই সঙ্গে ইঁদুর, ব্যাঙ সহ সাপের পর্যাপ্ত খাবারের উপস্থিতি থাকায় বাড়ছে রাসেল ভাইপারের মতো বিষধর সাপ।
বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে এই সাপ দংশন করলে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া উচিত। ওঝার বাড়িতে গিয়ে অনেকে সময় নষ্ট করেন। এতে বিষক্রিয়া পুরোপুরি প্রকাশ পেয়ে গেলে আইসিইউ সাপোর্ট ছাড়া রোগীকে বাঁচানো যাবে না।
অনুসন্ধান তথ্য মতে জানা যায় বাংলাদেশে বছরে চার লাখেরও বেশি মানুষকে সাপে কাটে, যাদের মধ্যে সাত হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।