বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের দুপক্ষের সংঘর্ষ, যা বললেন দুই খতিব

জাতীয়

নিউজ ডেস্ক।।

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে অনুপস্থিত থাকা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব রুহুল আমিন ফিরে আসার ঘটনায় খতিবের সমর্থক ও মুসল্লিদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। খতিব জটিলতায় থমথমে পরিস্থিতি ও সংঘর্ষের মধ্যেই শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।

শুক্রবার জুমা পড়ানোর দায়িত্ব ছিল ড. আবু সালেহ আহম্মেদ পাটোয়ারীর। এদিন তিনি বয়ান করছিলেন। এ সময় পলাতক খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন অনুসারীদের নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদে এসে বয়ানরত খতিবের মাইক্রোফোনে হাত দেন, নামাজ পড়াবেন বলে জানান। এতে অন্য মুসুল্লিরা অস্বীকৃতি জানান এবং ভুয়া ভুয়া বলতে থাকেন। তখন মসজিদে উপস্থিত মুসল্লিরা রুহুল আমিনের অনুসারীদের প্রতিরোধ করেন। এক পর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে জুতার রেক ছুড়াছুড়ি এবং সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার জেরে মসজিদের সাধারণ মুসল্লিরা বিচলিত হয়ে পড়েন।

মসজিদের ভিতরে ভাঙচুর করা হয়। দরজা-জানালার গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।

জাতীয় মসজিদের ভেতর এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ও বিরল ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা চলছে।

এদিন জুমার নামাজের ইমামতির জন্য আগে থেকেই দায়িত্ব দেওয়া ছিল ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারীকে। আবু ছালেহ পাটোয়ারীসহ কয়েকজন ফিরে আসা খতিব রুহুল আমীনকে জুমার নামাজে ইমামতি থেকে বিরত থাকতে বলেন।

আবু সালেহ পাটোয়ারী বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় অনুরোধ করা’ হয়েছে। অন্যদিকে রুহুল আমিন বলছেন তাকে ‘দায়িত্ব পালনে বাঁধা দেওয়া’ হয়েছে।

এরপর, সেখান থেকে গিয়ে খুতবায় দাঁড়ান পাটোয়ারী। কিছুক্ষণ পর সেখানে যান আমীন।

মিম্বারে (ইমামের দাঁড়ানোর স্থান) অবস্থান নেওয়াকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডা দেখা দেয় তাদের সঙ্গে থাকা মুসল্লিদের মধ্যে।

পরস্পরের অভিযোগ থেকে জানা যাচ্ছে, দুজনের সঙ্গেই বেশ কিছু অনুসারী ছিলেন। উপস্থিত মুসল্লিরাও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন।

আবু সালেহ পাটোয়ারী বলেন, আমি খুতবা শুরু করেছিলাম। উনি দলবল নিয়ে এসে জোর করে মিম্বারে দাঁড়ায়। আমাকে একজন সরে যেতে বলে। আমি সরে দাঁড়াই।

রুহুল আমীন বলেন, ‘ওনার (পাটোয়ারী) সঙ্গেরা লোকেরা হট্টগোল করছিল। মুসল্লিরা আমাকে প্রটেকশন (নিরাপত্তা) দিয়ে রাখেন। আমি বয়ান শুরু করি। এর মধ্যে উনি (পাটোয়ারী) আমাকে বলেন, আপনি নামেন।’

এক পর্যায়ে পরিস্থিতি আর ‘নিরাপদ’ মনে না হওয়ায় স্থান ত্যাগ করেন মোহাম্মদ রুহুল আমীন। খতিব রুহুল আমীন ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও ততক্ষণে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষের মধ্যে।

আবু সালেহ পাটোয়ারী বলেন, মসজিদের প্রবেশদ্বারগুলোতে তার (আমীন) লোক দাঁড়িয়েছিল। তারা সাধারণ মুসল্লিদের মারধর করেছে।

তবে, রুহুল আমীনের পালটা অভিযোগ, হট্টগোল করেছে পাটোয়ারীর সঙ্গে থাকা লোকেরা।

৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে রদবদল দেখা গেছে। কোথাও সরকারের নির্দেশে বদলি বা অবসরে পাঠানো হয়েছে। কোথাও ‘ফ্যাসিবাদের দোসর বা সুবিধাভোগী’ হিসেবে উল্লেখ করে বিক্ষোভকারীদের সৃষ্ট চাপের মুখে কেউ কেউ দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.