আন্তর্জাতিক ডেস্ক রিপোর্ট :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইতালি সফরকালে দুই দেশের মধ্যে আলোচনায় বাংলাদেশিদের জন্য ইতালির শ্রমবাজার চালুর ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে কেউ অবৈধভাবে সে দেশে ঢুকতে পারবেন না।
কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ইতালিতে অবৈধ পথে বাংলাদেশি শ্রমিকদের যাওয়া ঠেকাতে উভয় দেশ একমত হয়েছে। একই সঙ্গে বৈধ পথে বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি দক্ষ কর্মী নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে দেশটি। এ ব্যাপারে সম্ভাব্য কাঠামো কীভাবে তৈরি করা যায়, তা নিয়েও উভয় দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
এ বিষয়ে এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ৫ ফেব্রুয়ারী বুধবার রোমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতের বৈঠকে এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়।
দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বৈধ পথে শ্রমশক্তি নেয়ার আইনি কাঠামোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে যে অভিযান চলছে তা অব্যাহত রাখার বিষয়ে কথা হয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ইতালিতে অবস্থানরত প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার বাংলাদেশির বড় অংশই ওই দেশের সমাজে মিশে গেছে। অভিবাসন বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা সংহত করার পদক্ষেপ নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করেন উভয় নেতা। বৈধ পথে অভিবাসন এবং অবৈধ অভিবাসন ঠেকানোর জন্য একটি সম্ভাব্য আইনি কাঠামো নিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করেছেন।
২০০৮ সালে ইতালিতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাংলাদেশ থেকে কৃষি শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তির অধীনে প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশি সে দেশে গেলেও মেয়াদ শেষে ফেরত এসেছেন ১০০ জনেরও কম শ্রমিক। এরপর ২০১২ সালে কৃষি শ্রমিক নেয়ার চুক্তিটি বাতিল করে রোম।
এদিকে, দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের বিষয়ে দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদতেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইতালি তথা গোটা ইউরোপে থাকা অবৈধ বা অনিয়মিত বিদেশিদের, যারা আইনি লড়াইয়ে হেরে গেছেন, নিজ নিজ দেশে ফেরানোর বিষয়ে রোম তথা ইইউ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ইইউর সেই অবস্থানেরই প্রতিফলন ঘটেছে। তারা প্রণোদনা বা ক্ষতিপূরণ দিয়ে হলেও অবৈধদের ফেরাতে চায়।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর ইতালির সফরের আগে সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, ইতালি এখন পর্যন্ত আমাদের অনেক নাগরিককে সেখানে বসবাসের সুযোগ দিয়েছে এবং আরো অনেকে সেখানে বসবাসের সুযোগ লাভের জন্য অপেক্ষা করছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে আলোচনা করা হবে। ইতালি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার। সেখানে ২ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি বাস করছে।
চার দিনের সফরে গত ৪ ফেব্রুয়ারি সকালে ইতালির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৮ ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরার কথা রয়েছে তার।