খেলাধুলা ডেস্ক :
ভারতের জনপ্রিয় ফ্রাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ-আইপিএল নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মাইকেল হোল্ডিং।
ক্রিকেটের এই জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার আইপিএলকে ক্রিকেটই মনে করেন না। তার মতে, আইপিএলের মতো টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট যত হবে ক্রিকেটের তত সর্বনাশ ঘটবে।
অবশ্য শুধু আইপিএল নয়, ক্রিকেটের খুদে সংস্করণ কুড়ি ওভারের ম্যাচকেই ভালো চোখে দেখেন না হোল্ডিং।
এ ক্যারিবীয় সাবেক তারকার মতে, টি-টোয়েন্টির দিকে ঝুঁকে পড়ায় তার নিজ দেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট দিন দিন দুরবস্থার দিকে যাচ্ছে।
আইপিএলের প্রতি হোল্ডিংয়ের অনীহা প্রায় সবারই জানা। যেখানে আইপিএলের বিশেষজ্ঞ ও ধারাভাষ্যকার হতে মুখিয়ে থাকেন অন্যরা, সেখানে হোল্ডিং অনুপস্থিত জমজমাট এই লিগে। তাকে ধারাভাষ্য দিতে দেখা যায় না আইপিএলে।
"দা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস"-এর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এই ক্যারিবিয়ান ফাস্ট বোলিং গ্রেটকে জিজ্ঞেস করা হয়— কেন আইপিএলে দেখা যায় না তাকে?
এমন জবাব দিলেন হোল্ডিং যে, সঞ্চালক এক মুহূর্তের জন্য চুপ হয়ে গেলেন। হোল্ডিংয়ের দৃঢ় জবাব— আমি তো কেবল ক্রিকেটেই ধারাভাষ্য দিই।
অর্থাৎ আইপিএলকে ক্রিকেট মানতে নারাজ হোল্ডিং। মূলত টি-টোয়েন্টি খেলাকেই অপছন্দ সাবেক ক্যারিবীয় ফাস্ট বোলারের।
অথচ দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে তার দেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু তাতে উচ্ছ্বাস প্রকাশের কিছু দেখেন না হোল্ডিং।
এর ব্যাখ্যাও তিনি বলেন, টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট জিতলে সেটিকে পুনরুজ্জীবন বলে না। এটি তো ক্রিকেটই নয়! এই টি-টোয়েন্টির কারণেই টেস্টের চূড়ার ওঠা কঠিন হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য।
টি-টোয়েন্টির বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সাবেক ক্যারিবীয় পেসার বলেন, বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টগুলোই ক্রিকেটের সর্বনাশ করছে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মতো দেশগুলো তাদের ক্রিকেটারদের যে পারিশ্রমিক দেয়, তা অনেক দেশ পারে না। ওইসব দেশের ক্রিকেটাররা তখন টি-টোয়েন্টিতে যায়। আর এই বিষয়টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অন্য দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
হোল্ডিং প্রশ্ন ছুড়েন— কেউ যদি দেড় মাস খেলেই ৬ লাখ, ৮ লাখ ডলার আয় করে ফেলে, সে কী করবে?
এই টাকা কামানোর মতো ক্রিকেটাররা নিজ দেশের হয়ে টেস্ট খেলতে অনাগ্রহী হয়ে পড়ছে বলে মনে করেন হোল্ডিং।
তিনি বলেন, আমি ক্রিকেটারদের দোষ দিই না। এর জন্য প্রশাসকরা দায়ী। এখন ক্রিকেটাররা টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি মিছে অনুরাগ দেখায়, কিন্তু তারা কেবল অর্থ উপার্জনেই বেশি আগ্রহী। এমন চলতে থাকবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আরও টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট জিতবে; কিন্তু টেস্টে আর পরাশক্তি হয়ে উঠবে না।