বদরুল আমীন,ময়মনসিংহ থেকে :
রাজনীতি করতে নেমেছি! ডোন্ট মাইন্ড, ফ্রিলিই বলতেছি, রাজনীতি করতে হলে কাপড় খুলেই রাজনীতিতে নামতে হয়। তাহলে মুখ আবার ডাকা কি? যখন আমরা ঢাকা যাই। যখন আমরা ভুল করি তখন আমাদের বড় নেত্রী কুত্তার বাচ্চা শুয়োরের বাচ্চা মা বাপ তুলেই গালি দেয়। তখন তো আমরা কষ্ট পাই না। রবিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যার দিকে ময়মনসিংহ জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সপ্না খন্দকারের এমন বক্তব্যের ৩১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরেই শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১ এপ্রিল স্বপ্না খন্দকার তার ফেসবুক আইডি থেকে ৪০ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের একটি লাইভে আওয়ামীলীগ সমর্থক ও ফেসবুক এক্টিভিস্ট উৎপল কর নামে একজনকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। ওই ভিডিও থেকে সেই উৎপল কর ৩১ সেকেন্টের একটি ভিডিও তার ফেসবুক আইডিতে শেয়ার দেন। এরপরই ভিডিওটি কয়েকটি পেজ ও আইডিতে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ৪০ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের ভিডিও'র প্রথম ৭ মিনিটের লাউভে স্বপ্না খন্দকার বলেন, আজকে ঘুম থেকেই উঠলাম এক ঘন্টা পর। উঠেই দেখলাম উৎকল কর পাগলা (মাদারচুদের বাচ্চা-প্রকাশ করার মত না)। আপনার সবাই আমার ফ্রেসবুক ফ্রেন্ড ফলোয়ার তাই একটু ফ্রি মাইন্ডে বললাম। সে একটা পাগলা (মাদারচুদের বাচ্চা-প্রকাশ করার মত না) সে বলেছে তার বিরুদ্ধে (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা) সে যে কুর্কমটা করেছে, ওই মামলাটি তুলে না নিলে আমাকে মেরে ফেলবে। আমি সিআইডি অফিসে গিয়েছিলাম। তার নামে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া একটা সিম আছে। সেই সিম দিয়ে তার লোকেশন শনাক্ত করেছে। তার একটা ছেলে আছে, ছেলে কোন স্কুলে পড়ে। তার স্ত্রী কোন স্কুলে মাস্টারী করে। তার শ্বশুর পল্লী কিচিৎসক, হোমিও প্যাথিক ওষুধ বিক্রি করে, তার কাছে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, পরে ভাবলাম পাগলে কি না করে, ছাগলে কি না খায়। সে তো টাকলা মুরাদ হয়ে গেছে। আমরা রাজনীতি করি। যার সাথে যে ভাষা ব্যবহার করা লাগে। সেই ভাষাই ব্যবহার করি। কিন্তু, আমরা যদি ভুল করি, আমাদেরও বকা শুনতে হয়। সে আল্টিমেটাম (মাদারচুদের বাচ্চা-প্রকাশ করার মত না) দিয়েছে, আজ ১২ টার মামলা তুলে না নিলে আমাকে মেরে ফেলবে। কে তথ্য প্রযুক্ত আইনে মামলা খায়, যে অন্যায় করে সেইতো তথ্য প্রযুক্ত আইনে মামলা খায়। সে ফেসবুকে সরকারকে কটুক্তি করে, এই কারণে সরকার তার আইডি বার বার ব্যান করে দিয়েছে। এই (মাদারচুদের বাচ্চা-প্রকাশ করার মত না) সরকার কি তোকে এগুলো করার দায়িত্ব দিছে। আমার স্বামী কি আমাকে দেখার জন্য তোকে দায়িত্ব দিছে। উৎপল করের বাচ্চা, মদ খোড়, নিজের ফেসবুকে লিখে রাখছছ নাস্তিক (মাদারচুদের বাচ্চা-প্রকাশ করার মত না)। আমি ফেসবুকে কখনো কারো সাথে রাগ করে কথা বলি না। আজকেই ফাস্ট আমি ফেসবুক লাইভে এসে কারোর সাথে রাগ করে কথা বলেছি। তার বিরুদ্ধে আইসিটি মামলার জন্য বিভিন্ন মানুষের পায়ে ধরে, দরজায় দরজায় ঘুরছে, আমার কাছে আসে না। বিভিন্নভাবে আমাকে রাগান্বিত করে। আমি গালাগালি করলে কেটে কেটে সে ফেসবুকে শেয়ার দেয়। ওই ভিডিও স্বপ্না খন্দকার আরও বলেন, রাজনীতি করতে নেমেছি! ডোন্ট মাইন্ড, ফ্রিলিই বলতেছি, রাজনীতি করতে হলে কাপড় খুলেই রাজনীতিতে নামতে হয়। তাহলে মুখ আবার ডাকা কি? যখন আমরা ঢাকা যাই। যখন আমরা ভুল করি তখন আমাদের বড় নেত্রী কুত্তার বাচ্চা শুয়োরের বাচ্চা মা বাপ তুলেই গালি দেয়। তখন তো আমরা কষ্ট পাই না। (এরপর উৎপল করের স্ত্রীসহ পরিবারের সবাইকে কথায় কথায় গালাগালি করে। যা প্রকাশ করার মত না) এ বিষয়ে জানতে উৎপল করের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, স্বপ্না খন্দকারের সাথে পরিচয় হওয়ার আগে তার বোন লাকির সাথে আমার পরিচয় হয়। সে বিভিন্ন সময় ফেসবুকে আমার লেখার প্রশংসা করতেন। এর কিছুদিন পরে জানতে পারি, তারা দুই বোন দলের নাম ভাঙিয়ে মানুষের সাথে ভয়াবহ প্রতারণা করে আসছে। সরকারী চাকরী পাইয়ে দেয়ার কথা বলে টাকা নেয়া, মানুষের কাছ থেকে হুমকি দিয়ে টাকা নেয়াসহ বিভিন্ন অপরাধে তারা জড়িত। তাদের প্রতারণার বিষয়ে ফেসবুকে লেখালেখি ও স্থানীয় কিছু পত্রিকায় প্রকাশিত হলে দুই বোন আমার নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে। তবে, পরে তার বোন লাকি মামলা তুলে নিলেও স্বপ্না খন্দকার মামলা তুলে নেয়নি। মামলাটি এখন সিআইডিতে তদন্তাধীন আছে। ওই বিরোধ থেকে ফেসবুক লাইভে এসে আমাকে, আমার পরিবার, এমনি আমার শ্বশুরকেও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। আপনি কি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামী দুই দিনের মাঝে যদি আমার সাথে এসব বিষয় মিমাংসা না করে। তাহলে অবশ্যই আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব। এ বিষয়ে জেলা মহিলা আ'লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সপ্না খন্দকার বলেন, যে ভিডিওটি শেয়ার দিয়েছে। সে আমার একটি ফেসবুক লাইভের খন্ডিত অংশ প্রকাশ করেছে। সে সব সময় শেখ হাসিনা আপা, কাদের ভাই তাদের নিয়ে ফেসবুকে ট্রল করে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শ্রদ্ধা করি, তার রাজনীতি। বড় নেত্রী কুত্তার বাচ্চা, শুয়োরের বাচ্চা, মা বাপ তুলে গালি দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, বিষয়টা এমন না। যখন ৫ বছরের ছেলেকে ২০ বছরের ছেলেকে বলাৎকার করে তখন আমরা বড় বড় নেত্রীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পঁচা ভাষা ইউজ করতে হয়। সে এই বক্তটা কেটে বড় নেত্রী গালাগালি করার বিষয়টি হাইলাইট করেছে। তবে, পুরো লাইভ আমার আইডিতে শেয়ার দেয়া আছে। আপনার যদি মনে হয়। আমি বেশি বলে ফেলছি, তাহলে নিউজ করে দেন। এ বিষয়ে জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিনা রহমান বলেন, আমি এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করব না। কেউ তো অন্যায়ের উর্দ্ধে নয়। তবে, সে যদি কোন দুর্নীতি বা অন্যায়ের সাথে জড়িত থাকে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।