মাসুম পারভেজ,বিশেষ প্রতিবেদক :
স্বামীর লাশ দাফন না করে ওরা ভয়-ভীতি দেখিয়ে স্বামীর দেয়া শেষ সম্বল জমিটুকু বলপূর্বক নামে করে নিলো। শুধু তাই নয়, স্বামী আত্নহত্যার প্ররোচণার ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমার বাবা-মা’র কাছ থেকেও ১লাখ ৪০হাজার টাকা ও স্বামীর দেয়া আমার নামীয় ০৫ শতাংশসহ অংশীদার সূত্রে প্রাপ্ত ৫শতাংশ জমি বলপূর্বক রেজিষ্ট্রি মুলে হাতিয়ে নিয়েছে স্বামী পরিবারের লোকজন। অশ্রুসিক্ত চোখে কথাগুলো বলছিলেন- নব-বধু শারমিন খাতুন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) উপজেলার চতরা ইউনিয়নের কুয়াতপুর গ্রামে।
এলাকাবাসী জানায়, কুয়াতপুর গ্রামের আঃ খালেক এর পুত্র রেজাউল মিয়া(২৫) এর সঙ্গে গত ৭ মাস পুর্বে যাদবপুর গ্রামের হতদরিদ্র রফিকুল ইসলাম এর কন্যা শারমিন খাতুন এর বিয়ে হয় । বিয়ের পর থেকে রেজাউল ও শারমিনের মধ্যে দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকতো।
শারমিন জানায়, রেজাউল শারীরিকভাবে ছিল অক্ষম। বিষয়টি উভয় পরিবার জানাজানি হলে রেজাউল আমার নামে ৫শতাংশ জমি রেজিষ্ট্রি করে দিয়ে বলে, যে তুমি আমাকে চিকিৎসার জন্য কিছুদিন সময় দাও। তার আকুতি মিনতির প্রেক্ষিতে গত ১৫ দিন পুর্বে স্বামীর নির্দেশক্রমে পিত্রালয়ে এসে অবস্থান করতে থাকি ।
এ দিকে ১৯ এপ্রিল সকালে রেজাউল তার স্ত্রী শারমিনের সঙ্গে দেখা করতে যায় তার শ্বশুর বাড়ী। শ্বশুর বাড়ীতে আপ্যায়ন শেষে গভীর রাতে নিজ বাড়ী আসে। রেজাউল তার স্ত্রী শারমিনকে সঙ্গে আনেনি বলে তার বড় ভাবি চামেলী বেগম ও তার বড় ভাই রুবেল হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। অভিমানি রেজাউল পরদিন (২০এপ্রিল) সকালে সকলের অজান্তে নিজ বাড়ীতে ইদুর মারার ঔষধ খেয়ে আত্মহত্যা করে । বিষয়টি লিখিত ভাবে পীরগঞ্জ থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ মৃত্যু রেজাউলের লাশ দাফনের অনুমতি দেয় ।
কিন্তু বুধবার সকালে রেজাউল মারা গেলেও সেদিন লাশ দাফন না করে শারমিন ও তার পরিবারকে আত্নহত্যার প্ররোচণার ভয়-ভীতি দেখিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য গোল্লা ও আনিছার ১লক্ষ ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এজন্য শারমিনের বাবাকে একমাত্র সম্বল দু'টি গরুও বিক্রি করতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত লাশ দাফন না করে মামলার ভয় দেখিয়ে স্বামীর দেয়া ০৫ শতাংশ জমিসহ অংশীদার সূত্রে প্রাপ্ত ৫শতাংশ জমি রেজিষ্টিমূলে বলপূর্বক দলীল করে নেয় রেজাউলের পরিবারসহ ঐ চক্রটি।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খোকন মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি হৃদয় বিদারক। পীরগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার বেগম খালেদা জমি রেজিষ্ট্রির কথা স্বীকার করেছেন।
রংপুর জেলা সাব-রেজিষ্ট্রার আব্দুস ছালাম জানান, রেজিষ্ট্র করার পর আর কিছুই করার থাকেনা। তবে এ ব্যাপারে বিজ্ঞ আদালতের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেন।